ধারাবাহিক পর্ব নিয়মে না থাকলেও সরকারী সকল সুবিধা ভোগ করে পুঠিয়ায় ইউএইচএন্ডএফপিও’র ড্রাইভার বলে কথা

0 ৪৪২

পুঠিয়া (রাজশাহী) প্রতিনিধি: রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচ এন্ড এফপিও’র) আউট সোর্সসিং ড্রাইভার বলে কথা। সরকারী সকল সুুবিধার পাশাপাশি ইউএইচ এন্ড এফপিও সহযোগীতা অনিয়ম দূনীতির আখড়া তৈরি করেছে। যা দেখার যেন কেউ নেই। এ নিয়ে হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ব্যপক সমলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

 

ইতিপূর্বে এই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মানববন্ধন সহ বিভিন্ন টেলিভিশনের এবং পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর ও উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ জানার পরও ব্যবস্থা না নেওয়ায় বর্তমানে তিনি দাপটের সাথে অনিয়ম ও দূর্নীতি করে চলেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সরকারী নিয়ম অনুযায়ী কর্মরত এলাকায় থেকে চাকুরীর নিয়ম থাকলেও সেই নিয়মকে তোয়াক্কা না করে তিনি সরকারী গাড়ী ব্যবহার করে রাজশাহী শহর থেকে যাওয়া আসা করেন।

 

আবাসিক মেডিকেল অফিসার আরএমও কে সরকারী নিয়ম অনুযায়ী ২৪ ঘন্টা হাসপাতাল বা তার এলাকায় থেকে কাজ করার কথা থাকলেও সদ্য যোগদান কৃত আরএমও ডাঃ আব্দুর রাজ্জাক সেই নিয়মকে তোয়াক্কা না করে রাজশাহী থেকে ইচ্ছে মত সময়ে আসেন এবং দুপুর পর চলে যান।
জানা গেছে, রাজশাহী জেলার দুর্গাপুর উপজেলার আরমান আলীর বাড়ী। তিনি আউট সোর্সসিং কাজ করতেন। পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ইউএইচ এন্ড এফপিও’র কর্ম এলাকায় ব্যবহারের জন্য একটি গাড়ী বরাদ্দ হয়।

 

সে সময় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ নাজমা নাহার তাকে সেই গাড়ী চালানোর দায়িত্ব দেন আরমান আলীকে। আরমান ইউএইচ এন্ড এফপিও’র ড্রাইভার হওয়ার সুবাদে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মহিলা ভবনে তার স্ত্রীকে নিয়ে থাকেন। শুধু তাই নয় হাসপাতালের পরিসংখান বিভাগের আমিনুল ইসলামের নামে বরাদ্দকৃত সরকারী মোটরসাইকেল ইউএইচ এন্ড এফপিও’র নির্দেশে আরমান ব্যবহার করে।

 

আরমান সেই সরকারী মোটরসাইকেল নিয়ে প্রতিদিন সকালে রাজশাহীতে গিয়ে ইউএইচ এন্ড এফপিও’র বাসায় রেখে গাড়ীতে করে ম্যাডামকে নিয়ে পুঠিয়া হাসপাতালে আসেন এবং দুপুরের পর আবার রাজশাহীতে রেখে সেই মটরসাইকেল নিয়ে আসেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া আরমান ও তার স্ত্রী প্রায় প্রতিদিন রোগী হিসেবে ফ্লেরের রোগী হিসাবে ভর্র্তি থাকেন। এতে হাসপাতালের সরকারী খাবার ও ঔষুধ পত্র তুলে নেন।

 

বুধবার দুপুরে সরকারী খাবার দেওয়া হয় ৪৮ জনকে। কাগজে কলমে হাসপাতালে রোগী ভর্তি আছে পুরুষ, মহিলা, শিশু ও মা মোট ৩৮ জন। এদের মধ্যে ৯ জন রোগী সাত্তার, রিনা, মাসুদ, শাকিলা, মাহাবুব, রাসেল, আরমান, সুমন, আশরাফুল ও সোনালী ভর্তি রয়েছে। ওয়ার্ডে গিয়ে জানা গেছে, রোগীদের মধ্যে পুরুষ বেডে রয়েছেন ৯ জন রোগী, মহিলা বেডে রয়েছে ৮ জন রোগী, মা রোগী রয়েছেন ২ জন, শিশু বিভাগে রয়েছে ১৭ জন।

 

কিন্তু ফ্লেরের ৯ জন রোগীর কোন হোদিস পাওয়া যায়নি। এদের মধ্যে ইউএইচ এন্ড এফপিও’র ড্রাইভার আরমান আলীর নামও রয়েছে।
হাসপাতালের খাবার বিতরণ কারী এক মহিলা জানান, আজ ৪৮ জন রোগীকে খবার দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে ড্রাইভার আরমান আলীও সরকারী খাবার খেয়েছে।

 

পরিসংখ্যান বিভাগের আমিনুল ইসলাম জানান, আমাদের বিভাগের সরকারী বরাদ্দকৃত মোটরসাইকেল ইউএইচ এন্ড এফপিও’র ড্রাইভার আরমান ব্যবহার করে।

 

আউট সোর্সসিং ড্রাইভার আরমান আলীর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি ৩ বছর আগে আউট সোর্সসিং চাকুরীতে যোগ দিয়। প্রথমে আমি রোগীতে টিকিট কাউন্টারে কাজ শুরু করি। তারপর সরকারী গাড়ী আসলে আমি ড্রাইভার হিসাবে কাজ শুরু করি। স্যার আমাকে সরকারী বাসভবনে থাকার অনুমতি দিয়েছে তার পরিবার সহ থাকি। লকডাউনের মধ্যে স্যারকে রাজশাহীতে রাখতে যাতযাত করতে হয় তাই মোটরসাইকেল দিয়েছিলো সেটা ব্যবহার করতাম। আমার বাড়ী দুর্গাপুর আমার স্ত্রী যখন না থাকে তখন মেডিকেলে ভর্তি থেকে খাবারটা খাই।

 

পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডাঃ আব্দুর রাজ্জাক জানান, আমি রাজশাহীতে বাসায় আছি। আর একজন আউট সোর্সসিং ড্রাইভার আবাসিক ভবন, সরকারী মোটরসাইকেল ব্যবহারের নিয়ম আছে কিনা আমার জানা নাই। আগামীকাল অফিসে এসে আপনার সাথে কথা বলবো।

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.