আবু ছাইদ, ডোমার-নীলফামারী : নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলার চিলাহাটি একটি ঐতিহ্যবাহি হাট ও বাজার। চিলাহাটি নীলফামারী জেলার শেষ প্রান্তে অবস্থিত। এই চিলাহাটির পার্শ্ববর্তী আর একটি বিক্ষাত হাট ও বাজার পঞ্চগড় জেলার ভাউলাগঞ্জ হাট। চিলাহাটি হইতে ভউলাগঞ্জের দূরত্ব ০৭ কিলোমিটার এবং রাস্তাটি পাকা। কিন্তু ০৭ কিলোমিটার রাস্তার মাঝপথে একটি ব্রিজের অভাবে এই দুই জেলার মানুষকে প্রায় ৪২ কিলোমিটার পথ ঘুরে যাতায়ত করতে হচ্ছে।
জানাযায়, ভাউলাগঞ্জ একটি এই এলাকার গুরুত্ব পূর্ন বড় হাট আবার চিলাহাটিও মানধাত্তার আমল থেকে একটি বড় ব্যবসা কেন্দ্র। চিলাহাটি হইতে ভাউলাগঞ্জে যাতায়াত ব্যবস্থা খারাপ হওয়ার কারনে আজ চিলাহাটি অনেক পিছিয়ে। চিলাহাটি বাজারের ব্যবসায়ীগন জানান, গত প্রায় ১০ বছর পূর্বে ভাউলাগঞ্জ হাট চলত চিলাহাটির ব্যাবসায়িদের নিয়ে। এমনকি চিলাহাটি হইতে নীলফামারীর দুরত্ব থেকে পঞ্চগড়ের দূরত্ব কম হওয়ায় চিলাহাটি অঞ্চলের মানুষ পঞ্চগড় যাতায়াত করতো বেশী। কিন্তু ব্রিটিশ আমলের লোহার ব্রিজটি ধ্বংসে পরিণত হওয়ায় এই অঞ্চলের মাসুষকে ০৭ কিলোমিটার যেতে ৪০ কিলোমিটার পথ পারি দিতে হচ্ছে।
প্রতিবেদক ঘুরে এবং এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, পঞ্চগড় জেলার বেশ কিছু অঞ্চলের মানুষ চিলাাহাটি হয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে। এলাকাবাসী জানান, চিলাহাটি হইতে ট্রেন চলাচল করার কারণে পঞ্চগড়ের মানুষ চিলাহাটি এসে ট্রেনে করে দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে। চিলাহাটির গোসাইগঞ্জ, মুক্তিরহাট, বিওপি বাজার সহ পাশ্ববর্তী ইউনিয়ন কেতকীবাড়ীর কৃষকরা তাদের কৃষিপন্য ভাউলাগঞ্জ হাটে নিয়ে বিক্রি করে। গত ১০ বছর পূর্বে সড়ক ব্যবস্থা ভালো থাকায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ভাউলাগঞ্জ আসা পাইকাররা চিলাহাটি থেকেও ট্রাকে করে কৃষি পন্য সহ ইত্যাদি মালামাল নিয়ে যেতেন। কিন্তু আজ ব্রিজটির দুরাবস্থার কারনে সেই সমস্ত পাইকারী ব্যবসায়িরা চিলাহাটিতে আসতে পারেন না। কৃষকগন জানান একারণে তারা উচিৎ মুল্য পাচ্ছে না। এছাড়াও সাধারণ কোন কারনে যদি ভাউলাগঞ্জ সহ টুনির হাট, চাকলা, বোদা, পঞ্চগড় যেতে হয় তাহলে অতিরিক্ত ৪০ কিলোমিটার পথ বেশী অতিক্রম করতে হয়। ভ্যান ও অটো ওয়ালাদের সাথে কথা বললে তারা জানান ১০-১৫ বছর ধরেই এই ব্রিজটি ভাঙ্গা। এ অবস্থায় মালামাল আনা নেওয়া করলে মালামাল ভ্যান বা অটো থেকে নামাতে হয় এবং মাথায় করে ব্রিজ পার করে আবার ভ্যনে তুলে নিয়ে এভাবে যাতায়াত করতে হয়। বিষয়টি এলাকার সুধীজন, গন্যমান্য এবং সাধারণ জনগণ উর্ধোতন কতৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছেন।
তিতুমীর ট্রেনে টিকিট অভিযান
আবু ছাইদ, ডোমার-নীলফামারী : নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলার চিলাহাটি হতে রাজশাহীগামী তিতুমীর এক্সপ্রেস ট্রেনে সৈয়দপুরের উদ্দেশ্যে গমনকারী এক যাত্রী বলেন, আমরা টিকিট না কেটে যদি টাকাগুলো ট্রেনের এটেনডেন্টকে দেই, তাহলে তো সরকার আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হলো অন্যদিকে জনগণের টাকা গুটি কয়েক সুবিধাবাদী মানুষ গ্রহণ করল। এটা হতে দেওয়া যায় না। ২৪নভেম্বর চিলাহাটি হতে রাজশাহীগামী তিতুমীর এক্সপ্রেস ট্রেনটিতে চিলাহাটি রেলস্টেশনে টিকিট মাষ্টার স্টেশনের মাইক দিয়ে যাত্রীদের টিকিট কেটে ট্রেনে উঠার জন্য বারবার অনুরোধ করার পরও অনেক যাত্রী পূর্বের অভ্যাস জনিত কারণেই বিনা টিকিটেই ট্রেনে উঠে। এতে ট্রেনের রাজশাহী সহকারী টিটি পরিদর্শক ট্রেনে অবতরণকারী প্রায় ২০-৩০জন যাত্রীকে চিলাহাটি স্টেশনে নামিয়ে দিয়ে টিকিট গ্রহণ করে ট্রেনে উঠার জন্য বাধ্য করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে একজন সচেতন রেল ভ্রমণকারী একথা বলেন।
এতে এটিএসটিসি মোস্তাফিজুর রহমান এই প্রতিবেদককে বলেন, প্রতিদিনই সুযোগ পেলেই আমি টিকিট চেক করি। জনগণকে টিকিট কাটার জন্য উদ্ভুদ্ধ করি। আর তা করলেই বিনা টিকিটে কেউই ট্রেনে উঠবে না। আমার দায়িত্ব আমি পালন করছি। বাকিটা আপনারা আছেন, সচেতন জনগণ আছেন।
চিলাহাটি রেলস্টেশনের স্টেশন মাস্টার আ.মতিন বলেন, পূর্বের তুলনায় বিনা টিকিটে যাত্রী ভ্রমণ অনেক কমে গেছে। তবে গুটি কয়েক যে নেই তা বলা যাবে না। সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।
চিলাহাটি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দৈনিক খবরপত্র’র চিলাহাটি প্রতিনিধি কাজল আশরাফ বলেন, কিছু অসাধু এটেনডেন্ট ও জিআরপি সদস্য পাসেঞ্জারকে টিকিট না কাটার জন্য উদ্ভুদ্ধ করে তাদের জন্য নির্ধারিত আসনে করে যাত্রীদেরকে কম টাকার প্রলোভন দেখিয়ে নিয়ে যায়। এগুলো প্রতিহত করা দরকার।
তিতুমীর ট্রেনে টিকিট অভিযানে অংশ নেন রাজশাহী সহকারী টিটি পরিদর্শক(এটিএসটিসি) মোস্তাফিজার রহমান, চিলাহাটি স্টেশন মাস্টার আ.মতিন, জিআরপি উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাজেদ, টিকিট পরিদর্শক(টিটিই) ময়নুল হক, টিটি আলিয়া জাহান রানী ও টিটি একেএম আসকারুল হক প্রমূখ।