করোনা ভাইরাস কী, কীভাবে ছড়ায়?
স্বাস্থ্য ডেস্ক: ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে করোনা ভাইরাস। চীনে অন্তত ১৩২ মানুষ ইতোমধ্যেই মারা গেছে। আক্রান্তের সংখ্যা কয়েক হাজার। শুধু চীন নই, পুরো বিশ্বেই ছড়িয়ে পড়ছে রহস্যময় এই ভাইরাস। আসুন জেনে নিই করোনা ভাইরাস কী এবং কীভাবে ছড়ায়:-
করোনা ভাইরাস কী?
করোনাভাইরাস শব্দটি ল্যাটিন করোনা থেকে নেয়া হয়েছে যার অর্থ মুকুট। কারণ ইলেকট্রন অণুবীক্ষণ যন্ত্রে ভাইরাসটি দেখতে অনেকটা মুকুটের মতো। ভাইরাসের উপরিভাগে প্রোটিন সমৃদ্ধ থাকে যা ভাইরাল স্পাইক পেপলোমার দ্বারা এর অঙ্গসংস্থান গঠন করে। এ প্রোটিন সংক্রামিত হওয়া টিস্যু বিনষ্ট করে।সকল প্রজাতির করোনাভাইরাসে সাধারণত স্পাইক (এস), এনভেলপ (ই), মেমব্রেন (এম) এবং নিউক্লিওক্যাপসিড (এন) নামক চার ধরনের প্রেটিন দেখা যা। এছাড়া করোনাভাইরাসের অনেক রকম প্রজাতি রয়েছে।
করোনাভাইরাস হলো নিদুভাইরাস শ্রেণির করোনাভাইরদা পরিবারভুক্ত করোনাভাইরিনা উপগোত্রের একটি সংক্রমণ ভাইরাস প্রজাতি। এই ভাইরাসের জিনোম নিজস্ব আরএনএ দিয়ে গঠিত। এর জিনোমের আকার সাধারণত ২৬ থেকে ৩২ কিলোব্যাসের মধ্যে হয়ে থাকে যা এ ধরনের আরএনএ ভাইরাসের মধ্যে সর্ববৃহৎ।
কখন ধরা পড়ে
প্রথমে চীনে ২০০২ সালে বিড়াল থেকে মানবশরীরে এই ভাইরাস (সার্স) সংক্রমণের কথা জানা যায়। বর্তমানে চীনে এটি নতুন রূপে দেখা দিয়েছে। ২০০২ সাল থেকে চীনে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া সার্স (পুরো নাম সিভিয়ার এ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম) নামে যে ভাইরাসের সংক্রমণে পৃথিবীতে ৭৭৪জনের মৃত্যু হয়েছিল৷ আর ৮০৯৮ জন সংক্রমিত হয়েছিল৷ সেটিও ছিল এক ধরণের করোনাভাইরাস৷
লক্ষণ কী?
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে সাধারণত যে লক্ষণগুলো ধরা পড়ে তা হল শ্বাসকষ্ট, জ্বর ও সর্দিকাশি। পাশাপাশি নিউমোনিয়া, কিডনিতে সমস্যাসহ নানা ধরনের জটিলতা তৈরি হয়। করোনাভাইরাস এক ধরনের ভাইরাস যার কারণে শ্বাসকষ্টসহ, ঠান্ডাজনিত নানা ধরনের শারিরীক সমস্যা দেখা দেয়। মিডল ইস্ট রেসপাইরেটরি সিনড্রম বা মার্স এবং সিভিয়ার একুউট রেসপাইরেটরি সিন্ড্রম বা সার্সও করোনাভাইরাস গোত্রের অন্তর্ভুক্ত।
মানুষ থেকে মানুষে কী সংক্রমিত হয়?
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে এ ভাইরাসের সংক্রমণের সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি আসলে ফ্ল্যাবিও ভাইরাস, যা দ্রুত সংক্রামিত হয়। চীনের ইউহানের প্রথম করোনা সংক্রণের ঘটনা নজরে আসে। তারপর থেকে নতুন নতুন জায়গাতেও ভাইরাস সংক্রমণের ঘটনা ঘটে চলেছে।
চিকিৎসা কী?
রোগটি একেবারেই নতুন হওয়ায় এখনও এর ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়নি। তবে এ ভাইরাস সংক্রমণের ফলে সৃষ্ট শারীরিক সমস্যায় সাধারণ চিকিৎসাই প্রদান করা হয়ে থাকে। সবচেয়ে জরুরি হল রোগীর জন্য নিরাপদ পরিবেশ বজায় রাখা।
কীভাবে নিজেকে রক্ষা করবেন?
করোনাভাইরাস এর কোন ওষুধ বা চিকিৎসা নেই। ভাইরাসনাশক ওষুধের সংখ্যা খুবই কম। তবে এই ভাইরাস প্রতিরোধে আগে থেকেই কিছু ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। যেমন ঘন ঘন সাবান দিয়ে হাত ধোওয়া এবং টিস্যু ব্যবহার করা। অবশ্যই মাস্ক পরে থাকা।