মনিরুজ্জামান মনি, তানোর: রাজশাহীর তানোরে টানা তীব্র তাপদাহের পর স্বস্তির বৃষ্টির দেখা মিলেছে। তবে হালকা বৃষ্টিতেই একেবারে তাপপ্রবাহ নেই। বরং মৃদু হালকা ঠান্ডা বাতাস বইছে। এতে করে জনজীবনে স্বস্তি ফিরে এসেছে। যদিও আকাশে প্রচুর মেঘ ও বজ্রপাত হচ্ছিল।
সোমবার সন্ধ্যা থেকে অল্প সময় টিপির টিপির বৃষ্টি হয়েছ, হালকা বাতাসের গতি ছিল। সোমবার সকাল থেকেই তাপপ্রবাহ ও প্রখর রোদ বইছিল। এর আগে ঈদের দিন রবিবার ছিলনা তেমন তাপদাহ। অবশ্য ক্ষয়ক্ষতির কোন খবর পাওয়া যায়নি। আর এসামন্য বৃষ্টি আমের নিয়ামত বলে মনে করা চাষীরা। কারন রোদের প্রখরে আম ফেটে ঝরে পড়ছে। বৃষ্টি যেন আম চাষীদের মলিন মুখ উজ্জল করে ফেলেছে।
জানা গেছে, তিন সপ্তাহ ধরে প্রচন্ড তাপমাত্রা বয়ে যাচ্ছিল উপজেলা জুড়ে। এমনকি ৪৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা উঠেছিল। জনসাধারন ঘর বন্ধি হয়ে পড়েছিল। বৃষ্টির জন্য রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় এসতেজকার নামাজ আদায় করার খবরও পাওয়া যায়। উপজেলাটি বরেন্দ্র ও খরা প্রবন। কঠোর তাপমাত্রার কারনে জনজীবন চরম অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিল যেমন, তেমনি ভাবে গবাদি পশুপাখিও নিজ বাসা বন্ধি ছিল। বিশেষ করে সকাল ১০ টার আগেই ঘরে ঢুকে যেত শ্রমিকরা। পিচঢালা রাস্তায় টিকতে পারত না। এছাড়াও রোজা অবস্থায় গৃহিনীরা রান্না ঘরে টিকতে পারেনি। ঘরের সিলিং ও টেবিল ফ্যান শরীরের ঘাম মুক্ত করতে পারেনি। তীব্র খরতাপের কারনে পাকা ধান পর্যন্ত কাটেনি।
মৎসজীবি বিসু, আজিজুর বলেন, রাতে বিলে জাল ফেলা হলে সকালে জাল তুলে মরা মাছ পাওয়া যেত। প্রচন্ড গরমে পানি গ্যাস হয়ে পড়েছিল। সকাল ১০টা থেকে মাগরিবের আজান পর্যন্ত বিলের পানিতে যাওয়া যেত না। ব্যবসাও হত না। চরম সমস্যায় পরিবার নিয়ে দিন কাটাতে হয়েছে। কিন্ত সোমবারের বৃষ্টি ও মৃদু হালকা ঠান্ডা বাতাস প্রান জুড়িয়ে ফেলেছে।
আম চাষী শফিকুল বলেন, যেভাবে আম ঝরা শুরু হয়েছিল আর পাঁচ সাত দিন তাপ থাকলে সব ঝরে যেত। মারাত্মক দু:শ্চিন্তায় পড়েছিল আম চাষিরা। প্রখর রোদে গাছ থেকে অর্ধেক আবার কোন গাছে তিন ভাগের এক ভাগ ঝরে গেছে।
অবশ্য বিলপাড়ের বোরো চাষীরা বলেন প্রচুর ঝড় বৃষ্টি হলে ধান কাটা তোলা র জন্য শ্রমিকের কদর বেড়ে যেত।
উপজেলা কৃষি অফিসার সাইফুল্লাহ আহম্মেদ বলেন, যে পরিমান বৃষ্টি হয়েছে তা আমের জন্য মারাত্মক উপকার। আম ঝরে যাওয়ার তেমন শংকা নেই। এবারে সোয়া ৪ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে।