এশার ওপর হামলা শাস্তি দাবি সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের

0 ১,০৩৬

বিডি সংবাদ টোয়েন্টিফোর ডটকম : ছাত্রলীগ নেত্রী ইফফাত জাহান এশা’র ওপর ষড়যন্ত্রমূলক, অমানবিক ও বর্বরোচিত হামলা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে পৈশাচিক তাণ্ডবের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ এবং অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা।
বৃহস্পতিবার (১২ এপ্রিল) রাতে ছাত্রলীগের সাবেক দফতর সম্পাদক কাজী নাসিম আল মোমিন রূপক স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, আমাদের বোন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হল শাখার সভাপতি ইফফাত জাহান এশা’র ওপর গত ১০ এপ্রিল রাতে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে সম্পূর্ণ গুজব ছড়িয়ে যে ন্যাক্কারজনক, অমানবিক, বর্বরোচিত হামলা ও সম্মানহানি ঘটানো হয়েছে আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ এবং অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আমরা অবাক বিস্ময়ের সাথে লক্ষ্য করেছি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের উপস্থিতিতে আমাদের বোনকে যেভাবে অপদস্থ ও লাঞ্ছিত করা হয়েছে তা একজন নারীর প্রতি অবমাননা ও নির্যাতনের শামিল। যে ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই পাশবিক ঘটনা ঘটানো হয়েছে এবং যে দোষে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে নির্যাতন করা হয়েছে তা ইতোমধ্যে মিথ্যা প্রমাণ হয়েছে।
নেতারা বলেন, আমরা আরও লক্ষ্য করছি, বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে যখন নারীরা তাদের সফলতা ও এগিয়ে যাওয়ার সাক্ষর বহন করছে ঠিক তখনই এরকম ঘটনা আমাদের আতঙ্কিত করে এবং মধ্যযুগীয় বর্বরতার কথা মনে করিয়ে দেয়। সেইসাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে যে পৈশাচিক তাণ্ডব এবং উপাচার্যের পরিবারের সদস্যদের প্রাণনাশের অপচেষ্টা চালানো হয়েছে, তাদেরকে চিহ্নত করে দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছি।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আমাদের প্রত্যাশা- অতি দ্রুত তদন্ত কমিটি গঠন করে নির্যাতনকারীদের বিচার, এশা’র বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার এবং উপাচার্যের বাসায় হামলাকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
বিবৃতি প্রদানকারী সাবেক নেতৃবৃন্দ হলেন- মাহমুদ হাসান রিপন, মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন, গোলাম সরোয়ার কবির, হাসানুজ্জামান লিটন, রাশেদুল মাহমুদ রাসেল, সুজাতুর রহমান, মিজানুর রহমান মিজান, আরিফুজ্জামান মিয়া টুটুল, রফিকুল আলম গাফফারী রাসেল, সৈয়দ আবুল কালাম, শাহিনুর রহমান টুটুল, জসিমউদ্দিন ভুইয়া, রিপন পোদ্দার, মিজানুর রহমান, আশরাফুর রহমান, খায়রুল হাসান জুয়েল, সাইফুল ইসলাম, শেখ সোহেল রানা টিপু, সাজ্জাদ সাকীব বাদশা, আরিফুল ইসলাম উজ্জ্বল, কাজী নাসিম আল মোমিন রূপক, নুরুল  আলম পাঠান মিলন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, আবু আব্বাস ভুইয়া, মনিরুজ্জামান লিটন, কে এম হাসনাত, জেদ্দা পারভীর রিমি, শারমিন জাহান, নাসরীন খানম, বাণী ইয়াসমীন হাসি, ফারজানা ইয়াসমীন রিভা, সোহেলী  সুবহা সাবিনা, এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ, সিদ্দিকী নাজমুল আলম, মনোয়ারুল ইসলাম মাসুদ,  জয়দেব নন্দী, শাহিনুর রশীদ সোহেল, শাহিন আহমেদ, আবু হানিফ, রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী সুমন, আলী আশরাফ, নাজমুল হুদা ওয়ারেসি চঞ্চল, এ এইচ জিসান মাহমুদ, সাইফুল ইসলাম সাইফ, ইমরান সিরাজ সম্রাট, সুমন কুন্ডু, রেজাউল হাফিজ রেশিম, শামসুল কবির রাহাত, মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক, সরদার মামুনুর রশীদ মামুন, এহতেশামুল হক রুমী, হাসানুজ্জামান তারেক, আব্দুর রহমান জীবন, শারমিন সুলতানা লিলি, রিফাত হোসেন জিকো, আনোয়ার হোসেন, তরিকুল ইসলাম, মশিউর রহমান রুবেল, শিহাবুজ্জামান শিহাব, মাহমুদুল হাসান টিটু, আল মাহমুদ সরকার তারেক, আফরিন নুসরাত, শাহারুখ মিরাজ, শেখ রাসেল, নবেন্দু সাহা নব, আশিক রনো, সাফায়েত উল্লাহ, আজিজুর রহমান সরকার, দেলোয়ার রহমান দীপু, আশিকুল ইসলাম, ময়েজ উদ্দিন শরীফ রুয়েল, শহিদুল ইসলাম, রাইসুল ইসলাম জুয়েল, শাহনেওয়াজ প্রধান শুভ, গোলাম বাকি চৌধুরী, মারুফ বিল্লাহ, রাশেদুল ইসলাম রাসেল, মেহেদী হাসান মোল্লা, ওমর শরীফ, খন্দকার তারেক রায়হান, আতিকুর রহমান আতিক, জাকিয়া জামান, তনমি হোসেন, তানজিম শারমিন মিশোরি, সাহাবুদ্দিন চঞ্চল, সালমান হোসেন, বিপ্লব হোসেন পলাশ, ইসমাইল হোসেন সুমন, দেবাশিষ আইচ, মোস্তাফিজুর রহমান রাজু, সৌমেন চন্দ্র বোস, তৌহিদ আল হোসাইন তুহিন, হাবিবুল্লাহ শিশির, কপিল হালদার সজল প্রমুখ।
উল্লেখ্য, কোটা সংস্কারের আন্দোলনে অংশ নেয়ায় গত মঙ্গলবার (১০ এপ্রিল) রাতে উদ্ভিদ বিদ্যা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী মোর্শেদা আক্তারকে নিজের রুমে ডেকে নিয়ে যান হলের সভাপতি এশা। পরে তাকে মারধর করেন। একপর্যায়ে মোর্শেদার পা ধারালো বস্তুর আঘাতে কেটে যায় বলে হলের অনেক সাধারণ ছাত্রী অভিযোগ করেন। এছাড়া অপর একজনের মাথায় সেলাই দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
ঘটনার পরই কয়েকশ ছাত্রী হল ছাত্রলীগের সভাপতি এশাকে তার কক্ষে অবরুদ্ধ করে স্লোগান দিতে থাকেন। খবর পেয়ে অন্যান্য হল থেকেও শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে সুফিয়া কামাল হলের সামনে আসেন। এরপরই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং ছাত্রীদের মারধর অভিযোগে ছাত্রলীগ, হল এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এশাকে বহিষ্কার করা হয়।​
ছাত্রলীগ নেত্রী এশার গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার দিগনগর ইউনিয়নের দেবতলা গ্রামে। এশা ঝিনাইদহ সরকারি বালিকা বিদ্যালয় থেকে ২০১০ সালে মানবিক বিভাগ থেকে এসএসসি ও ২০১২ সালে ঝিনাইদহ সরকারি নুরুন্নাহার মহিলা কলেজ থেকে মানবিক বিভাগ নিয়ে এইচএসসি পাস করেন। এরপর ২০১২-২০১৩ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন বিভাগে ভর্তি হন। বর্তমানে তিনি মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। ব্রেকিংনিউজ/

Leave A Reply

Your email address will not be published.