বিনা ভোটে ৪৩ জনের জয় নির্বাচনকে স্নান করে দিয়েছে
ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) মাহবুব তালুকদার বলেছেন, এবারের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ভোটের টার্ন আউট মোটামুটি ভালো ছিল, শতকরা ৬৯.৩৪ ভাগ। কিন্তু বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন অনুষ্ঠান ও ইউনিয়ন পরিষদে ৪৩ জন প্রার্থী নির্বাচন না করেই চেয়ারম্যান পদে অভিষিক্ত হওয়া এই নির্বাচনকে স্নান করে দিয়েছে। অন্যদিকে নয়টা পৌরসভায় তিনজন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মেয়র নির্বাচিত হন।
আজ বুধবার দুপুরে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ ব্রিফিংয়ে মাহবুব তালুকদার এ কথা বলেন।
ভারপ্রাপ্ত সিইসি বলেন, নির্বাচন যেহেতু অনেকের মধ্যে বাছাই, সেহেতু বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পদে আসীন হওয়াকে নির্বাচিত হওয়া বলা যায় কি? রাজনৈতিক সমঝোতা ছাড়া নির্বাচন নিয়ে চলমান অবস্থার পরিবর্তন সম্ভব না।
মাহবুব তালুকদার বলেন, বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনে বহুদলের অংশগ্রহণ একান্ত প্রয়োজন। প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন নির্বাচনের কারণ বিশ্লেষণ করে সে বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ অনিবার্য। ভোটারদের নির্বাচন বিমুখতাও গণতন্ত্রের জন্য অশনিসংকেত।
নির্বাচন কমিশনার বলেন, এই সব কিছুর সঙ্গে নির্বাচন প্রক্রিয়া ও নির্বাচন ব্যবস্থাপনা জড়িত। এই অবস্থা থেকে উত্তরণ সার্বিকভাবে নির্বাচন কমিশনের ওপর নির্ভর করে না। রাজনৈতিক সমঝোতা ছাড়া এই অবস্থার পরিবর্তন সম্ভব নয়।
মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘গত ১৫ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবসে মিডিয়াসহ সংশ্লিষ্ট সবার নীরবতা আমাকে হতাশ করেছে। মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, আমরা কি গণতন্ত্রের অভিযাত্রায় শামিল হতে অনীহা প্রকাশ করছি?’
ভারপ্রাপ্ত সিইসি বলেন, ‘গত ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছয় দিনের জন্য আমি ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করি। কয়েকজন সাংবাদিক ওই সময়ে অনুষ্ঠিত ১৬০টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ও নয়টি পৌরসভা নির্বাচনে আমার সাফল্য ও ব্যর্থতা জানতে চান। এহেন সংক্ষিপ্ত সময়ে আকস্মিকভাবে নির্বাচনী ব্যবস্থাপনার পরিবর্তন সাধন সম্ভব নয়। তারপরও কিছু কথা থেকে যায়। নির্বাচনে তিনজনের প্রাণহানি ঘটেছে। এটা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। আমি সর্বদা বলে এসেছি জীবনের চেয়ে নির্বাচন বড় নয়। তবু ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে সহিংসতা রোধ করা গেল না। নির্বাচনে ঘটনা বা দুর্ঘটনা যা-ই হোক না কেন, নির্বাচন কমিশনের ওপরই দায় এসে পড়ে। তবে নির্বাচনের সব দুর্ঘটনা, অর্থাৎ বিশৃঙ্খলা, অবৈধভাবে ব্যালটে সিল মারা, প্রতিপক্ষকে হুমকি প্রদান ইত্যাদি অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয়ের পুনরাবৃত্তি রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
Comments are closed.