পরবর্তী প্রজন্মের কাছে সুন্দর বাংলাদেশ রেখে যাওয়াই মূল উদ্দেশ্য- গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী

0 ২১৬
স্টাফ রিপোর্টার: গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, এমপি বলেছেন, ৩০ লক্ষ শহিদ আর দুই লক্ষ মা-বোনের নির্যাতনের কথা স্মরণ করলে কেউ বিপথগামী হবে না। অর্থ উপার্জন মুখ্য নয়, পরবর্তী প্রজন্মের কাছে একটি সুন্দর বাংলাদেশ রেখে যাওয়াই আমাদের মূল উদ্দেশ্যÑ এই উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে প্রত্যেকটি কাজ করতে হবে। রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাজশাহী সার্কিট হাউসে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীন দপ্তর/সংস্থায় কর্মরত রাজশাহী বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
কর্মকর্তাদের উদ্দেশে উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেন, আমি কর্তৃত্ব করতে আসিনি, আপনাদের সতীর্থ হয়ে কাজ করতে এসেছি, আপনাদের কাজ দেখতে এসেছি। সুদীর্ঘ পরিকল্পনা মাফিক টেকসই উন্নয়নের কথা মাথায় রেখে কাজ করতে হবে। আমাদের উন্নয়নকাজ বর্তমান সময়কে ভিত্তি করে হলেও তা যেন ভবিষ্যত প্রজন্ম ব্যবহার করতে পারে, সেজন্য টেকসই উন্নয়নের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
বিভাগীয় পর্যায়ে বিভিন্ন দপ্তর-সংস্থার কাজে সমন্বয়ের উপর গুরুত্বারোপ করে গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, সরকারের সকল দপ্তর-সংস্থার কাজে যথাযথ সমন্বয় থাকলে দীর্ঘসূত্রিতা হ্রাস পাবে এবং উন্নয়ন পরিকল্পিত হবে। রাজশাহীতে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীন দপ্তর-সংস্থার কার্যক্রমের সঙ্গে সিটি কর্পোরেশনসহ সকল প্রতিষ্ঠানের সমন্বয় সাধনের জন্য তিনি সংস্থার প্রধানদের নির্দেশনা দেন। সংশ্লিষ্ট বিধি-বিধান ও আইন মেনে কাজ করলে সকল কাজে পাশে থাকার এবং সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।
নিজ দপ্তরের কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার চেষ্টা অব্যাহত রাখার তাগিদ দিয়ে কর্মকর্তাদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, ‘মানুষ মানুষের জন্য’Ñ স্লোগানকে সামনে রেখে আমরা মানুষের জন্য কাজ করছি। যেভাবে কাজ করলে জনকল্যাণ হবে, সরকারের অর্থ অপচয় হবে না সেদিকে খেয়াল রাখতে কর্মকর্তাদের পরামর্শ দেন তিনি।
সঠিক সময়ে সকল উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শেষ করতে হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আবাসন ও গৃহায়ন উন্নয়ন প্রকল্পগুলো কাজের জন্য ঠিকাদারের উপর অনেকাংশে নির্ভর করতে হয়। এক্ষেত্রে তিনি ঠিকাদারের সঙ্গে বন্ধুত্ব না করে কাজের সঙ্গে বন্ধুত্ব করার কথা বলেন। সকলকে তিনি বিধি-বিধান ও আইন মোতাবেক নিজের দায়িত্ব পালনে সজাগ থাকতে বলেন।
সরকারের সাফল্য ও উন্নয়ন তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি। দারিদ্র্য জনগোষ্ঠী ৪০% থেকে নেমে বর্তমানে ২১-২২% এ নেমে এসেছে। দারিদ্র্য সীমার নিচে ৬% এরও কম মানুষ বাস করছে। ধীরে ধীরে আমরা উন্নত দেশের কাতারে যাচ্ছি। আমরা স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশে বাস করছি বলে আজ দেশে সবার জন্য সব দুয়ার খুলে গেছে। এখন আর কেউ আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবে না।
গণপূর্তমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু সরকারের সাফল্য তুলে ধরে বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মাত্র সাড়ে তিন বছর সময় পেয়েছেন। অনেকেই বলেন সাড়ে তিন বছরে তিনি কী করেছেন? আজকের প্রজন্মতো জানেই না তিনি আমাদের জন্য কী কী করে গিয়েছেন। শেখ মুজিব সাড়ে তিন বছরে একটি আধুনিক রাষ্ট্রের ভিত্তি রচনা করে গিয়েছেন। মাত্র তিন বছরের শাসন আমলে প্রায় সকল দেশের স্বীকৃতি অর্জনসহ জাতিসংঘে বাংলাদেশ সদস্য পদ লাভ করেছিল। একটি দরিদ্র রাষ্ট্রকে স্বল্পোন্নত রাষ্ট্রে উন্নীত করেছিলেন ও অবকাঠামোর ব্যাপক উন্নয়ন করেছিলেন। তাঁর সময়ে সাড়ে তিন হাজার ব্রিজ কালভার্ট পুন:নির্মাণ করতে হয়েছে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনার মাধ্যমে মতবিনিময় সভায় অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম তুলে ধরেন। এ সময় মন্ত্রী তাদের কাছে বাস্তবায়নাধীন কাজের অগ্রগতি জানতে চান।

Leave A Reply

Your email address will not be published.