নারী অধিকারবিষয়ক ‘ইস্তাম্বুল সনদ’ থেকে বেরিয়ে গেল তুরস্ক

0 ৫১৫

নারী অধিকারবিষয়ক আন্তর্জাতিক এক সনদ থেকে তুরস্ক সরে যাওয়ায় নিন্দা জানিয়েছে ইউরোপের শীর্ষ মানবাধিকার সংস্থা। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

কাউন্সিল অব ইউরোপের সেক্রেটারি জেনারেল মারিয়া বুরিচ বলেছেন, তুরস্কের এই সিদ্ধান্ত দেশটির ভেতর ও বাইরে নারীদের সুরক্ষার পরিপন্থি।

 

ইস্তাম্বুল সনদ নামে পরিচিত ইউরোপীয় এই চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী প্রতিটি দেশের বাধ্যবাধকতা রয়েছে যে, তাদের ‘বৈবাহিক সম্পর্কের মধ্যে ধর্ষণ’ এবং ‘মেয়েদের খৎনা রোধ’ করাসহ নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধে আইন তৈরি করতে হবে।

 

এতে পারিবারিক সহিংসতা রোধ এবং তার বিচারের কথাও আছে।

কিন্তু তুরস্কের রক্ষণশীলরা বলছেন, ইস্তাম্বুল সনদে যে নারী-পুরুষের সাম্যের কথা বলা হয়েছে, তাতে ‘পরিবারকে হেয় করা হয়েছে।’

 

তা ছাড়া সনদে যৌন-অভিরুচির জন্য কারও বিরুদ্ধে বৈষম্য না করার কথা উল্লেখ আছে, যা ‘সমকামিতাকে উৎসাহিত করে’ বলে মনে করেন রক্ষণশীলরা।

 

তুরস্কের পরিবার বিষয়ক মন্ত্রী জেহরা জুমরুট তুরস্কের ইস্তাম্বুল সনদ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কোনো কারণ দেখাননি। তবে বলেছেন, তাঁর দেশের সংবিধানেই নারীর অধিকার সংরক্ষিত রয়েছে।

 

তুরস্কের ইস্তাম্বুল সনদ পরিত্যাগের বিরুদ্ধে শহরটির নারীরা বিক্ষোভ করেছেন।

 

তবে তুরস্কের বিরোধীদল রিপাবলিকান পিপলস পার্টির একজন নেতা গোকচে গোকচেন টুইট করেন, সনদটি পরিত্যাগ করার অর্থ হলো—তুরস্কে ‘নারীদের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক করে রাখা এবং তাদের হত্যার শিকার হতে দেওয়া।’

 

তুরস্কের একটি সংগঠনের হিসাব অনুযায়ী, গত বছর দেশটিতে অন্তত ৩০০ নারী হত্যার শিকার হয়েছে এবং আরও বেশি নারীকে সন্দেহজনক অবস্থায় মৃত পাওয়া গেছে।

 

আঙ্কারায় ২০১৮ সালে সুলে সেত নামে এক তরুণীর ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। আক্রমণকারীরা ওই তরুণীকে একটি বহুতল অফিস ভবনে ধর্ষণের পর জানালা দিয়ে ছুড়ে ফেলে দেয় যাতে তা আত্মহত্যা বলে মনে হয়।

 

তুরস্কের বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান প্রায় দুই দশক ধরে ক্ষমতায় রয়েছেন। প্রেসিডেন্টের সমালোচকেরা তাঁর বিরুদ্ধে দেশটির ধর্মনিরপেক্ষ বৈশিষ্ট্য হ্রাস করা এবং সামাজিক রক্ষণশীলতা প্রসারের অভিযোগ করে থাকেন।

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.