বগুড়ায় অপহরণের আড়াই মাস পর যুবকের মরদেহ উদ্ধার, গ্রেফতার ৩

0 ১১৯

বগুড়া প্রতিনিধি: বগুড়ায় নিখোঁজের আড়াই মাস পর এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার(২৩ জুন) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কাহালু উপজেলার শিবাকলমা গ্রামের জমির মধ্যে পুঁতে রাখা অবস্থায় এ মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এর আগে বৃহস্পতিবার(২২ জুন) রাতে কাহালু ও সদর থানা এলাকা থেকে এ ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- কাহালু উপজেলার শিব কলমা এলাকার বিপুল চন্দ্র প্রামাণিক(৩৫), দিনেশ চন্দ্র প্রামানিক(৪১) এবং উৎপল চন্দ্র(২৪)। এসময় মুক্তিপণ দাবি করার কাজে ব্যবহৃত সীমসহ মোবাইল উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার(২৩ জুন) দুপুর দেড়টার দিকে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার( প্রশাসন) স্নিগ্ধ আখতার এসব তথ্য জানান।

জানা যায়, গত ১২ এপ্রিল শিব কলমা গ্রামের অনীল চন্দ্র সরকারের ছেলে বিধান চন্দ্র সরকার(২০) নিখোঁজ হন। ওইদিন নিখোঁজের বাবা এ ব্যাপারে কাহালু থানায় একটি জিডি(৬১১) করেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আখতার বলেন, ‘আসামিরা বিধানের পূর্ব পরিচিত। তার বিধানের বাবার কাছ থেকে টাকা আদায়ের জন্য বিধানকে আটকের পরিকল্পনা করে। সেই অনুযায়ী ১১ এপ্রিলসন্ধ্যার পরে তারা বিধানকে নিয়ে শিবকলমা গ্রামের পূর্বে কাহালু থানার সীমান্তবর্তী ভাদাখাল (সরকারী নালা) নামক একটি জনশূন্য এলাকায় নিয়ে যায়।

সেখানে পৌঁছে তারা একসাথে মদ পান করে। বিধান নেশাগ্রস্থ হলে উৎপল তার সাথে কথা বলতে থাকে এবং দিনেশ পিছন থেকে বিধানের মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে। এতে বিধান মাটিতে পড়ে গেলে উৎপল আবার হাতুড়ি দিয়ে তাকে আঘাত করে। তাদের পরিকল্পনা ছিলো ভিকটিমকে হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করে অজ্ঞান করে ফেলা কিন্তু আঘাত গুরুত্বর হওয়ার কারণে বিধানকে তারা তাৎক্ষনিক হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়। আঘাতের ফলে বিধান পাশের নালায় পড়ে গেলে আসামীরা তাকে পানিতে মাথা চেপে ধরে মৃত্যু নিশ্চিত করে।

এরপর তারা লাশ গোপন করার জন্য পাশেই মাটি খুড়ে বিধানকে পুঁতে রাখে। তাড়াহুড়ার কারণে আসামিরা কাজটি ঠিকমত করতে পারেনা। পরদিন ভোরবেলা বিপুল লাশ পুতে রাখার স্থানে গেলে দেখে যে শিয়ালে মাটি খুড়ে লাশের একটি হাত বের করে ফেলেছে। তাৎক্ষনিক বিপুল মাটি চাপা দেয়। বিপুল ৪/৫ দিন ধরে বিষয়টি নজরদারী করে এবং দিনেশ ও উৎপলের সাথে আলোচনা করে অন্যস্থানে আরো ভালভাবে পুতে রাখার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা মতে তারা ৪/৫ দিন পর লাশটি সরিয়ে প্রায় ৫০ গজ দূরে জমি সেচের ড্রেনের নিচে গভীর করে পুতে ফেলে।’

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আখতার আরও বলেন, ‘ঘটনার দেড় মাস পার হয়ে গেলেও কেউ কোন কিছু বুঝতে না পারায় তারা মুক্তিপণ আদায়ের জন্য বিধানের বাবাকে মুঠোফোনের মাধ্যমে ৬ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরে বিধানের বাবা বিষয়টি পুলিশকে জানালে পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে আসামিদের গ্রেফতার এবং তাদের দেয়া তথ্যানুযায়ী মরদেহ উদ্ধার করা হয়।’ তবে আসামিদের নিয়ে আরও বিভিন্ন আলামত উদ্ধারে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এবং আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থার তাদের আদালতে পাঠানো হবে বলে পুলিশের ওই কর্মকর্তা জানান।

Leave A Reply

Your email address will not be published.