গাজায় আগামী সোমবারের মধ্যে যুদ্ধবিরতির আশা বাইডেনের
গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে ‘আগামী সোমবারের মধ্যে’ যুদ্ধবিরতি হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। কাতারে ইসরায়েল ও হামাসের প্রতিনিধিদের নিয়ে চলমান আলোচনায় কিছু অগ্রগতির খবর প্রকাশের পরপরই এমনটা জানালেন তিনি।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামাসের বন্দুকধারীরা হামলা চালিয়ে প্রায় এক হাজার ২০০ লোককে হত্যা করে। ওই সময় হামাস ২৫৩ জনকে জিম্মিও করেছিল, যাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে ইতোমধ্যে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ওই হামলার পরেই ইসরায়েল গাজায় বড় ধরনের বিমান ও স্থল অভিযান শুরু করে।
গাজা উপত্যকায় হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, ওই অঞ্চলে ইসরায়েলের হামলায় অন্তত ২৯ হাজার ৭৮২ জন নিহত হয়েছে, যার মধ্যে শুধু রোববারই ৯০ জন।
ইসরায়েলের প্রধান মিত্র রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাইডেন নিউইয়র্ক সিটিতে সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি নিয়ে সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা কাছাকাছি। আমরা এখনও (আলোচনা) শেষ করিনি। আমার আশা, আগামী সোমবারের মধ্যে আমরা যুদ্ধবিরতি করতে পারব।’
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন মুখপাত্র সোমবার বলেন, গত কয়েকদিনে ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে আলোচনায় ‘অগ্রগতি’ হয়েছে। তবে হামাস সর্বশেষ প্রস্তাবিত চুক্তিটি গ্রহণ করবে কিনা, তা স্পষ্ট নয়।
মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘মিসর, ইসরায়েল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারের মধ্যে আমরা যে আলোচনা করেছি, তাতে অগ্রগতি হয়েছে।’
গত সপ্তাহে গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবিতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবে ভেটো দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছিল। পরিবর্তে দেশটি নিজস্ব অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব দিয়েছে এবং গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফাহতে আক্রমণ না করার জন্য ইসরায়েলকে সতর্ক করেছে।
ইসরায়েলের সরকার বলেছে, নতুন স্থল অভিযানের আগে গাজা উপত্যকার কিছু অংশ থেকে বেসামরিক লোকদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য তাদের সেনাবাহিনীর কাছ থেকে পরিকল্পনা হাতে পেয়েছে।
রাফাহতে এ ধরনের আক্রমণ না করার জন্য আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে রয়েছে ইসরায়েল। অব্যাহত ইসরায়েলি হামলা থেকে বাঁচতে গাজার অন্যান্য অংশ থেকে পালিয়ে বহু ফিলিস্তিনি শরণার্থীর শহরটিতে আশ্রয় নিয়েছে।
এদিকে, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের (পিএ) প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শতায়েহ পদত্যাগ করেছেন। যারা পশ্চিম তীরের কিছু অংশও পরিচালনা করেন। প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস তার সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন। এতে একটি টেকনোক্র্যাটিক সরকার আসার পথ তৈরি হয়েছে। মাহমুদ আব্বাস পিএ সংস্কারের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাপের মধ্যে রয়েছে, যাতে তারা ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরে গাজা শাসন করতে পারে।
গত সপ্তাহে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এই অঞ্চলের জন্য একটি পরিকল্পনা উপস্থাপন করেছিলেন, যাতে পিএ’র জন্য কোনো ভূমিকার কথা উল্লেখ করা হয়নি।