
ধান মাড়ায় করছেন চাপাইনবাবগঞ্জ এলাকার শ্রমিক খাইরুলসহ ১০ জনের মত, তারা বলেন এটা কেমন কথা জি, ঘন্টায় ঘন্টায় কারেন্ট টানছে, হামাদের এলাকায় এরকম করলে অফিস পুড়াইয়া দিত। হাপনাদের এলাকার মানুস ভালো, হারে দিকে হলে মহিলারাও অপিস ঘিরে ফেলত, দেখেননি শিবগঞ্জে কি করেছিল। হামরা শ্রমিক, প্রখর রোদে কাজ করে রাতে একটু শান্তিতে ঘুমাব সেটাও হইছে না জি, রাত, ৯ টায় ১০ টায় ১১ টায় ১২ টায় ও ১ টা ২ টা এমনকি ৩ টা সাড়ে তিনটাও বিদ্যুৎ টানছে। হামরা শুনেছি এউপজেলাকে শতভাগ বিদ্যুতায়ন করা হয়ে। এখন অবছ্য শতভাগ লোডশেডিং উপজেলা হইয়াছে।
শুক্রবার জুমার নামের সময় কয়েকবার বিদ্যুৎ টানা হয়। বিকেল তিন টার দিকে গোল্লাপাড়ায় ডাক্তার খানায় ওষুধ নিতে গিয়ে দেখা যায় কয়েকজন রোগী ছোট শিশুদের নিয়ে হাতপাখা দিয়ে বাতাস করছেন, ডাক্তার আসেনি, মোবাইল করে বলা হয় দোকানে আসেন রোগী অপেক্ষা করছে, না হলে ডাক্তার আসিবার আগে রোগী মারা যাবে। তিনি বলেন বিদ্যুতের যে অবস্থা দোকানে যাওয়ার ইচ্ছে নাই, কিন্তু ফোনের পর ফোন যেতেই হবে।
নেসকো তানোর পিডিবির আবাসিক প্রকৌশলী কিবরিয়া জানান, আমাদের গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার। তিন থেকে সাড়ে তিন মেগওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা। কিন্তু কোন দিন ১ আবার কোন দিন দেড় মেগওয়াটও বিদ্যুৎ মিলছে না। এটা শুধু তানোরের সমস্যা না সারা দেশের। তারপরও আমাদের গ্রাহকরা অন্য এলাকার তুলনায় ভালো বিদ্যুৎ পাচ্ছেন। আবার বৃষ্টি নাই প্রচন্ড খরতাপ, বৃষ্টি হলেই উৎপাদন বাড়বে। তবে অল্প সময়ের মধ্যে এঅবস্থা কেটে যাবে।
সার ব্যবসায়ী মোহাম্মাদ আলী বাবু বলেন, দুপুরের আগে রাজশাহীতে কাজ ছিল গিয়েছিলাম। পিচঢালা রাস্তায় যাওয়ার সময় মনে হচ্ছে রাস্তা দিয়ে আগুনের ফুলকি বের হচ্ছে, গাছের ছায়া পেলে দাড়িয়ে যেতে হচ্ছে। ১৯৭৩-৭৪ সালের দিকে এমন তাপপ্রবাহ হয়েছিল। তার পর এত তাপপ্রবাহ ও গরম দেখিনি। ফ্যানের বাতাসেও কোন কাজ হচ্ছে না। তিনি আরো জানান বিগত ২০১৫ সালে হজ্বে গিয়ে ৫৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা দেখেছি। কিন্তু গরম ও শরীর ঘামে কম।
পল্লী বিদ্যুৎ তানোর জোনের ডিজিএম জহুরুল হক জানান, চাহিদা মত বিদ্যুৎ পাচ্ছি। আমাদের গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ৫২ হাজার। বিদ্যুৎ চাহিদা ১৭-১৮ মেগওয়াট। অর্ধেকের কম মিলছে, আবার কখনো বেশি পাওয়া যাচ্ছে। তবে তালন্দ ইউপির দেবিপুর স্ট্যাশন সংলগ্ন কয়েক গ্রামে লোডশেডিং কম হলেও অন্য এলাকায় দিন রাতে ৮-১০ ঘন্টাও মিলছে না।
বিদ্যুৎ বিভাগের কিছু কর্মকর্তারা জানান, প্রচুর বিদ্যুৎ গিলছে অবৈধ শতশত বানিজ্যিক মটর ও চার্জার অটো ভ্যান। প্রায় বাড়িতেই রয়েছে মটর ও চার্জার ভ্যান যা গ্রাহকের বিদ্যুৎ গিলছে।
সিনিয়র সাংবাদিক সাইদ সাজু জানান, জুম্মার নামাজের সময় কয়েকবার বিদ্যুৎ টানা হয়েছে। আমার মনে হয় বিদ্যুৎ বিভাগে সরকার বিরোধী লোকজন আছে। তারা সরকার ও এমপিকে সাধারন মানুষের মাঝে বিতর্কিত করতে এমন কাজ করছেন বলে আমার ধারনা।