ভারতের চেন্নায় গিয়েও টাকার অভাবে অপারেশন না হওয়ায় মৃত্যু শয্যায় পাঞ্জা লড়ছে ৪ বছরের শিশু রুমী

সরকার ও প্রবাসীদের আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন !

0 ৪৪৯

 

ময়মনসিংহ থেকে ফিরে-ভোলাহাট(চাঁপাইনবাবগঞ্জ)প্রতিনিধি: মাত্র ৪ বছরের শিশু কন্যা আরজিনা আক্তার রুমী। বাবা ময়মনসিংহ জেলার ঢোলাদিয়ার পেশায় রং মিস্ত্রি। মা রোখসানা বেগম গৃহিনী। বাবা-মায়ের একমাত্র মেয়ে মাত্র ৪ বছর বয়সী রুমী ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে মৃত্যুর প্রহড় গুনছে। এ ৪ বছর বয়সেই রুমীর হার্টে ব্লক ধরা পড়েছে। মাস কয়েক আগে তার এ রোগ ধরা পড়ে। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে রেফার্ট হয়ে রাজধানী ঢাকা মীরপুর হার্ট ফাউন্ডেশনে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার পরামর্শ দেন রোগীকে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের চেন্নাইয়ে নেয়ার জন্য।

 

মাথায় বাজ পড়ে শুনে বাবা ও মা আনার মিয়া ও রোখসানা বেগমের। এতোগুলো টাকা কোথা থেকে জোগাড় করবে তারা? বাবা আনার মিয়া সামান্য রং মিস্ত্রি। সংসারে তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে বাবার সামান্য আয়েই কোনমতে জোড়াতালি চলে যাচ্ছিল তাদের ছোট্ট সংসার। পৈত্রিক ভিটেমাটি আর রং মিস্ত্রির কাজ করে সুখে-দু:খে দিব্যি চলছিলো। এরই মধ্যে মাথায় বাজ ভেঙ্গে পড়ে বাবা আনার মিয়ার।

আনার মিয়া এ প্রতিবেদককে কান্না জড়িত কণ্ঠে জানান, ঢাকার ডাক্তারগণ আমাকে জানান, জরুরী ভিত্তিতে মেয়েটিকে অপারেশন করাতে হবে। তারা আরো জানান, এতে খরচ আসবে প্রায় দু’লাখ টাকার মত। অনেক চেষ্টা-তদবীর ও মানুষের দাড়ে দাড়ে গিয়ে এবং হাওলাদ-কর্জ করে দু’লাখ টাকা যোগাড় করি আমি নিজে থেকে। গত ২১ নভেম্বর ২০২০ আনার মিয়া তাদের পাসপোর্ট-ভিসা করে সড়ক পথে অসুস্থ্য আরজিনা আক্তার রুমীকে নিয়ে ভারতের চেন্নাইয়ের খ্রীষ্টিয়ান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসে পৌছান তারা।

তিনি আরো জানান, চেন্নাই হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর বিশেষজ্ঞ ডাক্তার অনুপ জর্জ অ্যালের রুমীকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে জানান, আপনার মেয়েকে অপারেশনই করতে হবে। এদিকে বিপাকে পড়ে আনার মিয়া হাসপাতালের বিল পরিশোধ করতে গিয়ে। চেন্নাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ থেকে জানানো হয় প্রায় ৪লাখ টাকা খরচ হবে এ অপারেশনে। রোগীর অভিভাবকদের সমস্যার কথা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানতে পেরে কিছু টাকা কমিয়ে সাড়ে ৩ লাখ টাকার কমে অপারেশন করা যাবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন।

ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস, অপারেশনের জন্য ঐ হাসপাতালে ভর্তি থাকার পরও অর্থাভাবে ফুটফুটে মিষ্টি মুখ রুমীকে অপারেশন না করিয়েই ফিরে আসতে বাধ্য হয় আনার ও রোখসানা দম্পতি। মাঝখান থেকে দু’লাখ টাকার মধ্যে তাদের ৮০ হাজার টাকা খরচ হয়েই গেছে। বাকী থাকে মাত্র ১লাখ ২০ হাজার টাকা। আর রুমীর অপারেশনের জন্য লাগবে সাড়ে তিন লাখ টাকা। উপায়ন্তর না দেখে ফিরে আসতে হয় আনার মিয়ার পরিবারকে।

বর্তমান প্রায় কয়েক মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও একটি টাকাও জোগাড় করতে পারেনি রং মিস্ত্রি গরীব-অসহায় আনার মিয়া। বিধির লিখন কে খন্ডাতে পারে। আনার মিয়ার পরিচয় ও তার শিশু কন্যা রুমীর করুণ কাহিনী ফেসবুক প্যাজে চোখে পড়ে এ প্রতিবেদকের। নানা জল্পনা-কল্পনা করে মোবাইলে যোগাযোগের মাধ্যমে সরজমিনে গিয়ে প্রত্যক্ষ করে এ প্রতিবেদন। যাই হোক, বাবা আনার মিয়া ভারতের চেন্নাই হতে বাংলাদেশের তার নিজ বাসস্থানে এসে আরো হতাশ হয়ে পড়েন, কোত্থেকে জোগাড় করবে এতোগুলো টাকা।

 

চোখে তিনি মেয়ের চিন্তায় চিন্তায় ঝাপসা দেখছেন। মনে হচ্ছে তার চারদিক অন্ধকার হয়ে আসছে। বাবা বেঁচে থাকতে চোখের সামনে তার শিশু কন্যা মাত্র ৪ বছরের হৃদরোগী রুমী দিন দিন মৃত্যুর দিকে চলে যাচ্ছে, এযেনো একজন বাবা হয়ে তাঁর কাছে বড়ই কষ্টের। ভারতের চেন্নাইয়ের ডাক্তার আশ্বাস দিয়েছিলেন, রুমীকে যতদুর সম্ভব দ্রুত অপারেশন হলে মেয়েটিকে নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচানোর সম্ভাবনা আছে। কিন্তু ৪/৫ লাখ টাকা কোত্থেকে জোগাড় করবে বাবা সামান্য রং মিস্ত্রি আনার মিয়া। যার কোন সহায়-সম্বল নেই।

 

নি:স্ব আনার মিয়া কোথায় পাবে এতোগুলো টাকা? কে দিবে? মানবতার প্রশ্নে একটি হৃদরোগী শিশুকে বাঁচাতে কেউকি এগিয়ে আসবে, দায়িত্ব নিবে শিশুটির চিকিৎসা সহায়তার। একরাস দুশ্চিন্তা নিয়ে সহায়-সম্বলহীণ অসহায়-অস্বচ্ছল বাবা আনার মিয়া ও মা রোখসানা বেগম কেবলই কেঁদে কেঁদে বুক ভাসিয়ে আর্থিক সহায়তার জন্য ঘুরে ফিরছে দ্বারে দ্বারে। কোনো মানববীর বা মানবিক উদ্দ্যোগ নিয়ে কী এগিয়ে আসবেন দরিদ্র-অসহায় পিতার একমাত্র কন্যা সন্তান রুমীকে বাঁচাতে? নাকি অকালে নির্জন-নিভ্রিতে হারিয়ে যাবে একটি সুন্দর ফুটফুটে বাবা-মায়ের বড় আদরের তাজা প্রাণ। এ দুনিয়াতে আমরা সকলেই একে অপরের জন্য নিবেদিত একেকটি প্রাণ।

 

ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয়। আর মানুষ মানুষের জন্য। তাই পরিশেষে এ প্রতিবেদকের সকলস্তরের মানুষের কাছে উদার্ত আহবান, আসুন, আমরা সকলেই রুমীর বাবার পাশে থেকে তার হাল ধরে তরতাজা একটি প্রাণ প্রকৃত প্রাণে পরিণত করি। বিশেষ করে বর্তমান সরকারের কাছে জোড়ালো দাবী জানিয়েছেন, রুমীর বাবা ও মা। তার মেয়ের সুচিকিৎসার আর্থিক সহায়তা প্রদাণের জন্য।

প্রয়োজনে সাহায্য-সহায়তা করার জন্য-খাগডহর রূপালী ব্যাংক শাখায় একটি ব্যাংক এ্যাকউন্ট রয়েছে, যার হিসাব নম্বর-১৮৩। রুমীর বাবা আনার মিয়ার মোবাইল ও বিকাস নম্বর-০১৮৬০-৫০০১৫১। আরেকটি ব্যাংক এ্যাকাউন্ট নম্বর-অগ্রণী ব্যাংক, ময়মনসিংহ শাখা-এ/সি-০২০০০১৩২৫০১১০।

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.