অবশেষে করোনার ওষুধ উৎপাদন হলো বাংলাদেশে

0 ৪০৭

বিডি সংবাদ টোয়েন্টিফোর ডটকম: করোনা ভাইরাসের করাল গ্রাসে পৃথিবী অসহায়। চোখের সামনে মারা যাচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। আক্রান্ত হচ্ছে লাখ লাখ লোক। কেউ কিছু করতে পারছে না। নেই কোনও প্রতিকার। চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা দিনরাত পরিশ্রম ও গবেষণা করছেন ভাইরাসটির ভ্যাকসিন আবিষ্কারের জন্য। কিন্তু এখনও কূলকিনারা খুঁজে পাচ্ছেন না।

ঠিক এমন সময় বাংলাদেশ সুখবর পেলো। করোনা ভাইরাসের চিকিৎসার জন্য বহুল আলোচিত ওষুধ ‘রেমডিসিভির’ উৎপাদন করলো বাংলাদেশের ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। উৎপাদনের সব প্রক্রিয়া শেষে এখন সেটি সরবরাহের প্রস্তুতি চলছে।

এর আগে গত ২৯ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) রেমডেসিভির ওষুধটি পরীক্ষামূলকভাবে জরুরি ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিল। এ ঘোষণার ১০ দিনের মধ্যেই বাংলাদেশের ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থাটি করোনা ভাইরাসের চিকিৎসায় কার্যকর এ ওষুধ উৎপাদন করলো।

গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করে এসকেএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সিমিন হোসেন জানিয়েছেন, বিশ্বে করোনার একমাত্র কার্যকর ওষুধ বলে স্বীকৃত জেনেরিক রেমডেসিভির উৎপাদনের সব ধাপ সম্পন্ন হয়েছে। চলমান করোনা পরিস্থিতিতে দেশের মানুষকে একটা সুখবর দেয়া গেলো।

গেল সপ্তাহে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি কার্যকারিতা দেখিয়েছে রেমডিসিভির। মার্কিন প্রতিষ্ঠান গিলিয়েড সায়েন্সেসের এই ওষুধটি গেল সপ্তাহেই ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে করোনায় সবচেয়ে নাকাল যুক্তরাষ্ট্র। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের হাসপাতালগুলোতে রেমডিসিভির ব্যবহার বাড়তে শুরু করেছে। মূল উৎপাদনকারী গিলিয়াড ১৫ লাখ ডোজের প্রথম ব্যাচ যুক্তরাষ্ট্রের রোগীদের জন্য দান করবে। সেবনের পর অনেক রোগীরই অবস্থার উন্নতি হয়েছে। তবে এখনও পুরোপরি সফলতা আসেনি।

এরইমধ্যে গেল ৭ মে ওষুধটি করোনা আক্রান্ত রোগীদের শরীরে ব্যবহারের অনুমতি দেয় জাপান। তবে জাপানে সেটি কবে নাগাদ তৈরি হবে তা বলা হয়। এর আগেই বাংলাদেশের ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা এসকেএফ ওষুধটির উৎপাদন শুরু করে দিলো।

এসকেএফ কর্তৃপক্ষের দাবি, তারাই কোনও ওষুধ প্রস্তুতাকারক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিশ্বে প্রথম জেনেরিক রেমডেভির তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। এসকেএফ ওষুধটির বাণিজ্যিক নাম দিয়েছে রেমিভির। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, বাংলাদেশের বিধি অনুযায়ী, ওষুধের নমুনা ন্যাশনাল কন্ট্রোল ল্যাবরেটরিতে জমা দেয়া হবে। ছাড়পত্র বাজারে আনার অনুমতি পাওয়ার পর ওষুধটি বাজারজাত করা শুরু হবে।

করোনা ভাইরাস আক্রান্ত মানুষের শিরায় ইনজেকশন হিসেবে প্রয়োগ করতে হয় এই রেমডেসিভির ওষুধ। একজন রোগীকে কত ডোজ দেয়া হবে সেটি রোগীর অবস্থার ওপর নির্ভর করে। গুরুতর অসুস্থ ব্যক্তির ক্ষেত্রে ৫ অথবা ১০ দিনের ডোজ প্রয়োজন হতে পারে।ব্রেকিংনিউজ

প্রতি ডোজ ওষুধের দাম কত হতে পারে- এ বিষয়ে এসকেএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সিমিন হোসেন জানিয়েছেন, প্রতি ডোজ ওষুধের দাম ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা হতে পারে। ওষুধটি প্রয়োগের দুই ধরনের ডোজ রয়েছে- ৫ ও ১০ দিনের। ১০ দিনের ডোজ হলে লাগবে ৫৫ হাজার টাকার মতো, ডোজ যদি ৫ দিনের হয় তবে ৩০ হাজার টাকার মতো লাগতে পারে।

এর আগে গেল ৬ মে রয়টার্স ও নিউইয়র্ক টাইমসের মতো আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর খবরে জানানো হয়, বাংলাদেশের এই ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস করোনা ভাইরাসের চিকিৎসার জন্য বহুল আলোচিত ওষুধ ‘রেমডিসিভির’ উৎপাদন করবে। মে মাসেই উৎপাদন করা হবে অ্যান্টিভাইরাল ওষুধটি।

তখন এ বিষয়ে বেক্সিমকো’র চিফ অপারেটিং অফিসার রব্বুর রেজা জানিয়েছিলেন, চলতি মে মাসের মাঝামাখি বেক্সিমকো ওষুধটি বাজারজাত করার অনুমতি পাবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এরপর থেকে সরকারের মাধ্যমে বিতরণের জন্য ওষুধটি বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করবে বেক্সিমকো। এই ওষুধ মানুষের শিরায় প্রয়োগ করতে হয়। প্রতি ডোজ ওষুধের দাম পড়বে ৫-৬ হাজার টাকা। আর গুরুতর অসুস্থ রোগীদের মোট ৫ তেকে ১১ ডোজ ওষুধ প্রয়োগের প্রয়োজন হতে পারে। তবে এটি এখনও নিশ্চিত নয়।

Leave A Reply

Your email address will not be published.