গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রকে করোনা পরীক্ষার কিট উৎপাদনের অনুমতি দিয়েছে সরকার

0 ২৭১

বিডি সংবাদ টোয়েন্টিফোর ডটকম: করোনা ভাইরাস সনাক্তকরণ কিট উৎপাদনের অনুমতি পেয়েছে চিকিৎসা সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। ব্যাপকভাবে ব্যবহারের জন্য করোনা সনাক্তকরণ এ কিটের উৎপাদনের অনুমোদন দিয়েছে সরকার।

বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) দুপুর আড়াইটার দিকে অনুমতির বিষয়টি ব্রেকিংনিউজকে নিশ্চিত করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

তিনি বলেন, ‘আমরা মাত্র কাঁচামাল আমদানি করার অনুমোদন পেয়েছি। আমরা প্রায় সাত দিন ধরে অনুমতির অপেক্ষায় ছিলাম। ভালো খবর যে আমরা অনুমতি পেয়েছি।’ব্রেকিংনিউজ

বাজারে আসতে কতদিন সময় লাগবে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা স্যাম্পল তৈরি করে ১৫ দিনের মধ্যে সরকারকে দেবো। সরকার যাচাই-বাছাই করে এক মাসের মধ্যে বাজারে ছাড়তে পারবে। আমাদের দাম পড়বে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। সরকারের দাম পড়বে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। আমরা চাইবো ৩৫০ টাকার বেশি দাম কোনোভাইবেই যেন না হয়।’

এর আগে করোনাভাইরাস শনাক্তের কিট আবিষ্কার করার দাবি করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান আরএনএ বায়োটেক লিমিটেড। এ কিটটি বাজারজাত করার জন্য ওষুধ প্রশাসনের মহাপরিদফতরের অনুমোদনের জন্য আবেদন করে প্রতিষ্ঠানটি।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ জানান, ‘সিঙ্গাপুর এবং গণস্বাস্থ্যের একটি গবেষক দল মিলে এই আবিষ্কার করেছে। দেশে করোনাভাইরাস পরীক্ষা করার কিটের যে সংকট আছে তা এই আবিষ্কারে দূর হবে বলে আমরা আশা করি।’

এর আগে গতকাল বুধবার গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জ্যেষ্ঠ জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. ফরহাদ স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সাভারের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সনাক্তকরণ পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন ড. বিজন কুমার শীল। এই পদ্ধতিতে ৩৫০ টাকায় মাত্র ১৫ মিনিটে করোনা সনাক্ত করা সম্ভব হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠান গণস্বাস্থ্য-আরএনএ বায়োটেক লিমিটেড কোভিড-১৯ শনাক্তে একটি কিট তৈরির শেষ ধাপে রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন একটি দল গত ফেব্রুয়ারি থেকে কিট তৈরি ও উৎপাদনের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এ দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ড. বিজন কুমার শীল। তিনি ২০০৩ সালে সার্স পিওসি কিট তৈরি করা দলের সদস্য ছিলেন। করোনার পরীক্ষায় প্রয়োজনীয় রিএজেন্ট ও সরঞ্জাম প্রস্তুতের শেষ ধাপে রয়েছে দলটি।

ড. বিজন কুমার সিঙ্গাপুরে ডেঙ্গুর ওপর গবেষণা করছিলেন। গত ডিসেম্বরে চীনে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়ার পর তিনি বলেছিলেন, ‘করোনা ভাইরাস সার্সের রূপান্তরিত রূপ। এটা ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করবে। এটা নিয়ে এখন থেকেই আমাদের গবেষণা করা দরকার।’  কিন্তু তখন তার কথায় কেউ তেমন একটা কর্ণপাত করেনি।

উল্লেখ্য, ২০০৩ সালে যখন সার্স ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা গিয়েছিল তখন বাংলাদেশি বিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার শীল সিঙ্গাপুর গবেষণাগারে কয়েকজন সহকারীকে নিয়ে সার্স ভাইরাস দ্রুত নির্ণয়ের পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। র‌্যাপিড ডট ব্লট’ পদ্ধতিটি ড. বিজন কুমার শীলের নামে পেটেন্ট করা। পরে এটি চীন সরকার কিনে নেয় এবং সফলভাবে সার্স মোকাবিলা করে।

অনুমতি পাওয়ার পর এখন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র করোনা সনাক্তে যে কিট উৎপাদন করতে যাচ্ছে তাতে সরকার ভ্যাট-ট্যাক্স আরোপ না করলে ২০০ থেকে ২৫০ টাকায় বাজারজাত করা সম্ভব হবে বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানানো হয়েছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.