যুব সমাবেশ থেকে এমপি বাদশা রাজশাহীর চলমান অগ্রগতিকে এগিয়ে নিন

0 ১২৬

স্টাফ রিপোর্টার: বিএনপি-জামায়াত তথা দেশি-বিদেশি সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে রাজশাহীসহ সারাদেশের চলমান উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে এগিয়ে নিতে জনসাধারণের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও রাজশাহী-২ আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা। শনিবার রাজশাহী নগরীর লক্ষ্মীপুর মোড়ে আয়োজিত যুব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এই আহ্বান জানান। বাংলাদেশ যুবমৈত্রীর রাজশাহী মহানগর কমিটির উদ্যোগে এই যুব সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

সমাবেশে এমপি ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, রাজশাহীবাসীর কাছে বলতে চাই- আগামী নির্বাচনে যদি স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি ক্ষমতায় না যায়; জননেত্রী শেখ হাসিনাকে যদি আবারও ক্ষমতায় না আনতে পারি; তাহলে উন্নয়নের ধারা ও শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশের ধারা দুটোই বিপন্ন হবে। আপনারা দেখেন- গত ১৫ বছরে রাজশাহী শহরের চেহারা বদলে গেছে। বিমান, রেলপথসহ রাজশাহীর সঙ্গে সারাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা আর আগের মত নেই। সবকিছুতেই অগ্রগতি হয়েছে। রাজশাহী শহরের সকল স্কুল কলেজগুলোর চেহারা বদলে গেছে। ১৫ বছর আমরা ঘরে বসে থাকিনি। কিভাবে রাজশাহীর মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের কাজ করা যায়; শুধুমাত্র সেটিই চিন্তা করেছি এবং তা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছি। এখন সারাদেশের যেখানেই যাই, রাজশাহীর সুনাম শুনি।

রাজশাহী এখন উন্নত শহর। এসব একদিনে সম্ভব হয়নি। বর্তমান সরকারের আমলেই হয়েছে। সুতরাং, বিএনপি-জামায়াত ও তাদের বিদেশি মিত্ররা যদি ষড়যন্ত্র করে এসব অগ্রগতিকে থামিয়ে দিতে চায়; তাহলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তাদের দাঁতভাঙা জবাব দেয়া হবে। জনসাধারণের প্রতি আহ্বান রাখতে চাই- আসুন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজশাহীসহ সারাদেশের উন্নয়নের চলমান অগ্রগতিকে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নেই। বর্তমান সরকার ফের ক্ষমতায় ফিরলে রাজশাহী আরও উন্নত শহরে পরিণত হবে উল্লেখ করে জাতীয় এই নেতা বলেন, এই রাজশাহী সন্ত্রাসের বা জঙ্গিবাদ ও রাজাকারদের রাজশাহী নয়। এই রাজশাহী শান্তির নগরী। এই রাজশাহী মুক্তিযুদ্ধের এবং উন্নয়নের রাজশাহী। এই রাজশাহীকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য আমরা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছি। আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজশাহীর উন্নয়নের ধারাকে এতোদিন এগিয়ে নিয়েছি; আসুন আমরা আবারও ঐক্যবদ্ধ হই। রাজশাহীর চলমান উন্নয়নের ধারাকে এগিয়ে নিতে সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণ করি।

আমরা মনে করি, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি যদি একপক্ষে থাকে তাহলে আমাদেরকে কেউ পরাজিত করতে পারবে না। রাতের অন্ধকারে রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসার কোন সুযোগ নেই মন্তব্য করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) সাবেক এই ভিপি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি যদি রাতের অন্ধকারে ক্ষমতা দখল করার চেষ্টা করে, তবে তারা কখনোই সফল হবে না। বাংলা ভাইয়ের কথা মনে আছে? সেই বাংলা ভাই, যে বাগমারা থেকে অস্ত্র নিয়ে রাজশাহী শহরের কোর্ট পর্যন্ত এসেছিল।

অস্ত্র উঁচিয়ে রাজশাহীর মানুষকে আতঙ্কিত করার চেষ্টা করেছিল। সেই বাংলা ভাইকে কে এনেছিল। তাকে এই বিএনপি নামক দলটিই এনেছিল এবং তার অবৈধ জঙ্গিবাদী কার্যক্রম প্রতিষ্ঠা করার জন্য সহযোগিতা করেছিল। তাই আজকে সেই বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই- আপনারা যতই চেষ্টা করেন; রাতের অন্ধকারে বাংলাদেশের ক্ষমতায় বসা যাবে না। অতিতে কখনোই রাতের অন্ধকারে বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করা যায়নি। মুক্তিযুদ্ধ করে ক্ষমতায় আনতে হয়েছে। অতএব আপনাদের সকল বৃথা চেষ্টা, চেষ্টাই থেকে যাবে। কোন লাভ হবে না। বাংলাদেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিল, এখনো আছে এবং আগামীতেও থাকবে।

রাজশাহীতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের অন্যতম এই নেতা আরও বলেন, আমরা আকাশ থেকে পড়ে রাজশাহীতে রাজনীতি করছি এমনটি নয়। রাজশাহীতেই আমাদের জন্ম। রাজশাহীতে শিক্ষা গ্রহণ করেছি এবং এখানেই রাজনীতি করেছি। রাজশাহীতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করার কাজ আমরাই করেছি। আমাদের ধারা হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের ধারা। সেই ধারা হচ্ছে- অগ্রগতি ও উন্নয়নের ধারা। যারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি নয়; তাদের ধারাকে প্রতিহত করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারাকে আবারও রাজশাহীর রাজনীতিতে সামনে নিয়ে আসতে চাই। আমরা আশা করি, এ ক্ষেত্রে আমরা সকলেই ঐক্যবদ্ধ থাকব। এখানে আমাদের মধ্যে যেন বিভাজন-বিভক্তি কিছু না হয়; সেটিকে মাথায় রেখে রাজশাহীর অগ্রগতি ও উন্নয়নের ধারাবাহিকতাকে অব্যাহত রাখতে হবে।

রাজশাহী মহানগর যুবমৈত্রীর সভাপতি ও সিটি করপোরেশনের ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতির সভাপতিত্বে যুব সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক দেবাশিষ প্রামানিক দেবু, জেলা নারী মুক্তি সংসদের সভাপতি অধ্যাপক তসলিমা খাতুন, মহানগর যুবমৈত্রীর সহ-সভাপতি রায়হান হালিম, কেন্দ্রীয় যুবমৈত্রীর সহ-সভাপতি কামরুল হাসান সুমন, মহানগর যুবমৈত্রীর সাংগঠনিক সম্পাদক মোহায়মিনুল হক রানা প্রমুখ। এসময় মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টির সম্পাদকমণ্ডলির সদস্যবৃন্দ, মহানগর যুবমৈত্রীর নেতৃবৃন্দসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন মহানগর যুবমৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক শামীম ইমতিয়াজ।

Leave A Reply

Your email address will not be published.