চাটমোহরসহ চলনবিলাঞ্চলে ৭০ কোটি টাকার মধু উৎপাদনের সম্ভাবনা

0 ১১৬
চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি: চাটমোহরসহ চলনবিলাঞ্চলে এবারে প্রায় ৭০ কোটি টাকার মধু উৎপাদনের সম্ভাবনা আশা করছেন মৌচাষীরা। পাবনা, নাটোর ও সিরাজগঞ্জের বৃহৎ এলাকা নিয়ে গঠিত চলনবিল। চলনবিলের মাঠ গুলোতে এখন মাঘী সরিষার হলুদ ফুলের সমারোহ। সরিষা ফুল থেকে মধু সংগ্রহের লক্ষ্যে মৌচাষীরা চলনবিলাঞ্চলের সরিষা ক্ষেতে মৌবক্স স্থাপন করতে শুরু করেছেন।
সরিষার হলুদ ফুলে-ফুলে, নেচে-নেচে, ছুটে-ছুটে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছে খামারীদের মৌমাছি। ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে মধু সংগ্রহের কাজ। মৌচাষীরা আশা করছেন চলতি মৌসুমে চলনবিল এলাকায় প্রায় পাঁচ হাজার মেট্রিক টন মধু উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে যার বাজার মূল্য প্রায় ৭০ কোটি টাকা।
জানা গেছে, জমি থেকে বর্ষার পানি নেমে যাবার সাথে সাথে এ এলাকার কৃষকেরা উদ্বৃত্ত ফসল হিসেবে মাঘী সরিষার বীজ ছিটিয়ে দেন। কেউ কেউ চাষ করেও সরিষার বীজ বপন করেন। মাঘ মাসে সরিষা তুলে এসব জমিতে বোরো ধান চাষ করেন তারা। প্রতি বছর অগ্রহায়ন মাসের শেষ দিকে সরিষার ফুল ফুটতে শুরু করে।
এসময় দেশের বিভিন্ন এলাকার মৌচাষীরা মধু সংগ্রহে চলনবিল এলাকায় আসতে শুরু করেন। পৌষ-মাঘে চলনবিল এলাকার চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া, ফরিদপুর, বড়াইগ্রাম, গুরুদাসপুর, তাড়াশ, সিংড়া, রায়গঞ্জ, উল্লাপাড়ার পশ্চিমাংশসহ এর আশপাশ এলাকার মাঠগুলো ছেয়ে যায় হলুদ সরিষা ফুলে। মৌসুমের শুরুতেই পাবনা, নাটোর, সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন এলাকার খামারীদের পাশাপাশি সাতক্ষিরা, খুলনা, বাগেরহাট, নড়াইল, গাজীপুর, রংপুর, দিনাজপুর, চাপাইনবাবগঞ্জ, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাও, নীলফামারীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মৌখামারীরা মধু সংগ্রহের জন্য চলনবিল এলাকার মাঠ গুলোতে অস্থায়ী আবাস গড়ে তোলেন। খামারের মৌবক্স গুলো তারা সরিষা খেতের পাশে স্থাপন করেন এবং কয়েক দিন পর পর মধু সংগ্রহ করেন।
চাটমোহরের নিমাইচড়া ইউনিয়নের মির্জাপুর মাঠে মৌবক্স স্থাপন করেছেন সাতক্ষিরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার শ্রীধলা গ্রামের মৌচাষী শাহিনুর রহমান। তিনি জানান, এ বছর ৬০ টি মৌবক্স স্থাপন করেছেন তিনি। ইতিমধ্যে মৌবক্সগুলো থেকে একবার ৫৩ কেজি মধু সংগ্রহ করেছেন। যতদিন সরিষা ফুল থাকবে তত দিন এ এলাকায় মধু সংগ্রহ করবেন তিনি।
বর্তমান বাজারে প্রতি কেজি মধু পাইকারী দুই শত টাকায় এবং খুচরা বাজারে তিন থেকে চার শত টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত বছর মধুর দাম ছিল চার হাজার পাঁচ’শ থেকে পাঁচ হাজার টাকা মন। তিনি আশা প্রকাশ করেন আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার মধুর ভাল ফলন পাওয়া যাবে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.