নাগোরনো-কারাবাখ থেকে আর্মেনিয়ায় লাখেরও বেশি শরণার্থী

0 ২১৮
আর্মেনিয়ার দক্ষিণের শহর গোরসের রাস্তায় নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলের শরণার্থীরা। ছবি : এএফপি

গত মাসে বিরোধপূর্ণ নাগোরনো-কারাবাখে বিশেষ অভিযান চালিয়েছিল আজারবাইজান। সেখানে বসবাসরত জাতিগত আর্মেনিয়দের নির্মূলেই এই অভিযান চালানো হয় বলে দাবি করছে আর্মেনিয়া সরকার। তাদের দাবি, এই অভিযানের ফলে অঞ্চলটি পুরোদমে ফাঁকা হয়ে গেছে। খবর আল-জাজিরার।

আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ানের প্রেস সেক্রেটারি নাজেলি বাগদাসারিয়ান শনিবার বলেন, ‘নাগোরনো-কারাবাখ থেকে এ পর্যন্ত এক লাখ ৪১৭ শরণার্থী আর্মেনিয়ায় প্রবশে করেছে। অঞ্চলটিতে আগে এক লাখ ২০ হাজার জাতিগত আর্মেনিয় বাস করতো।’

আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সেক্রেটারি বলেন, ‘গত সপ্তাহ থেকে এ পর্যন্ত হাকারি ব্রিজ পাড়ি দিয়েছে ২১ হাজার ৪৩টি গাড়ি। নাগোরনো-কারাবাখকে আর্মেনিয়ার সঙ্গে সংযুক্তকারী এই ব্রিজে প্রচণ্ড ট্রাফিক জ্যাম দেখা দিয়েছে। অনেকে কয়েকদিন ধরে পাহাড়ি রাস্তাটিতে রয়েছে।’

আর্মেনিয়ার ওই অঞ্চলটিতে অবস্থান করা আল-জাজিরার সাংবাদিক বেনার্ড স্মিথ বলেন, ‘নাগোরনো-কারাবাখ থেকে যে হারে মানুষ আসছে তা সবাই দেখছে। আর্মেনিয় কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে জাতিসংঘ পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে বিস্মিত।’

নাগোরনো-কারাবাখ হলো দক্ষিণ ককেশাস অঞ্চলের পাহাড়ি এলাকা যা কিনা আন্তর্জাতিকভাবে আজারবাইজানের অংশ হিসেবে স্বীকৃত। তবে যুগ যুগ ধরে জাতিগত আর্মেনিয়ানরা এলাকাটিকে নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। এই ছিটমহলটির অধিবাসীদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে আসছে আর্মেনিয়া। পাশাপাশি তাদের সহায়তা করছে রাশিয়া। গত কয়েক বছর ধরে সেখানে শত শত রুশ সৈন্য অবস্থান করে আসছে।

আজারবাইজানের বিশেষ অভিযানের পর থেকে অঞ্চলটির মোট জনসংখ্যার ৮০ শতাংশই সেখান থেকে চলে গেছে। আর এতেই ছিটমহল নিয়ে আজারবাইজানের পক্ষে যাওয়া আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি নিয়ে প্রশ্ন ওঠছে।

আজারবাইজানের হরাদিজ শহরে অবস্থান করা আর-জাজিরার সাংবাদিক ওসামা বিন জাভাইদ বলেন, ‘গোটা নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলটি নীরব হয়ে গেছে। রাস্তা ফাঁকা হয়ে রয়েছে। ক্রেতা নেই ও তার সঙ্গে সঙ্গে দোকানপাটও বন্ধ। বাড়িঘরগুলোও ফাঁকা পড়ে রয়েছে। অঞ্চলটির জনসংখ্যার মাত্র একটি অংশ এই ছিটমহলে রয়ে গেছে। তাদের আশ্বস্ত করা হচ্ছে, এই অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণের পর আজারবাইজানি বাহিনী  দ্বারা তারা নির্যাতিত হবে না।’

এদিকে, আজারবাইজানি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে অঞ্চলটির বিচ্ছিন্নতাবাদী জাতিগত আর্মেনিয় সরকার। গত বৃহস্পতিবার তারা বলেছিল,  ‘তিন দশক ধরে স্বাধীনতার জন্য আমরা লড়ছি। এ জন্য শেষ পর্যন্ত আমরা লড়াই চালিয়ে যাবো ও নিজেদের বিলীন করে দেব।’

Leave A Reply

Your email address will not be published.