কাঠের আসবাবপত্রের বিকল্প হিসেবে এর জনপ্রিয়তা বাড়ছে। আসবাবপত্রের চাহিদা ও স্বপ্ন পুরন করছে এসব বোর্ড। তুলনামুলক দাম কম ও মান ভাল হওয়া এবং ঘুনে ধরা বা পোকা না লাগার কারণে সব শ্রেনীপেশার মানুষের কাছে পছন্দের। এমনকি সহজে নষ্ট হয়না। একটি কাঠের খাট যেখানে ৩০-৩৫ হাজার টাকা সেখানে একটি বোর্ডের খাট ১০-১৫ হাজার টাকায় পাওয়া যায়। দামের দিক দিয়েও অনেক সাশ্রয়ি। এছাড়া খাট ও আলমিরা ১০-১৫ হাজার টাকা, ড্রেসিং টেবিল ৭-৮ হাজার টাকা, ওয়ারড্রোব ও সুকেস ১২-১৪ হাজার টাকা।
সদর উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের গৃহবধু পারভিন আক্তার বলেন- তিন পাল্লার একটা আলমিরা ও একটা ড্রেসিং টেবিল কিনতে খরচ হয়েছে ২৪ হাজার টাকা। যদি কাঠের হতো সেখানে দাম প্রায় তিনগুন হতো। দামের দিক দিয়ে কিছুটা সাশ্রয়ি হয়েছে। সব শ্রেণি পেশার মানুষের কাছে পছন্দের।
বোর্ড দিয়ে তৈরি আসবাবপত্রের কারিগর মিজানুর রহমান মঞ্জু বলেন, আগে আমরা কাঠ দিয়ে আসবাবপত্র তৈরি করতাম। সময় এবং শ্রম দুটোই বেশি লাগতো। গত প্রায় ২০ বছর থেকে বোর্ড দিয়ে আসবাবপত্র তৈরি করা হচ্ছে। এতে সময় ও শ্রম কম লাগছে এবং মজুরিও বেশি পাওয়া যায়। এ কারণে অধিকাংশ কারিগররা এখন ঝুঁকছেন পারটেক্স ও মালয়েশিয়ান বোর্ড দিয়ে তৈরি আসবাবপত্রে। বোর্ডের দাম কমলেও বেড়েছে হার্ডওয়ার (কবজা, নাট-বল্টু ও স্ক্রু) সামগ্রির দাম। এতে লভ্যাংশের পরিমাণ কিছুটা কমেছে।
ফিরোজ এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত¡াধিকারি ফিরোজ হোসেন বলেন- হঠাৎ করেই কমেছে পারটেক্স ও মালয়েশিয়ান বোর্ড এর দাম। প্রকার ভেদে প্রতিটি বোর্ডে দাম কমেছে ২০০-৩৫০ টাকা। ভাল মানের একটি বোর্ডের দাম বর্তমানে দেড় হাজার টাকা। যা আগে ছিল এক হাজার ৮০০ টাকা। বোর্ডের দাম হঠাৎ কমে যাওয়ায় আমার প্রায় ৭ লাখ টাকার মতো লোকসান গুনতে হয়েছে। যাদের ব্যাংক ঋণ আছে তাদের জন্য সমস্যাটা একটু বেশি।
বিসমিল্লাহ ট্রের্ডাসের স্বত্ত¡াধিকারী মাহফুজুল হক বাবু বলেন, ঘুনে ধরা বা পোকা না লাগার কারণে সহজে নষ্ট হয়না। তবে বোর্ডের আসবাবপত্রের জন্য ক্ষতিকর পানি। যদি পানি না পড়ে প্রায় ১০-১২ বছরের অধিক সময় ভাল থাকে। দাম কম ও সৌন্দর্য ভাল হওয়ায় মানুষের কাছে চাহিদা বাড়ছে। স্বল্প লাভে আমরা বিক্রি করতে পারি।
নওগাঁ এটিম মাঠ সংলগ্ন আহমাদ ফার্নিচার এন্ড সোফা হাউজের স্বত্ত¡াধিকারী মিঠুন হোসেন বলেন- জেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় শতাধিক বোর্ড থেকে তৈরি ফার্নিচারের শোরুম রয়েছে। যা থেকে প্রতিদিন প্রায় ১৫ লক্ষাধিক টাকা বেচাকেনা হয়। যেখানে প্রায় চার হাজার মালিক, কারিগর ও কর্মচারির কর্মসংস্থান হয়েছে। তবে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এ ব্যবসা আরো সমৃদ্ধি হবে বলে মনে করছেন তিনি।