পুঠিয়া (রাজশাহী) প্রতিনিধি: চলছে আশ্বিন মাস, দিনভর হচ্ছে বৃষ্টি। কখনো ভারী বর্ষণ, কখনো গুঁড়ি গুঁড়ি। থেমে থেমে সারাদিন বৃষ্টি চলছে। তার দরুন দিনমজুর ও খেটে খাওয়া হতদরিদ্র মানুষের কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ।
কারো ছেলে-মেয়ের লেখাপড়ার খরচ, কারো পরিবারের ভরণ পোষণের খরচ, কারো আবার বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা থেকে নেওয়া ঋণের কিস্তির টাকার চিন্তায় কাটছে দিন। সীমাহীন দুর্ভোগে দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষেরা। ভারী হচ্ছে তাদের চিন্তার বোঝা।
সরেজমিনে উপজেলার, পুঠিয়া বাজার, ঝলমলিয়া বাজার, পুঠিয়া রাজবাড়ী বাজার, বানেশ্বরসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন শ্রেনি পেশার মানুষ ছুটে চলেছেন তাদের নিজ কর্মস্থলে। এক শ্রেণির খেটে খাওয়া মানুষ বৃষ্টির মধ্যেই চালিয়ে যাচ্ছেন নিজের কর্ম। বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে বালু ভর্তি ডালি মাথায় নিয়ে চালাচ্ছেন কাজ করছেন শ্রমিকেরা।
এমন এক শ্রমিকের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, বাঁচতে হলে খেতে হবে, যদি কাজ না করি তাহলে কে খেতে দিবে। এই বৃষ্টির কথা ভাবলে আমাদের চলবে না তাই বৃষ্টি ভিজে কাজ করছি।
অপরদিকে কৃষাণের কাজ থেমে থাকলেও থেমে নেই ভ্যানচালকের ভ্যান চালানো। এমনি এক ভ্যান চালক রহিস উদ্দিন।
তিনি বলেন, ‘মাথায় কিস্তির চাপ, তাই ঘরে না থেকে টাকা আয় করতে বেরিয়ে পড়লাম। তবে কিস্তির টাকা জোগাড় করা মনে হয় সম্ভব হবে না।’
অপর একজন কলার দোকানি জেকের মোল্লা বলেন, ‘বৃষ্টির দিনে বেচা-কেনা খুবই কম। ছেলেডার প্রাইভেট খরচের টাকা জোগাড় করতেই কলা বিক্রি করতে এসেছি তবে পুরো কলা মনে হয় আজ বিক্রি হবে না।’ এদিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজ সারতে অনেকেই ছাতা মাথায় দিয়ে ছুটে যাচ্ছেন গন্তব্যের দিকে। বৃষ্টি ঘন দিনে চায়ের দোকানের আড্ডা চলছে সমানে।
আসন্ন রাজনীতি নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা চলছে বাজিমাত কথা।সঙ্গে সমানে ফুকাচ্ছেন চা ও বিড়ি।
চায়ের দোকানে গল্পে মজে থাকা কয়েকজন লোকের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, সারাদিন বৃষ্টি হচ্ছে, বাড়ি থেকে আর কি করব, তাই চলে আসলাম চায়ের দোকানে। বৃষ্টিতে বাড়ি থাকতে ভালো লাগে না দোকানে এসে লোকের সঙ্গে কথা বললে সময় কেটে যায় তাই চায়ের দোকানে বসেই গল্প গুজব করছি।
এদিকে অতি বৃষ্টির কারণে কাঁচা বাজার ও মাছ বাজারে বেঁধে গেছে কাঁদা-পানি। কাঁদা-পানি পাড়ি দিয়েই কেনাবেচা করছেন ক্রেতা বিক্রেতারা। একদিকে বৃষ্টি অপরদিকে সবজির উচ্চ মূল্য এই দুইয়ের আঘাতে হতদরিদ্র মানুষের দিন কাটছে উভয় সংকটে এ যেন মড়ার উপরে খাড়ার ঘাঁ।