ঈদের আনন্দ নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে বগুড়ার শেরপুরের মুক্তিযোদ্ধারা ॥ ভাতা-বোনাসের পরিবর্তে মিলেছে কারণ দর্শানোর নোটিশ

0 ১,৩৭০

শেরপুর(বগুড়া) প্রতিনিধি: আসন্ন ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধাদেরকে সম্মানী ভাতা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সরকারের মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয়। ঈদের আগেই ভাতা প্রাপ্তির খবরে বেশ উৎফুল্লই রয়েছেন মুক্তিযোদ্ধারা। অথচ সুখময় খবরের পরিবর্তে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার প্রায় শতাধিক মুক্তিযোদ্ধাদের ভাগ্যে মিলেছে ভাতা বন্ধের কারণ দর্শানো নোটিশ। এ নিয়ে ঈদের আনন্দ নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব তৈরী হয়েছে মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে।
অনেক মুক্তিযোদ্ধারাই জানায়, শেরপুর উপজেলার যাচাই বাছাই কমিটি ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতি করেছে। সরকারের নিয়ম মানা হয়নি এ যাচাই বাছাইয়ে। স্থানীয় সংসদ সদস্যের ব্যক্তি আক্রোশের শিকার হয়ে লাল মুক্তিবার্তা, ভারতীয় তালিকা ও গেজেটে নাম থাকা সত্বেও মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে কমিটির বিরুদ্ধে।
তথ্যানুসারে জানা যায়, সরকারের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ১০আগষ্ট ২০১৭ তারিখের পরিপত্রের স্বারক নং ৪৮.০০.০০০০.০০৬.০২০.০৩১.০১৯.২০১৭-৪০৭ সারাদেশে ভাতা প্রদানের অর্থের ছাড় পত্রে ১৭ নং কলামে “উপজেলা যাচাই বাছাই কমিটি কর্তৃক যাদেরকে মুক্তিযোদ্ধা না বলে প্রতিবেদন দিয়েছেন তাদের ভাতা আপাতত প্রদান না করে- কেন ভাতা বন্ধ করা হবে না তার কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করতে হবে”।
ঈদ-উল-আযহাকে সামনে রেখে মন্ত্রণালয়ের এমন চিঠি দেখে মুক্তিযোদ্ধারা হতভম্ভ হয়ে মুক্তিযোদ্ধা আশরাফুল ইসলাম, আবুল হোসেন, আকিম উদ্দিন, রউফ খানসহ অনেকেই উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন যাচাই বাছাই কমিটির অনিয়মের কথা সবাই জানে। এ নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা রয়েছে। সেই সাথে জাতীয় মুত্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে আপিলও করা আছে ।
গত ঈদ-উল-ফিতরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রত্যেক মুক্তিযোদ্ধার কাছ থেকে তিন শত (৩০০)টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে লিখিত মুচলেকা নিয়ে ভাতা প্রদান করেছেন। কিন্তু ঈদ-উল-আযহায় ভাতা না দিয়ে কেন ভাতা বন্ধ করা হবে না তার কারন দর্শানোর নোটিশ চাওয়া হয়েছে মন্ত্রনালয় থেকে। যাচাই বাছাই নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আব্দুর রউফ খান সহ বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা জানান, বগুড়ার শেরপুরের চারটি উপজেলার মানুষের আশ্রয়স্থল। বগুড়ার সারিয়াকান্দি, ধুনট, সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলা নদী ভাঙ্গন এলাকা হওয়ার কারনে শেরপুর উপজেলার বিভিন্ন এলকার মানুষ স্থায়ীভাবে বসবাস করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। এ কারনেই এ উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা বেশীতে পরিণত হয়েছে।
এছাড়া মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই এর সময় স্থানীয় সংসদ সদস্য হাবিবর রহমান (সাবেক পুলিশ সুপার) এর সাথে বগুড়া জেলা আ.লীগের সাধারন সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মজিবর রহমান মজনু সাথে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব হওয়ার সুযোগে তার ক্যাটাগরীতে সকল মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই বাছাই তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে ।
ভাতা না দিয়ে কারণ দর্শানো নোটিশের বিষয়ে রাজশাহী বিভাগীয় রেল কমান্ড এর সাবেক সাংগঠনিক কমান্ডার মরহুম এস এম আমির হোসেনের স্ত্রীর লতিফা বেগমের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমার স্বামী যুদ্ধ করেছে দেশের জন্য ভাতার জন্য নয়। লাল মুক্তিবার্তা সহ ভারত ও দেশের সকল তালিকায় নাম থাকা সত্বেও এবার যাচাই বাছাই কমিটি তার নাম বাদ দিয়েছে। তাই যাচাই বাছাই এর সঠিকতা নিয়ে আমার প্রশ্ন রয়েছে। এ বিষয়ে আমি সরকারের উচ্চতর কর্মকর্তাদের তদন্ত আশা করছি ।

এ ব্যাপারে শেরপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মনিরুজ্জামান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) এর সাথে ফোনে কথা বলার চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

Leave A Reply

Your email address will not be published.