পুঠিয়া (রাজশাহী) প্রতিনিধি: চিকিৎসক না থাকায় ফার্মাসিস্ট দিয়ে চলছে রাজশাহীর পুঠিয়ার ভালুকগাছী উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র। রোগ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার যন্ত্রপাতি থাকলেও পুঠিয়া উপজেলার ভালুকগাছী ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসক না থাকায় চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। শুধু তাই নয়, বঙ্গবন্ধুর এবং প্রধানমন্ত্রীর ছবি ছিড়া এবং নোড়া অবস্থায় ফার্মাসিষ্টের পেছনে নিয়ে অযতেœ অবহেলায় রাখা হয়েছে।
নিয়মিত চিকিৎসক না থাকায় উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটির রোগ নির্ণয়ের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি অচল হয়ে পড়ছে। আর ইউনিয়নবাসীও স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। ফলে ইউনিয়নের কারো চিকিৎসা সেবার প্রয়োজন হলে যেতে হচ্ছে পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
সরেজমিন ভালুকগাছী উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি ঘুরে দেখা গেছে, ভবনটি দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ। আশপাশের পরিবেশও নোংরা। কেন্দ্রটির মতোই এর সাইনবোর্ডটিও ধুঁকছে। দূর থেকে দেখলে মনে হয় এটি যেন পরিত্যক্ত।
অথচ ভালুকগাছী ইউনিয়নের জনগণের ভরসার স্থল ছিল কেন্দ্রটি। চিকিৎসক না থাকায় রোগীরাও এখন এখানে খুব কম আসে। সেখান থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রায় ১০ কিলোমিটার দুরে। তারপরও রাস্তা খারাপ। এই কারণে অনেক রোগীরা সঠিক স্বাস্থ্য সেবা না পেয়ে হাতুরে ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হচ্ছে।
চিকিৎসা নিতে আসা এক রোগী জানান, এখানে চিকিৎসক নেই। আর ছোটখাটো সমস্যা নিয়ে চিকিৎসা নিতে গেলেও ফার্মাসিস্ট বেলাল হোসেন, প্যারাসিটামল, গ্যাস্ট্রিক, কৃমির ওষুধ আর হাতে গোনা দুই একটা ওষুধ দিতে পারেন। আবার ওষুধ যা দেওয়া হয় তার পরিমানও সীমিত। এছাড়া এই স্বাস্থ্য কেন্দ্র খোলা হয় ১০ টার পরে এবং ১২ টা বাজলেই বন্ধ করে দেওয়া হয়।
বর্তমানে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রেটির দায়িত্বে আছেন ফার্মাসিস্ট বেলাল হোসেন। তাদের ভাষ্য মতে, চিকিৎসক এখানে প্রতিদিন আসেন। হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর আছে। আর চিকিৎসক থাকার সময়ে আরও বেশি রোগী আসত। এখানে মেডিকেল অফিসার ডাঃ জান্নাতুন ফেরদৌস, উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার আবু বকর সিদ্দিক এবং আমি নিজে এখানে দায়িত্বরত আছি।
ভালুকগাছী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাকবীর হাসান বলেন, পুঠিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে উপজেলায় সভায় বিষয়টি অবহিত করেছি। কিন্তু এই স্বাস্থ্য কেন্দ্র্রে বঙ্গবন্ধুর ছবি এবং প্রধানমন্ত্রীর ছবি যথাযথ স্থানে এবং ভাল ছবি না টাঙ্গানোর ঘটনা দুঃখ জনক। যত দ্রুত সম্ভব এই এলাকার স্বাস্থ্য সেবার জন্য ডাক্তারকে পাঠানোর প্রয়োজন।
ডাঃ জান্নাতুন ফেরদৌস জানান, করোনা কালীন সময়ে আমাদের নোটিশ করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এসেছে। সোমবার মিটিং-এ সিদ্ধান্ত হয়েছে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে দায়িত্ব পালনের জন্য। তবে আমি এখনো চিঠি পাইনি। পেলেই আমি সেখানে গিয়ে দায়িত্ব পালন করবো।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নাজমা আকতার জানান, করোনা পরিস্থিতি এবং ডাক্তার সংকটের কারণে সেখানকার ডাঃ জান্নাতুন ফেরদৌস কে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়েছিলো। এখন ডাক্তারের চাহিদা পূর্ণ হয়েগেছে। তাকে সেই উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের দায়িত্বে পাঠানো হবে। সেই অফিসে বঙ্গবন্ধুর ছবি এবং প্রধানমন্ত্রীর ছবি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সেইটা সাইডে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে আমারা উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের নিকট লিখেছি। সেটার অনুমোদন হলেই নতুন ছবি টাঙ্গাবো।