অসৎ পথে বিরিয়ানির চেয়ে সৎ পথে লবণ-ভাত খাওয়া ভালো: প্রধানমন্ত্রী

0 ৪৭১

বিডি সংবাদ টোয়েন্টিফোর ডটকম: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক আর দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাঁর সরকারের অভিযান অব্যাহত থাকবে। তিনি সমাজ থেকে ‘অসুস্থতাগুলো’ দূর করতে সবাইকে সমন্বিত ও আন্তরিক হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

কপ-২৫ জলবায়ু সম্মেলন উপলক্ষে তিন দিনের সফরে স্পেনে পৌঁছে স্থানীয় সময় রবিবার সন্ধ্যায় (বাংলাদেশ সময় রবিবার মধ্যরাত) মাদ্রিদের হোটেল ভিলা ম্যাগনায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘অসৎ পথে বিরিয়ানি খাওয়ার থেকে সৎ পথে কামাই করে লবণ ভাত খাওয়াও ভালো। এটা আমি মনে করি। যা আমাকে জাতির পিতা শিখিয়েছেন। আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মকেও সেই শিক্ষাই দিয়ে যেতে হবে।’

বাংলাদেশ চলমান শুদ্ধি অভিযানের প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনেকেই ঘুষ, দুর্নীতি, ছিনতাই, সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করে রাতারাতি টাকা মালিক হয়েছে। তখন তাদের ফুটানি দেখিয়ে তারা এমন ভাব নিতো- ‘আমরা যেন কি হয়ে গেছি!’ মানে ‘মুই কি হনুরে’ ভাব। কারও মধ্যে এ ধরনের মানসিকতা যেন না থাকে। সমাজের এসব অসুস্থতা… এগুলো আমাদের ঠিক করতে হবে। অসুস্থতা দূর করতে হবে।’

বঙ্গবন্ধু হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আবারও সমাজে মানুষের চারিত্রিক স্খলন শুরু হয়েছিল বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বর্তমান সরকারের উন্নয়ন-অগ্রগতির কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখন দেশ সব দিক দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। অন্তত বিদেশের মানুষ বাংলাদেশের নাম শুনলে একটু সম্মান আর মর্যাদা দিয়ে কথা বলে। অথচ আগে বাংলাদেশের নাম শুনলেই বিদেশিরা বলতো- দুর্ভিক্ষের দেশ, খরার দেশ, দুর্নীতির দেশ। বিএনপির আমলে বাংলাদেশ দুর্নীতিতে পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। এখন আর সেই বদনামটা নেই।’

তিনি বলেন, ‘এখন যখন দেশের বাইরে আসি তখন বিদেশিরা জানতে চান- সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের এই অভাবনীয় উন্নয়নের ‘ম্যাজিকটা’ কী? আমি তাদের বলি- ম্যাজিক কিছুই না। দেশকে ভালোবাসি, দেশের মানুষকে ভালোবাসি। মানুষের কল্যাণে কাজ করি। আমি বাংলাদেশের জনগণের হোল টাইম ওয়ার্কার। এর বাইরে আমার আর কোনও কাজ নেই।’

অনুষ্ঠানে প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের উন্নয়নে প্রবাসীদের অবদান অনস্বীকার্য। আপনাদের রিজার্ভের টাকা দিয়ে, আমাদের নিজেদের ব্যাংকের টাকা দিয়ে আমরা ড্রিমলাইনার কিনলাম। আমরা কারও কাছে ধার করিনি। কাজেই এখানে বড় অবদান প্রবাসীদের। জাতির পিতা বলেছিলেন- ‘দাবায়ে রাখতে পারবা না’। ইনশাল্লাহ্, বাংলাদেশকে আর কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না।’

বিএনপির সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি এখন ইলেকশন নিয়ে কথা বলে। ইলেকশনের ভালো-মন্দ খুঁটে দেখে। অথচ ওরা আয়নায় নিজেদের চেহারা দেখে না। জিয়াউর রহমানের ‘হ্যাঁ-না’ ভোটের ‘না’ বাক্স তো কোনও দিন খুঁজেই পায়নি, সব তো ‘হ্যাঁ’ বাক্স হয়ে গিয়েছি। সেখানে সবাই ‘হ্যাঁ’ই দিয়ে গেছে। তারপর জিয়ার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ১২০ ভাগ না ১৩০ ভাগের উপরে ভোট পড়ে গিয়েছিল। তখন সেই ভোট কমানোর চেষ্টা চললো।’

‘এর পর এলো জাতীয় নির্বাচন। তারা একটা দল বানানো, অর্থাৎ একটা বাচ্চার জন্ম দিলো, যে বাচ্চা হাঁটতে শিখলো না, চলতেও শিখলো না- অথচ পেয়ে গেল টু থার্ড মেজরিটি। আর সেই ১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠিত আওয়ামী লীগ সিটই পায় না। পেলো মাত্র ৩৯টি সিটি’- যোগ করেন সরকারপ্রধান।

মতবিনিময় অনুষ্ঠানে স্পেন আওয়ামী লীগের সভাপতি এস আর আই এস রবিন ও সাধারণ সম্পাদক মো. রিজভী আলম প্রধানমন্ত্রীকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।

এসময় প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে সেখানে পরাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম ছাড়াও স্পেনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হাছান মাহমুদ খন্দকার উপস্থিত ছিলেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.