টিকসই উন্নয়নে নিম্নমানের কাজ, ঠিকাদারের রোষানলে সাংবাদিক
সরকার চাইছেন টিকসই উন্নয়ন। আর সেই টিকসই উন্নয়নে নিম্নমানের কাজ করে পকেট ভারি করছেন এক শ্রেণীর ঠিকাদার। কাজের মান নিয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে হুমকির মুখে পড়ছেন গনমাধ্যম কর্মীরা।
এমন ধরনের ঘটনা ঘটেছে রাজশাহীর বাঘায়। রাস্তা পৃর্ণবাসনের কাজে পুরাতন ইট ব্যবহারসহ নিম্নমানের কাজের সংবাদ সংগ্রহ করায় সাংবাদিকের হাত-পা কেটে নেওয়াসহ প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন এক ঠিকাদার। এশিয়ান টিভির স্টাফ রিপোর্টার ও স্থানীয় দৈনিক রাজবার্তার বিশেষ প্রতিনিধি সাংবাদিক আখতার রহমানকে এমন হুমকি দিয়েছেন ঠিকাদার আব্দুল কুদ্দুস। তিনি বাঘা পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি বলে জানা গেছে।
বৃহসপতিবার (২৬-০৫-২০২২) রাতে ঠিকাদার আব্দুল কুদ্দুসের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন, ওই সাংবাদিক।
সাংবাদিক আখতার রহমান জানান,উপজেলার হরিনা মাষ্টার পাড়ার মহসীনের বাড়ি হতে বীরমুক্তিযোদ্ধা জোনাব আলীর বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা পৃর্ণবাসনের কাজ করছিলেন বাঘা পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি ও ঠিকাদার আব্দুল কুদ্দুস। তিনি ওই রাস্তার এজিং এর কাজ করছিলেন পুরাতন ইট দিয়ে।
বিষয়টি জানার পর ক্যামেরাম্যানকে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ছবি ধারন করে উপজেলা প্রকৌশলীর মুঠোফোনে পুরাতন ইট ব্যবহারসহ কাজের মান নিয়ে কথা বলছিলেন। তা দেখে ঠিকাদারের একজন মিস্ত্রী তার মুঠোফোন থেকে ঠিকাদারের মুঠোফোনে ফোন দিয়ে কথা বলতে বলেন।
কিন্তু তিনি (সাংবাদিক) তার ফোন থেকে কথা বলতে রাজি না হয়ে সেখান থেকে নিজ বাড়ি বাঘায় আসছিলেন। পথিমধ্যে বিকেল সোয়া ৪টায় ০১৮৪৩৭৪২৪৪০ নম্বর থেকে তার মুঠোফোনে ব্যবহৃত ০১৭১১৪১৩৯১৯ নম্বরে ফোন এলে রিসিভ করে কথা বলতেই নানা প্রকার ভয়ভীতিসহ প্রাণনাশের হুমকি দেন।
পরবর্তীতে বাঘা উপজেলা পরিষদের সামনে পৌঁছার পর, সেখানে অবস্থানরত ঠিকাদার আব্দুল কুদ্দুস তাকে দেখে প্রকাশ্যে নানান ধরনের কথা বলে হাত-পা কেটে নেওয়াসহ আবারো প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করেন। বিষয়টি জানতে চেয়ে আব্দুল কুদ্দুসের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, এসব বিষয় নিয়ে পরে কথা বলবেন। এর পর কোন কথা বলতে রাজি হননি।
উপজেলা প্রকৌশলী দপ্তরের উপ সহকারি প্রকৌশলী হাবিব হোসেন জানান, এজিং এ পুরাতন ইট ব্যবহার করে কাজ করছিল। তা দেখে উপজেলা প্রকৌশলী সেখানে গিয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়ে ভালোমানের নতুন ইট দিয়ে কাজ করার কথা বলেন। পরে নতুন ইট ফেলেছেন। তবে রাস্তার পুরাতন ইটের খোয়া ব্যবহার করার নির্দেশনা রয়েছে।
কাজের মূল ঠিকাদার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাজ পেয়েছে সানফ্লাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং কন্সট্রাকশন। তার কাছ থেকে নিয়ে সেই কাজটি করছেন আব্দুল কুদ্দুস। দুই জায়গায় প্রটেকশন ওয়ালসহ ৮৪০ মিটার রাস্তার কাজের প্রাক্কলন মূল্যে ৩১ লক্ষ ৩৭ হাজার ১৫৯ টাকা। ৫% নিম্নদরে চুক্তি মূল্যে ২৯ লক্ষ ৮০ হাজার ৩০১ টাকা। উপজেলা প্রকৌশলী রতন কুমার ফৌজদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাজ্জাদ হোসেন জানান,অভিযোগ নিয়ে জিডি করা হয়েছে। তদন্ত করে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উল্লেখ্য,ওই ঠিকাদারের বিরুদ্ধে এর আগেও সাংবাদিকদের হুমকিসহ নানান অপকর্মের একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এর আগেও অনিয়ম করে রাস্তার কাজ করায় কাজ বন্ধ করে দেয় দেওয়ায় উপজেলা প্রকৌশলী দপ্তর।
পরে প্রকৌশলীর কার্যালয়ে এক কর্মচারিকে মারধর করার অভিযোগ আছে। এসব অপকর্মের সংবাদ প্রকাশ করায়,নিজের অপরাধ ঢাকতে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করেছেন ওই ঠিকাদার।
Comments are closed.