চিলাহাটি স্থলবন্দরটি যুগ যুগ থেকে বন্ধঃ কর্মহীন হয়েছে হাজার মানুষ

0 ২,৭৮৭

mail-google-comআবু ছাইদ, ডোমার-নীলফামারী : নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলার চিলাহাটিতে ১৯৬০ সালেস্থল বন্দর কার্যক্রম চালু হয়েছিল। সেকালে দৈনন্দীন জিনিস পত্র আমদানি রপ্তানি হওয়ায় চিলাহাটিতে স্থাপন করা হয়েছিল একটি চেকপোষ্ট। ১৯৬৫ সালে পাক ভারত যুদ্ধের সময় চেকপোষ্টটি চালু রেখে স্থল বন্দরটি বন্ধ করে দেয়া হয়। তাতেই শেষ নয় ২০০২ সালে জুন মাসে অজ্ঞাত কারনে চেকপোষ্টটিও বন্ধ হয়ে যায়। এরই প্রেক্ষিতে অক্লান্ত পরিশ্রমে ২০০৯ সালে ডিসেম্বর মাসে চিলাহাটিতে স্থল বন্দর ও চেকপোষ্ট চালু করার দাবিতে গোটা জেলায় ১৫ মিনিটের স্তব্ধ কর্মসূচি পালন করা হয়। যে কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে ছিল জেলার লক্ষ লক্ষ মানুষ। থমকে গিয়েছিল গোটা জেলা।
জানা গেছে, দেশের সর্ব উত্তরের জেলা নীলফামারী এরই অন্তর্ভূক্ত চিলাহাটি স্থল বন্দরের কার্যক্রম দীর্ঘ দিন থেকে ঝুলে আছে। গত ২০১৩ সালের আগষ্ট মাসে চিলাহাটি স্থল বন্দরটি মন্ত্রী সভার বৈঠক অনুমোদনের পর গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়েছিল। ওই বছরের সেপ্টেম্বর মাসে নৌপরিবহন মন্ত্রী শাহাজাহান খানের স্থল বন্দরটি উদ্বোধন করার কথা ছিল। এ জন্য ২০৩ কোটি টাকা ব্যায়ে চিলাহাটি পর্যন্ত রেলপথের আধুনিকায়নও করা হয় কিন্তু তা আর উদ্বোধন হয়নি। চিলাহাটি থেকে ভারতের হলদিবাড়ী পর্যন্ত রেলপথ পুনঃস্থাপনের উদ্যেগটিরও বন্ধ দুয়ার খোলেনি। ফলে বাংলাদেশ সীমান্তে ০৮ দশমিক ১০ কিলোমিটার ও ভারতের সীমান্তে হলদিবাড়ী পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার রেল লাইন স্থাপন করা হয়নি আজও। ২০১১ সালে ১৯ জুন নৌপরিবহন মন্ত্রী শাহাজাহান খান চিলাহাটি স্থলবন্দর পরিদর্শন করেছিলেন। সে সময় চিলাহাটি স্থল বন্দরের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক চেকপোষ্টটি পুনরায় চালুর বিষয়ে গুরুত্বদেন। জানা যায়, দেশে বর্তমানে যে কয়েকটি স্থল বন্দর রয়েছে। তার মধ্যে ৭টি স্থলবন্দর বন্দর সচল। বাকি স্থলবন্দর গুলোতে আমদানি রফতানি কম। দর্শনা স্থলবন্দর বন্ধ হয়ে চালু রয়েছে শুল্ক স্টেশন কার্যক্রম। সে হিসাবে চিলাহটি স্থলবন্দরটিকে চালু করতে বেশ গুরুত্ব আরোপ করা হয়। এরই এক পর্যায়ে কথা উঠে আসে স্থল বন্দর চালুর পাশাপাশি ঢাকা থেকে শিলিগুড়ি পর্যন্ত চিলাহাটি হয়ে সরাসরি মৈত্রী ট্রেন চলাচলের বিষয়টি। এছাড়া বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভূটান, ও চীনের সাথে বানিজ্যিক যোগাযোগ এবং আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরবে মর্মে মংলা বন্দর থেকে চিলাহাটি পর্যন্ত পাকা রাস্তা ও অত্যাধুনিক রেলপথ স্থাপনের কথাও উঠে আসে। পাশাপাশি উত্তরাঞ্চলের হাজার হাজার আমদানি রপ্তানিকারক ও শিল্প উদ্যোক্তারা বিনিয়োগ ও ব্যবসা বানিজ্যে আগ্রহী হবেন। স্থলবন্দরটি নীলফামারী জেলার আর্থসামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রাখবে। রেলওয়ে কারখানা সহ বিভিন্ন শিল্প কারখানায় দ্রুত বিকাশ সহ হাজার হাজার বেকার কর্মহীন মানুষের  কর্মসংস্থানে সুযোগ সৃষ্ঠি হবে। বিশেষ করে সড়ক পথের চেয়ে রেলপথকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন আমদানি ও রপ্তানিকারকগন। সে ক্ষেত্রে লালমনিরহাট ও পঞ্চগড়ের বাংলাবান্দার চেয়ে চিলাহাটি স্থলবন্দর ও আন্তর্জাতিক চেক পোষ্ট চালুর বিষয়টি সব থেকে বেশি গুরুত্ব পেয়েছিল। কিন্তু এতো কিছুর পরেও আজও চালু হয়নি চিলাহাটি স্থলবন্দর ও আন্তর্জাজিক চেক পোষ্টটি। জেলার স্থানিয় জনগন ও সুধিমহল এবং গন্যমান্য ব্যক্তিগণের  মতে চিলাহাটি স্থলবন্দর ও আন্তর্জাতিক চেকপোষ্ট চালু হলে বাংলাবান্দা ও বুড়িমারীর চেয়ে লাভবান হয়ে উঠা যাবে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.