করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে কমেছে মোদির জনপ্রিয়তা : সমীক্ষা

0 ৫০১
সমীক্ষা বলছে, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে কমেছে নরেন্দ্র মোদির জনপ্রিয়তা। ছবি : সংগৃহীত

নভেল করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে চরম ধুঁকছে ভারত। এর মধ্যেই চরম পতন হয়েছে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জনপ্রিয়তার। সাম্প্রতিক দুটি সমীক্ষায় এমন তথ্যই উঠে এলো। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

‘মর্নিং কনসাল্ট’ নামের একটি মার্কিন তথ্য-বিশ্লেষক সংস্থার জনপ্রিয়তার সমীক্ষা অনুযায়ী, চলতি সপ্তাহে নরেন্দ্র মোদির জনপ্রিয়তার সূচক ৬৩ শতাংশ নেমে গেছে, যা ২০১৯ সালের আগস্টের পর থেকে সর্বনিম্ন। গত এপ্রিলে মোদির জনপ্রিয়তায় সবচেয়ে বেশি ধাক্কা লেগেছে। সে সময় ২২ পয়েন্ট পড়ে গিয়েছিল তাঁর জনপ্রিয়তা। সে সময় ভারতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছিল। মার্কিন সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, করোনা মোকাবিলায় কেন্দ্রের প্রস্তুতির অভাবের জেরে মোদির জনসমর্থনে ঘাটতি দেখা দিয়েছে।

 

পাশাপাশি, অপর একটি আন্তর্জাতিক সমীক্ষক সংস্থা ইউগভ-এর প্রতিবেদনেও একই চিত্র ধরা পড়েছে। সেখানেও স্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে মোদির জনপ্রিয়তা কমার। তাদের সমীক্ষায় ধরা পড়েছে, ভারতে গত ফেব্রুয়ারি মাসে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ার পর থেকেই মোদির জনপ্রিয়তা নিম্নমুখী হয়েছে। তাদের সমীক্ষায় উঠে এসেছে যে, ভারতে কোভিড সংকট মেটাতে মোদার সাফল্য প্রসঙ্গে মোটের ওপর ভালো উত্তর দিয়েছেন ৫৯ শতাংশ মানুষ। অথচ ভারতে করোনার প্রথম ঢেউয়ের সময় এই উত্তরদাতার সংখ্যা ছিল ৮৯ শতাংশ।

এদিকে মোদির জনপ্রিয়তার গ্রাফ নিম্নমুখী হতেই কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে বিজেপি নেতৃত্বের মধ্যে। কারণ, বিজেপির প্রচারের অন্যতম মুখই হলেন নরেন্দ্র মোদি। বিষয়টি নিয়ে দলের অন্দরমহলে এরই মধ্যে শুরু হয়েছে আলোচনা। মোদির ভাবমূর্তি কীভাবে পুনরুদ্ধার করা যায়, তা নিয়েও বিজেপির অন্দরমহলে আলাপ-আলোচনা শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।

 

শুধু মার্কিন সংস্থা নয়, ভারতীয় সংস্থা সিভোটারের সমীক্ষাও মোদিকে খুব একটা স্বস্তিতে রাখবে না। সেই সমীক্ষা অনুযায়ী, গত বছর মোদির কাজে ‘খুবই সন্তুষ্ট’ ছিল ৬৫ শতাংশ মানুষ। এখন তা ৩৭ শতাংশে ঠেকেছে। ২০১৪ সালে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতা আসার পর থেকে প্রথমবার মোদির কাজে সন্তুষ্ট মানুষের সংখ্যাকে ছাপিয়ে গেছে অখুশি মানুষের সংখ্যা। সিভোটার প্রতিষ্ঠাতা যশবন্ত দেশমুখ সংবাদসংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘নিজের রাজনৈতিক জীবনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছেন (ভারতের) প্রধানমন্ত্রী।’

 

গত বছর প্রাথমিকভাবে দাপটের পর ভারতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটা কমে গিয়েছিল। সে সময় ঢাকঢোল পিটিয়ে মোদির প্রচার শুরু করেছিল কেন্দ্রের শাসক দল। তাঁর সুদক্ষ নেতৃত্বের কারণেই না কি করোনা নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে দাবি করা হচ্ছিল। কিন্তু, চলতি বছর শুরুর পর থেকেই আবারও দেশে বাড়তে থাকে করোনার দাপট। দৈনিক আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা যথাক্রমে চার লাখ ও চার হাজার ছাড়িয়েছে। এক দিনে সর্বাধিক আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যার হিসাবেও ভারতে রেকর্ড তৈরি হয়েছে। আর তাতেই মোদির জনপ্রিয়তা কমেছে বলে মত সংশ্লিষ্ট মহলের।

 

তবে সার্বিকভাবে জনপ্রিয়তায় ধাক্কা খেলেও এখনও ভারতের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনীতিবিদের তকমা আছে মোদির কাছেই। সিভোটারের সমীক্ষা অনুযায়ী, মহামারির কারণে ভারতের মধ্যে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে যে ক্ষোভ পুঞ্জীভূত হয়েছে, তা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়েছে বিরোধীরা।

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.