মশিউর রহমান, দুর্গাপুর প্রতিনিধি: রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার কাঁঠালবাড়িয়া গ্রামের নুরুন্নবী ওরফে আইয়ুব নবী ওরফে নবী হত্যা মামলায় এক নারীসহ দুজনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার(১৩ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টায় রাজশাহীর জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আকবর আলী শেখ এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালত আসামিদের দুজনকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করেছেন। দণ্ডপ্রাপ্ত দুজন হলেন- দুর্গাপুর উপজেলার কাঁঠালবাড়িয়া গ্রামের মো. দেরাজ মিস্ত্রির স্ত্রী ফুলজান বিবি (৪০) এবং একই গ্রামের মৃত মইজুদ্দিনের ছেলে মফিজ উদ্দিন (৪৫)।
এ মামলায় দেরাজ মিস্ত্রিও আসামি ছিলেন। দেরাজের বিরুদ্ধে নবীকে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাঁকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন। আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আসাদুজ্জামান মিঠু জানান, ফুলজান বিবি একইসঙ্গে মফিজ উদ্দিন এবং নবীর সঙ্গে পরকীয়া প্রেম করতেন। বিষয়টি জানতে পেরে মফিজ ক্ষুব্ধ হন।
তখন মফিজের মন রক্ষায় নবীকে খুনের পরিকল্পনা করেন ফুলজান। পরে ২০১৩ সালের ১৫ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টার দিকে ফুলজান দেখা করার কথা বলে নবীকে তাঁর বাড়ির পেছনে মুরগির খামারে ডাকেন। সেখানে হাসুয়ার কোপে মফিজ নবীর শরীর থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে দেন। এরপর দুজনে মিলে বস্তায় লাশ ভরেন। মফিজ লাশ ফেলে আসেন বিলে। মাথা পুঁতে রাখা হয় আরো এক কিলোমিটার দূরে।
পরদিন সকালে স্থানীয়রা লাশ দেখতে পান। তখন লাশের কাছ থেকে ফোটা ফোটা রক্ত দেখা যায় ফুলজানের বাড়ি পর্যন্ত। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে হাসেম আলী বাদী হয়ে তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এরপর পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তার করে। ফুলজান ও মফিজ হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দী দেন।
তাদের দেখানো স্থান থেকে মাথাটিও উদ্ধার করা হয়। আইনজীবী আসাদুজ্জামান মিঠু আরও জানান, আদালত ২৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে রায়ে তাঁদের মৃত্যুদণ্ড দিলেন।
রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর তাঁদের রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
Comments are closed.