সোহানুর রহমান, স্টাফ রিপোর্টার: রোদের তীব্র তাপদাহে যেন পুড়ছে রাজশাহী অঞ্চল। দীর্ঘদিন ধরে বড় ধরনের কোন বৃষ্টিপাত হয়নি এ অঞ্চলে। টানা বৃষ্টিহীনতা আর খরায় পুঠিয়া উপজেলার আম বাগান গুলোতে ব্যাপক হারে ঝরে পড়ছে সদ্য বড় হওয়া আমের গুটি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আমগাছে ব্যাপক মুকুল এসে ছিলো এবছর, কিন্তু বৃষ্টির অভাবে আমের গুটি ঝরে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ চাষি ও বাগান মালিকরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, পুঠিয়া উপজেলায় প্রায় ১ হাজার ৫৪৭ হেক্টর জমিতে ৫ হাজার ৫৫০টি ছোট বড় আম বাগান রয়েছে। গোপালভোগ, হিমসাগর, ফজলি, লখনা, আশ্বিনা, দুধসরসহ প্রায় ১৫ এর অধিক জাতের আম চাষ করা হয়ে থাকে এ অঞ্চলে।
জানা গেছে, পুঠিয়া উপজেলার জিউপাড়া, ভাল্লুকগাছী, শিলমাড়িয়া, বানেশ্বর, বেলপুকুরসহ সকল ইউনিয়নের বাড়ির আশেপাশে রয়েছে আমগাছ ও আম বাগান। এছাড়া উপজেলা জুড়ে আম বাগানে রয়েছে বিভিন্ন উন্নত জাতের আমগাছ। বর্তমানে এসব এলাকার আমগাছের নিচে দেখা যাচ্ছে ঝরে পড়ে রয়েছে অসংখ্য ছোট ছোট আমের গুটি।
জিউপাড়া ইউনিয়নের আমচাষি সবুর আলী বলেন, আমাদের আমের বাগানে খরার কারণে অনেক আমের গুটি ঝরে যাচ্ছে। তারপর বৃষ্টির দেখা নাই। দিন দিন তাপমাত্রা বাড়ছে। বাগানের গাছে তিন ভাগের এক ভাগ আম ঝরে পড়েছে। বৃষ্টি না হওয়ায় আম নিয়ে বেকায়দায় রয়েছি আমরা।
পুঠিয়া সদরে গোপালহাটি গ্রামের আম বাগান মালিক আনসার আলী বলেন, ‘তীব্র খরার কারণে আমাদের বাগানে আমের গুটি অনেক ঝরে গেছে। অনেক গাছে কোনো আমই নাই। আমগাছে সেচ ও কীটনাশকের মিশ্রণ স্প্রে করেও গুটি টেকানো যাচ্ছে না। এ সময় বৃষ্টি না হওয়ায় আম নিয়ে চিন্তায় রয়েছি আমরা। যদি বৃষ্টি না হয় তাহলে আমার অনেক টাকা লোকসান হবে।
ডিপ্লোমা কৃষিবিদ মোহাম্মদ আলী বলেন, খরার জন্য আমের গুটি ঝরে যাচ্ছে। তবে আমচাষিদের পরামর্শ দিচ্ছি গাছের গোড়ায় পানি দেওয়াসহ ছত্রাকনাশক ওষুধ স্প্রে করার জন্য।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার নিভাস সরকার জানান, আমাদের উপসহকারীরা আম রক্ষার্থে ১৫ দিন পরপর বাগান মালিক ও চাষিদের আমের গাছে বেশি করে পানি দিতে সব সময় পরামর্শ দিচ্ছে এবং ছত্রাকনাশক ও বোরন স্প্রে করতে বলা হচ্ছে। গত বছরের তুলনায় আমের গুটিও ভালো রয়েছে। কিন্তু তাপদাহ ও বৃষ্টি না হওয়ার করণে আমের গুটি ঝড়ে যাচ্ছে। তবে কিছু কিছু জাতের নিদিষ্ট কিছু বৈশিষ্ঠ রয়েছে যে প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত আম ঝড়ানোর জন্য এক ধরণের হরমোন নিস্বরণ করে থাকে ফলে গুটি ঝড়ে যায়। প্রাকৃতিক কোন বড় ধরণের দূর্যোগ না হলে আমের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছি।