পাইকগাছায় সেপ্টি ট্যাংকির উপর ১০ বছর ভাড়ায় বসবাস; উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মহানুভবতায় ঘর পেতে যাচ্ছে মফিজুল দম্পতি

0 ২০৮

ইমদাদুল হক,পাইকগাছা,খুলনা: খুলনার পাইকগাছায় দীর্ঘ ১০ বছর সেপ্টি ট্যাংকির উপর নির্মিত ঘরে ভাড়ায় বসবাস করে আসা মফিজুল দম্পতি অবশেষে পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকীর মহানুভবতায় ঘর পেতে যাচ্ছেন। মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর দেওয়ার জন্য তাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন এ কর্মকর্তা।

এদিকে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এলাকার বিশিষ্টজন, সচেতন মহল ও সুধীজনরা মফিজুল দম্পতির জন্য উপজেলা ইউএনও মহোদয় মহানুভবতার পরিচয় দেওয়ায় তাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। প্রসঙ্গত, পাইকগাছা উপজেলার নাছিরপুর গ্রামের তুরফান মোড়লের পুত্র মফিজুল মোড়ল পরিবার নিয়ে দীর্ঘ ১০টি বছর একই গ্রামের জৈনক হাফিজুরের সেপ্টি ট্যাংকির উপর নির্মিত ঘরটি ৫শত টাকায় ভাড়া নিয়ে সেখানে বসবাস করে আসছিল।

কিন্ত মৌসুম ঘেরা বর্ষণে সেপ্টি ট্যাংটি পানিতে ভরে গিয়ে প্রচন্ড দূর্গন্ধ বের হওয়ায় ঘর ছেড়ে রাস্তায় নামার উপক্রম হয়েছে মফিজুলের। স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বারের চোখ যেন তাকে আড়াল করে লুকোচুরি খেলছে। সাহায্যের কোন বালাই নেই তার সংসারে।

এব্যাপারে সরজমিনে গেলে মফিজুল জানান, আমরা দু’ভাই বোন। পিতার কোন জায়গা জমি ও ঘর নাই। কর্মাক্ষম, দরিদ্র অসুস্থ পিতা কোন দিন ঘরের চালের নীচে মাথা দেয়নি। অর্ধাহারে, অনাহারে আমার মা হাচিনা বেগম এ বাড়ী সে বাড়ীর বারান্দায় কাটিয়েছে। সহ্য করতে হয়েছে আত্মীয় পরিজন ও প্রতিবেশীদের লাঞ্চনা-গঞ্জনা। তবু সে হাল ছাড়েনি। আমার পিতা মাঝে মধ্যে পাগল বেশে কোথায় চলে যায় তা কেউ জানে না। ভিন্ন উপজেলা তালা থানার খলিলনগর ইউনিয়নের মাছিয়াড়া গ্রামে স্থায়ী ঠিকানা হলেও আমাদের জন্মস্থান নাছিরপুর নানীর বাড়ী।

সে অবধি পরের বাসায় কাজ করে খাওয়া বৃদ্ধা নানীর কাছে বড় হয়ে সেখান থেকে প্রায় ১০টি বছর যাবত এই সেপ্টি ট্যাংটির উপর নির্মিত ঘরে স্ত্রী সন্তান নিয়ে বসবাস করছি। চার মেম্বারশীপ পরিবারের মধ্যে আমি একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি। সারাদিন মানুষের কামলা দিয়ে তিন থেকে তিনশত পঞ্চাশ টাকা উপার্জন করি।

যা দিয়ে আমাদের কোন রকমে জীবনযাপন চলছে। আবার এই সামান্য উপার্জিত অর্থ দিয়ে জায়গার ভাড়া দিতে হিমসীম খেতে হচ্ছে। এদিকে বোনটাকে স্কুলে পাঠাতে পারিনা। আস্তে আস্তে বিবাহ যোগ্য হয়ে উঠছে। কিভাবে বিয়ে দেবো, কোথায় থাকতে দেবো তাদের, আমাদের তো কোন ঠিকানা নাই, সার্বক্ষণিক সে চিন্তা আমাকে তাড়া করে ফিরছে।

আবেগঘন বক্তব্যের পরিশেষে একটু মাথা গোঁজার ঠাই পাবার জন্য পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকীর হস্থক্ষেপ কামনা করেন মফিজুল মোড়ল।

এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দীকী বলেন, মফিজুল দম্পতিকে ইতোমধ্যে ঘর বরাদ্ধ দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। শনিবার তাদেরকে আমার দপ্তরে আসতে বলা হয়েছে।

ওরা আসলে ওদের সকল সমস্যার কথা শুনে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.