বগুড়া প্রতিনিধি: বিএনপি ও জামায়াতের ডাকা তিনদিনের অবরোধের প্রথম দিনে বগুড়ার সদর উপজেলার নওদাপাড়া এলাকায় বগুড়া- রংপুর মহাসড়কে, মাটিডালী ও বনানী এলাকায় ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক অবরোধ রেখেছেন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। বনানী বাইপাস এলাকায় বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তিনটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দিয়েছে এবং কুরিয়ার সাভির্সের গাড়ীতে আগুন দিয়ে মালামাল ভস্মিভূত করছে অবরোধকারীরা। এ সময় শ্যামলী, শাহ-ফতেহ আলী পরিবহন সহ আরো কয়েকটি ট্রাক ও যানবাহন সহ ভাঙচুর করে।
মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সকাল থেকেই মহাসড়কে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে, মোটর সাইকেলে আগুন লাগিয়ে দিয়ে ও হাতে লাঠিসোটা নিয়ে বিক্ষোভ করছেন বিএনপি’র নেতাকর্মীরা।
সকাল থেকেই কয়েকশ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের কয়েকশ নেতাকর্মী শাজাহানপুর উপজেলার বনানী এলাকার ঢাকা-বগুড়া মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। এ সময় তাদের অবরোধে ঢাকা থেকে আগত একাধিক যানবাহন আটকা পড়ে। একপর্যায়ে পুলিশ ও বিজিবি সদস্যদের নিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট সেখানে অবস্থান নেয়।
এর পরপর শাজাহানপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, উপজেলা চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন ছান্নুর নেতৃত্বে মোটরসাইকেলের বহর বনানী দ্বিতীয় বাইপাস এলাকায় আসেন। তারা সেখানে আসামাত্র দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এ সময় উভয়পক্ষ ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। বেশ কযেকটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ সময় অবরোধকারীরা তিনটি মোটর সাইকেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। পাশাপাশি তারা তিনটি যানবাহন ভাংচুর চালায়।
এ সময় পুলিশ অবরোধকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গেলে তারা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে করতে ২য় বাইপাস সড়কের দিকে চলে যায়। এসময় ঘটনাস্থলে থাকা বগুড়া জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুর রশিদ বলেন, অবরোধকারীদের ছত্রভঙ্গ করা হয়েছে।
অপরদিকে একই দিনে বগুড়া সদর উপজেলার মাটিডালি এলাকার মহাসড়কে অন্তত পাঁচটি যানবাহন ভাঙচুর করেছে পিকেটাররা। জেলা বিএনপির সভাপতি ও পৌর মেয়র রেজাউল করিম বাদশার নেতৃত্বে একটি দল সেখানে অবরোধ করে। এই সময় তারা মহাসড়কে ইট-পাটকেল ফেলে টায়ারে আগুনে জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকেন। একপর্যায়ে সেখানে শ্যামলী পরিবহনের একটি বাস ভাঙচুর করা হলে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
বগুড়া-নওগাঁ আঞ্চলিক মহাসড়কে সদরের এরুলিয়ে থেকে কাহালুর দরগাহাটা পর্যন্ত অবরোধ করে চোরাগুপ্ত হামলা চালিয়ে যানবাহন ভাংচুর করা হয়। সকাল ১০ টা থেকে ১১ টা পর্যন্ত অন্তত পাঁচটি যানবাহন ভাঙচুর করেন পিকেটাররা। পরে বগুড়া সদর থানা পুলিশের একাধিক দল ঘটনাস্থলে গিয়ে কয়েকদফা তাদের ধাওয়া দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
দুপুর আড়াইটার দিকে সদর উপজেলার বাঘোপাড়া এলাকায় ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে এ. জে আর পার্সেল এন্ড কুরিয়ার সার্ভিসের মালবাহী গাড়িতে আগুন দেয়। এতে গাড়ির সামনের অংশ পুড়ে যায়। পরে আগুন ভিতরে ছড়িয়ে গেলে গ্রাহকদের মালামাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। খবর পেয়ে পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিসের একটি দল আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন বগুড়া জেলা পুলিশের মিডিয়া মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরাফত ইসলাম।
বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(প্রশাসন) স্নিগ্ধ আখতার বলেন, জেলার গুটিকয়েক স্থানে দুর্বৃত্তরা চোরাগুপ্ত হামলা চালিয়ে মানুষের জানমালের ক্ষতির চেষ্টা করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে।
তাছাড়া অবরোধের প্রথম দিন ভোর থেকে পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি টহল শুরু করেছে। অবরোধকারীদের কিছুটা দূরেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অবস্থান নিয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত অবরোধকারীদের ছত্রভঙের চেষ্টা করতে দেখা যায়নি।