ভর্তি পরিক্ষায় রাবি’র আয় ২৪ কোটি টাকা!

0 ১৮৮
রাবি প্রতিনিধি : ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষার আবেদন থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আয় হয়েছে প্রায় ২৪ কোটি টাকা। ১৫ মার্চ থেকে শুরু হয়ে তিনটি ইউনিটের জন্য দুই ধাপে এই আবেদন কার্যক্রম চলে ২ মে পর্যন্ত।
প্রাথমিক পর্যায়ে আবেদন থেকে আয় হয়েছে ১ কোটি ২০ লক্ষ ৬০ হাজার ১৫ টাকা; অন্যদিকে চূড়ান্ত পর্যায়ের আবেদনে তিনটি ইউনিট থেকে ১০% সার্ভিস চার্জসহ আয় হয়েছে ২২ কোটি ৮৯ লক্ষ ৬৯ হাজার ৪০০ টাকা। ফলে, প্রাথমিক ও চূড়ান্ত—দুই ধাপে আবেদন ফরম বিক্রি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আয় হয়েছে সর্বমোট ২৪ কোটি ১০ লক্ষ ২৯ হাজার ৪১৫ টাকা। অনলাইন সার্ভিস চার্জ ও ব্যাংক পেমেন্ট সার্ভিস চার্জ বাদ দিলে এই আয়ের পরিমাণ ২২ কোটি ২ লক্ষ ১৪ হাজার ১৫ টাকা। সার্ভিস চার্জ থেকে প্রাপ্ত অর্থের একটি অংশ  বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেন্টারের উন্নয়ন ফান্ডে জমা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেন্টারের তথ্য বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক পর্যায়ে তিনটি ইউনিটে আবেদন জমা হয় ৪ লক্ষ ১ হাজার ৪১৪টি। একক আবেদন সংখ্যা ছিল ২ লাখ ১৯ হাজার ২৭৩টি। প্রাথমিক পর্যায়ে আবেদন ফি ধার্য করা হয়েছিল ৫৫ টাকা; সেখানে একজন ভর্তিচ্ছু এই ফি দিয়েই ‘এ’, ‘বি’, ‘সি’,— তিনটি ইউনিটেই আবেদনের সুযোগ পেয়েছিল।
অন্যদিকে, চূড়ান্ত পর্যায়ে ‘এ’ ইউনিটে ৭২ হাজার ৫০টি, ‘বি’ ইউনিটে ৩০ হাজার ৬৭৪টি এবং ‘সি’ ইউনিটে জমা পড়ে ৭৫ হাজার ৮৫০টি আবেদন। ১০% সার্ভিস চার্জসহ চূড়ান্ত পর্যায়ে ‘এ’ ও ‘সি’ ইউনিটের জন্য আবেদন ফি ধার্য করা হয় ১৩২০ টাকা এবং ‘বি’ ইউনিটের জন্য ধার্য করা হয় ১১০০ টাকা।
যেভাবে খরচ হবে এই অর্থ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে আবেদন থেকে প্রাপ্ত অর্থ কোন কোন খাতে ব্যয় হবে তা জানতে যোগাযোগ করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ও হিসাব দপ্তরে। রেজিস্ট্রারের অনুমতি ছাড়া গণমাধ্যমকে এ বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে রাজি হননি অর্থ ও হিসাব দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ড. শেখ শামসুল আরেফিন। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আবদুস সালামের সাথে যোগাযোগ করা হলে, তিনিও এই বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
তবে, আবেদন থেকে প্রাপ্ত অর্থ কোন কোন খাতে খরচ হয় তার একটি নথি এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। নথি বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, ১ম বর্ষ স্নাতক/স্নাতক (সম্মান) শ্রেণীর ভর্তি পরীক্ষার অনলাইন পদ্ধতিতে আবেদনের বিপরীতে প্রাপ্ত অর্থের ৬০% ইউনিটগুলো গ্রহণ করে থাকে;  অবশিষ্ট ৪০% অর্থ রা.বি. কেন্দ্রীয় ফান্ডে জমা হয়। ৬০% অর্থের ৫% অর্থ ইউনিটভুক্ত ডীন ও ইন্সটিটিউট অফিস  এবং ১০% অর্থ ইউনিটভুক্ত বিভাগসমূহের উন্নয়নের জন্য রেখে বাকী অর্থ প্রতিটি ইউনিট ভর্তি সংক্রান্ত যাবতীয় ব্যয় সম্পন্ন করে থাকে।
ফলে, এ বছর শুধু ভর্তি সংক্রান্ত কাজেই ব্যয় করা হবে ১১ কোটিরও বেশি টাকা। অন্যদিকে, রা.বি. কেন্দ্রীয় ফান্ডে জমা হবে প্রায় ৯ কোটি টাকা। এছাড়া, ইউনিটভুক্ত বিভাগগুলোর উন্নয়ন ফান্ডে জমা হবে প্রায় দেড় কোটি টাকা।
এছাড়া, গত শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষার হলে পরিদর্শকের সম্মানী ছিল ৩০০০ টাকা এবং কর্মচারীর পারিতোষিক ছিল ১০০০ টাকা। এছাড়া, চীফ কো-অর্ডিনেটরের সম্মানী ৬০,০০০ টাকা, এডিশনাল চীফ কো-অর্ডিনেটরের সম্মানী ৬০,০০০ টাকা এবং কো-অর্ডিনেটরের সম্মানী ৪৫,০০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
ভর্তি কমিটির সিদ্ধান্ত অনুয়ায়ী, ভর্তি পরীক্ষার হলে ১৮ জন শিক্ষার্থীর জন্য ১ জন পরিদর্শক এবং ৪০ জন শিক্ষার্থীর জন্য ১ জন কর্মচারী থাকবে।
তবে, উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ এবং রেজিস্ট্রারের সম্মানী সম্পর্কে স্পষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। জানা গেছে, বিষয়টি প্রশাসনিকভাবে কমিটির মাধ্যমে ৪০% অর্থ থেকে প্রদান করা হয়ে থাকে।
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, “ভর্তি কমিটির সিদ্ধান্তের আলোকেই অনলাইনে আবেদন থেকে প্রাপ্ত অর্থ খরচ করা হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে, গত শিক্ষাবর্ষে ইউনিট সমন্বয়কারী ও পরিদর্শকের সম্মানী এবং কর্মচারীদের পারিতোষিক যা ছিল, এবারও সেটিই বহাল রাখা হয়েছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.