টি-টোয়েন্টিকেও বিদায় বলে দিলেন মালিঙ্গা
টেস্ট ও ওয়ানডে থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন আগেই। শুধু টি-টোয়েন্টি খেলেই ক্রিকেটের ফেরিওয়ালা মাতাচ্ছিলেন পুরো বিশ্ব। অবশেষে সেটাও ছেড়ে দিলেন। টেস্ট-ওয়ানডের পর এবার টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটকেও বিদায় বলে দিলেন লাসিথ মালিঙ্গা।
সীমিত ওভারের ফরম্যাট থেকে গতকাল মঙ্গলবার রাতে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন মালিঙ্গা। ৩৮ বছর বয়সে এসে ক্রিকেটে দুই দশকের পথচলার ইতি টানলেন শ্রীলঙ্কান তারকা।
অবশ্য এই ফরম্যাটে লম্বা সময় ধরেই খেলা হচ্ছে না মালিঙ্গার। গত বছরের মার্চে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে শেষ মাঠে নেমেছিলেন। পাল্লেকেলেতে খেলা ওই টি-টোয়েন্টি ম্যাচটিই লঙ্কান কিংবদন্তির শেষ ম্যাচ হয়ে রইল।
২০০৪ সালের জুলাইয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট দিয়ে ক্রিকেটে অভিষেক হয় মালিঙ্গার। ওই মাসেই হয়ে যায় ওয়ানডে অভিষেক। তবে, টি-টোয়েন্টি অভিষেক হতে আরও দুই বছর অপেক্ষা করতে হয়। ২০০৬ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে পা রাখেন তিনি।
এ সময়ে ৮৩টি ম্যাচ খেলে বল হাতে ২০.৭৯ গড়ে ১০৭টি উইকেট নিয়েছেন মালিঙ্গা। এই ফরম্যাটে সেরা বোলিং ফিগার ৬ রানে ৫ উইকেট। শ্রীলঙ্কার তো বটেই, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতেও এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি তিনি। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির ইতিহাসে দুই বার হ্যাটট্রিক করার অনন্য কীর্তি আছে তাঁর। এ ছাড়া চার বলে ৪ উইকেট নেওয়া দুই বোলারের একজন তিনি।
শ্রীলঙ্কার ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপজয়ী দলের অধিনায়কও ছিলেন তিনি। অবশেষে এই ফরম্যাটের ইতি টানলেন তিনি। টি-টোয়েন্টির আগে ২০১১ সালে টেস্ট ও ২০১৯ সালে ওয়ানডে থেকে বিদায় নেন মালিঙ্গা।
ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটেও জনপ্রিয় নাম মালিঙ্গা। আইপিএলে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স, সিপিএলে জ্যামাইকা তালাওয়াস ও গায়ানা অ্যামাজন ওয়ারিয়র্স, বিপিএলে খুলনা টাইটান্স ও রংপুর রাইডার্স এবং বিগ ব্যাশে মেলবোর্ন স্টার্সের হয়ে খেলেছেন তিনি।
বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট আইপিএলের সব আসর মিলিয়ে সফলতম বোলার মালিঙ্গা। আইপিএলে ১৭০ উইকেট নিয়েছেন তিনি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে মুম্বাইয়ের হয়ে রেকর্ড ১৯৫ উইকেট লঙ্কান এই পেসারের। ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে ২৯৫ ম্যাচে সোট ৩৯০ উইকেট নিয়েছেন লঙ্কান কিংবদন্তি।
বিদায় বেলায় নিজের ইউটিউব চ্যানেলের মালিঙ্গা বলেন, ‘আজ আমার জন্য খুব বিশেষ একটি দিন। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারজুড়ে যাঁরা আমাকে সমর্থন করে গেছেন, তাঁদের প্রত্যেককে আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই। আজ আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি—আমার টি-টোয়েন্টি বোলিংয়ের জুতা জোড়াকে পুরোপুরি বিশ্রাম দেওয়ার। ধন্যবাদ জানাতে চাই শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ড, মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স, মেলবোর্ন স্টার্স, কেন্ট ক্রিকেট ক্লাব, রংপুর রাইডার্স, গায়ানা ওয়ারিয়র্স, মারাঠা অ্যারাবিয়ান্স ও মন্ট্রিল টাইগার্স। এখন আমার অভিজ্ঞতা তরুণ ক্রিকেটারদের সঙ্গে শেয়ার করতে চাই, যারা ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট ও জাতীয় দলের হয়ে খেলতে চায়।’
Comments are closed.