ভারতে মুসলিম নিপীড়নের নতুন পন্থা : রেস্তোরাঁ কর্মীদের নাম প্রদর্শন

0 ৮০

বিডি সংবাদ24.কম অনলাই ডেস্ক: ভারতে দুটি রাজ্যে একটি বৈষম্যমূলক নীতি আরোপের মাধ্যমে সেখানকার রেস্তোরাঁগুলোর সব কর্মীর নামের তালিকা প্রকাশ্যে প্রদর্শন করা বাধ্যতামূলক করার পর মুসলমানদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হচ্ছে এবং মুসলমানদের ব্যবসাগুলো বন্ধের সম্মুখীন হচ্ছে। এ নীতিটি প্রথম চালু করেন উত্তরপ্রদেশের বিজেপি দলীয় মুখ্যমন্ত্রী কট্টর হিন্দু সন্ন্যাসী যোগী আদিত্যনাথ। গত মাসে ভারতের বিরোধীদল কংগ্রেস শাসিত হিমাচল রাজ্যও এ নিয়ম চালু করার ঘোষণা দিয়েছে। যদিও ভারতের উভয় রাজ্য সরকার বলেছে যে তাদের রাজ্যগুলোয় স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিধি এবং বিক্রয় প্রবিধানগুলোর সাথে সমন্বয় নিশ্চিত করার জন্য এটি করা হয়েছে। তবে স্থানীয়রা এবং কর্মীরা অভিযোগ করেছেন, এ নতুন নিয়ম মুসলিম কর্মী ও প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর একটি পরোক্ষ আক্রমণ। ভারতে মানুষের নামগুলো ব্যাপকভাবে ধর্ম ও বর্ণের প্রতিনিধিত্ব করে। ফলে মুসলিম ব্যবসায়ীদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান ভীতি বাড়ছে যে এ নতুন নিয়ম তাদেরকে আক্রমণ লক্ষ্যবস্ততে পরিণত বা অর্থনৈতিক বর্জনের দিকে পরিচালিত করবে; বিশেষ করে রাজ্যগুলোর সক্রিয় কট্টরপন্থী হিন্দু গোষ্ঠীগুলোর দ্বারা। উত্তরপ্রদেশ হিন্দু জাতীয়তাবাদী ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) দ্বারা শাসিত হয় যেটি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অধীনে কেন্দ্রে শাসন করে, যার শাসনামলকে ক্রমবর্ধমান মুসলিমবিরোধী বৈষম্য এবং নিপীড়ন দ্বারা চিহ্নিত করা হয়েছে। উত্তরপ্রদেশের ব্যবসায়িক মালিকরা বলেছেন, নতুন আইনের ফলে তারা মুসলিম কর্মীদের বরখাস্ত করেছেন এ ভয়ে যে, তারা লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবেন। অন্যান্য মুসলিম-পরিচালিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো বলেছে, তারা ইতোমধ্যে এ নীতির ফলে হয়রানির শিকার হয়েছে এবং অনেকে ব্যবসা গুটিয়ে নেয়ার কথা বিবেচনা করছেন।
ভারতে মুসলমানদের অর্থনৈতিকভাবে বর্জনের আহ্বানের পর রাজ্যগুলোয় গত পাঁচ বছরে মুসলিম বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে হামলার ঘটনা লক্ষণীয়ভাবে বেড়েছে। গত মাসে, হিন্দুবাদী গোষ্ঠী বজরং দল-এর রাজ্য নেতা একটি সভায় উপস্থিতদের এ প্রতিশ্রুতি দেয়ার আহ্বান জানান, ‘আমি কোনো মুসলিম দোকানদারের কাছ থেকে পণ্য কিনব না।’ বিতর্ক এবং ধর্মীয় বিভাজন উসকে দেয়ার অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও সেপ্টেম্বরে হিমাচল প্রদেশের রাজ্য সরকার বলেছে যে, তারা শীঘ্রই উত্তরপ্রদেশের উদাহরণ অনুসরণ করবে। নীতিটি আনার কারণ হিসাবে এটি খাদ্য স্বাস্থ্যবিধির পাশাপাশি অভিবাসীদের আগমনের আশঙ্কাকে উল্লেখ করেছে। ব্যবসায়ী মালিকরা স্থানীয় কংগ্রেস পার্টির বিরুদ্ধে ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতিশ্রুতির বিপরীতে যাওয়ার এবং রাজ্যের হিন্দু-সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটকে বিভক্ত করার নীতি ব্যবহার করার অভিযোগ করেছেন। হিমাচল প্রদেশের সিমলায় একটি রেস্তোরাঁর মালিক শারিক আলি বলেন, ‘আমার দোকানে আমার নাম প্রদর্শন করার পর আমি নিরাপদবোধ করব না। আমরা দেখেছি যে, মোদির শাসনের শেষ ১০ বছরে ভারতজুড়ে মুসলমানরা কীভাবে আক্রমণের শিকার হয়েছে, কিন্তু আমি কংগ্রেস সরকারের কাছ থেকে এটি আশা করিনি।

 

সূত্র: সাপ্তাহিক সোনার বংলা

Leave A Reply

Your email address will not be published.