চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: সাম্প্রতিক সময়ের বিভিন্ন ঘটনায় সুস্পষ্ট হয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রাজনৈতিক দুরাবস্থার বিষয়টি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে জেলা আওয়ামী লীগের পূর্বের ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনতে দরকার অভিজ্ঞ ও দক্ষ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। আ.লীগ সরকারের ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে জেলাজুড়ে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ড হলে দলীয় কোন্দলে জড়িয়েছে নেতাকর্মীরা। আ.লীগ নেতৃবৃন্দের দাবি, দক্ষ নেতৃত্বই পারে এই সংকটের মধ্যে থেকে দলকে উত্তোরণ করতে।
আ.লীগের একাধিক সূত্র জানায়, দেশব্যাপী ব্যাপক উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় চাঁপাইনবাবগঞ্জও পিছিয়ে নেয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় গত ১৪ বছরের চাঁপাইনবাবগঞ্জে রাস্তা-ঘাট থেকে শুরু করে অবকাঠামো, ব্রীজ, কালভার্ট, সংস্কৃতি, শিক্ষা চিকিৎসা কৃষিখাতে ব্যাপক উন্নয়ন ঘটেছে। কিন্তু গুটিকয়েক আওয়ামী লীগ নেতার অবহেলা ও কোন্দলের কারণে আগামী নির্বাচন নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছে একনিষ্ঠ নেতা, কর্মী ও সমর্থরা৷ তাই তারা চাইছেন একজন দক্ষ ব্যক্তি হিসেবে বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব রুহুল আমীনকে নৌকা প্রতীকের হাল ধরতে। তারা চান বর্ষিয়ান এই নেতাকে নৌকা প্রতিকের মনোনয়ন দেয়া হোক। যিনি দক্ষ নেতৃত্বের গুনে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করবেন।
আ.লীগ নেতৃবৃন্দের দাবি, প্রবীণ রাজনীতিবিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব রুহুল আমিনের কোন বিকল্প নেই। যিনি আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি পদে থেকে দলকে সুসংগঠিত করতে ঐকান্তিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন দীর্ঘদিন যাবত। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক তার হাতে তুলে দিলে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করার পাশাপাশি উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে পারবেন।
জানা যায়, আ.লীগের অভ্যন্তরীণ কলহের কারনে সাধারণ মানুষের কাছে আওয়ামী লীগের এসব উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এবং শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য ম্লান হতে বসেছে। দলের মধ্যে অসুস্থ প্রতিযোগিতার কারনে নিজেদের মধ্যে সংঘাত বাড়িয়ে দিচ্ছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি। তাই জেলার সচেতন মানুষ মনে করে, জেলায় আওয়ামী লীগের এসব উন্নয়নের ফসল নিজেদের ঘরে তুলতে অভিজ্ঞ ও স্বচ্ছ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব সম্পন্নদের আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া দরকার তাহলে এখানকার সাধারণ মানুষ এসব উন্নয়নের মূল্যায়ন করে আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করবে।
তাছাড়া সাধারণ মানুষের কাছে যাদের গ্রহণ যোগ্যতা রয়েছে, এমন প্রতিনিধিত্ব দরকার এমনটাই বলছেন, জেলাবাসী। তাছাড়া অতীতে বিভিন্ন দ্বায়িত্ব পালনের মধ্যে দিয়ে মানুষের কাছে বিতর্কিত হয়নি, এমন একজন নেতা যা তৃণমূল থেকে শুরু করে বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডে জনগনের পাশে থাকবে এবং জনগণের স্বার্থে নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে যাবে। তৃণমূল কর্মীদের দাবি, নেতা হিসেবে বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব রুহুল আমিন রাজনীতিতে স্বচ্ছ, নীতিবান ও সন্ত্রাসবিরোধী শান্তিপ্রিয় একজন মানুষ।
১৯৭৩ সাল থেকে তিনি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান থেকে জনগণকে বিভিন্ন সেবা প্রদানের মধ্যে দিয়ে যথেষ্ট সম্মান কুরিয়েছেন এবং সর্বশেষ জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পরথেকেই স্বল্প সময়ের মধ্যেই ব্যাপক উন্নয়নও করেছেন। এই মুহুর্তে জেলা আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি উজ্জলে বিরাট ভুমিকা রেখে আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে শেখ হাসিনার সরকাকে সহযোগিতা করতে পারবে বলে জেলার সাধারণ ও রাজনৈতিক সচেতন মানুষ মনে করে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে বর্তমানের অবস্থায় প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতারা আশঙ্কা করছেন, রাজনৈতিক দুরাবস্থার এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুনরায় নৌকার পরাজয় সময়ের ব্যাপার মাত্র। অথচ ক্ষমতার লোভে গুটিকয়েক আ.লীগের অনুপ্রবেশকারীরা দলকে আজ দুর্বিষহ যন্ত্রণার মধ্যে ফেলেছে। আওয়ামী লীগের নীতিবিরোধী এমন কর্মওকান্ডের কারণে বিতর্কিত হচ্ছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন কর্মকান্ড। ঘরে ঘরে প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের খবর পৌঁছে দেয়ার বিপরীতে এমন গর্হিত কাজের ফলে জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে আওয়ামী লীগ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা আ.লীগের এক সহ-সভাপতি বলেন, যে বা যারা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দল আওয়ামী লীগকে বির্তকিত করতে দলের মধ্যেই বিভক্তি সৃষ্টি করছে, অরাজকতা করছে, তাদের পরিনতিও ভয়াবহ হবে। প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে যারা অপরাজনীতি করতে চাই, তাদের বিরুদ্ধেও সাংগাঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। বিষয়গুলো সার্বিকভাবেই কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে অবহিত করা হয়েছে।
সদর উপজেলা আ.লীগের এক নেতা জানান, অসুস্থ রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা তাদেরকে উম্মাদ করে ফেলেছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এমন পরিস্থিতি অব্যশই আমাদের জন্য ভালো নয়। আমরা বিশ্বাস করি, প্রধানমন্ত্রীর দেয়া নেতৃত্ব অমান্য করে জেলা আওয়ামী লীগে বিভক্তি ঘটিয়ে খুব বেশি দূর এগিয়ে যাওয়া যাবে না। আওয়ামী লীগকে নিয়ে এমন ছিনিমিনি খেললে অস্তিত্ব থাকবে না। আমরা দেখেছি, এর আগে জেলায় হারুন-পাপিয়ার দাপট। সময়ের ব্যবধানে তারা হারিয়ে গেছে। নতুন করে যারা জেলায় আওয়ামী লীগের ছায়াতলে থেকেও আ.লীগের বিরোধিতা করছে, তারাও ধ্বংস হয়ে যাবে।
এসব কর্মকান্ডে বিতর্কিত হচ্ছে আওয়ামী লীগ প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে উন্নয়ন কর্মকান্ড। অথচ গত ১৪ বছরে দেশের সার্বিক উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় যোজন যোজন এগিয়ে রয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সার্বিক উন্নয়ন কর্মকান্ড। দিন দিন পাল্টে যাচ্ছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সামাজিক-অর্থনৈতিক পরিস্থিতি।
জেলায় বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও দপ্তরের ভবন নির্মাণ, সেবার মান বৃদ্ধি, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নসহ নানান ধরনের সুবিধা পেয়েছেন ও পাচ্ছেন জেলাবাসী। সংসদ সদস্য না থাকলে দিনরাত ছুটে চলছেন জেলার প্রান্তিক অসহায় দরিদ্র মানুষের জীবনমান উন্নয়নে। বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব রুহুল আমিনের দূরদর্শী নেতৃত্বে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় ফিরেছে আওয়ামী লীগের ঐতিহ্য। আমরা জানি, বলা হয়ে শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড। তাই শিক্ষাক্ষেত্রে সর্বাপেক্ষা গুরুত্ব দিয়েছেন তিনি। নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের নবনির্মিত একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ, বঙ্গবন্ধু ছত্রাবাস নির্মাণ, দেশের একমাত্র বেসরকারি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে চাঁপাইনবাবগঞ্জে এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, জেলার বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নবনির্মিত আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন ভবন নির্মাণে ভূমিকা পালন করেছেন, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব রুহুল আমিন।
একটি দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উপর নির্ভর করে সে দেশের উন্নয়ন। বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব রুহুল আমিনের প্রচেষ্টায় গত ১৪ বছরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের যোগাযোগ ব্যবস্থার যে উন্নয়ন হয়েছে, তা গত কয়েক যুগেও হয়নি৷ এরমধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জে শেখ হাসিনা দ্বিতীয় মহানন্দা সেতু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর উপজেলার ০৭টি ইউনিয়নের পদ্মাপাড়ের দিয়ার অঞ্চলের স্বপ্নপূরণ মাধ্যমে বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল মহানন্দা নদীতে একটি সেতু নির্মাণ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বশরীরে নিজে এসে তা উদ্বোধন করেন। সেতু নির্মাণের ফলেই পাল্টে গেছে ০৭ ইউনিয়নের চিত্র এখন অনেকটাই যোগাযোগের মাধ্যমে সুখি জীবন যাপন করছেন দিয়ার অঞ্চলের সাধারণ জনগণ।
ইতোমধ্যেই চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে সোনামসজিদ পর্যন্ত রেললাইন সম্প্রসারণের কাজ শুরু করেছে রেল বিভাগ। রেল দপ্তরে যোগাযোগ করে কাজের অগ্রগতিতে ভূমিকা রাখছেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব রুহুল আমিন।