রৌমারীতে আড়াই বছরেও শেষ হয়নি ৭টি ব্রীজের কাজ
মাজহারুল ইসলাম,রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: ৭টি ব্রীজের নির্মান কাজে ঠিদাদারের গাফিলতি ও কাজের ধীরগতির কারনে জনসাধারণ চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। কয়েক দফা সময় বাড়িয়েও কাজের মেয়াদ আড়াই বছর অতিবাহিত হলেও কার্যকরি ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। এছাড়াও বিকল্প সংযোগ সড়ক তৈরী হয়নি। এমন কি সাইন বোর্ডও ঝোলানো হয়নি। ফলে পৃথক পৃথক ভাবে ৬ টি ইউনিয়নের ৫০ টি গ্রামের ৭০ হাজার মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই। এ নিয়ে এলাকায় আলোচনা সমালোচনার ঝোর বইছে।
সরে জমিনে জানা গেছে, স্বাধীনতার ৫৪ বছরে উন্নয়ন বঞ্চিত কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলার স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশলী বিভাগের অধিনে (এলজিইডির) প্রোগ্রাম ফোর সার্পোটিং রোরাল, অনুর্ধ ১০০ মিটার ও ঘুর্ণীঝড় আমপান ও বন্যায় ক্ষগ্রিস্থ পুর্ণবাসনের প্রকল্পের আওতায় ২০২১-২০২২ ও ২০২৩ ও ২০২৪ অর্থ বছরে মোট ৪৩ কোটি ১৬ লাখ ২২ হাজার ৫৪৫ টাকা ব্যায় সাপেক্ষে ৭টি ব্রীজ নির্মানের কাজ। এ ব্রীজ গুলো টেন্ডারের মাধ্যমে ঠিকাদারদেরকে দেওয়া হয়। নির্মানাধীন ব্রীজ গুলি হলো বালিয়ামারী জিসি চুলিয়ারচর সড়কে ৩৬.০৬ মিটার, থানামোড় দাঁতভাঙ্গা জিসি ভায়া বাঞ্ছারচর সড়কে ৩৬.০৬ মিটার, বালিয়ামারী জিসি ভায়া চুলিয়ারচর সড়কে ৬০.০৬ মিটার, কর্তীমারী জিসি বড়াইবাড়ি বিওপি ক্যাম্প ভায়া বাওয়াইর গ্রাম সড়কে ৬০.০৬ মিটার, থানা মোড়-দাঁতভাঙ্গা জিসি ভায়া বাঞ্ছারচর সড়কে ৩০.০৬ মিটার, কর্তিমারী বড়াইবাড়ি খালের উপর কাশিয়াবাড়ী সড়কে ৯৬ মিটার, রৌমারী হাপাতীকান্দা গ্রাম থেকে বেহুলারচর সড়কে ৫৭ মিটার ও শৌলমারী আরএমএইচ জয়নাল চেয়ারম্যানের বাড়ির নিকট সড়কে ৪২ মিটার।
এসব ব্রীজের কাজ দেড় বছরের মধ্যে শেষ করার কথা থাকলেও কয়েক দফা সময় নিয়েও আড়াই বছরেরও কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদার।
রৌমারী স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সুত্রে ও সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, প্রোগ্রাম ফোর সার্পোটিং রোরাল, অনুর্ধ ১০০ মিটার ও ঘুর্ণীঝড় আমপান ও বন্যায় ক্ষগ্রিস্থ পুর্ণবাসনের প্রকল্পের আওতায় ২০২১-২০২২ ও ২০২৩ ও ২০২৪ অর্থ বছরে বালিয়ামারী জিসি চুলিয়ারচর সড়কে ১৬৪ মিটার চেইনেজ ৩৬.০৬ মিটার দীর্ঘ ব্রীজটি মেসার্স দুর্গা এন্টারপ্রাইজ দেওয়ানগঞ্জ জামালপুর ৩ কোটি ৯৬ লাখ ৩১ হাজার ৫৭৫ টাকা,
থানামোড় দাঁতভাঙ্গা জিসি ভায়া বাঞ্ছারচর সড়কে ৩৩০০ মিটার চেইনেজ ৩৬.০৬ মিটার দীর্ঘ ব্রীজটি এমএইচএন-কেএইচ-জেভি বেলতলী বাজার দেওয়ানগঞ্জ জামালপুর ৪ কোটি ৩১ লাখ ৮৭ হাজার ৮৪ টাকা,
বালিয়ামারী জিসি ভায়া চুলিয়ারচর সড়কে ৯১০৫ মিটার চেইনেজ ৬০.০৬ মিটার দীর্ঘ আরসিসি গার্ডার ব্রীজ নির্মান মীর হাবিবুল উত্তর বড়গাছা নাটোর ৪ কোটি ৮৫ লাখ ২৫ হাজার ৩২৮ টাকা,
কর্তীমারী জিসি বড়াইবাড়ি বিওপি ক্যাম্প ভায়া বাওয়াইর গ্রাম সড়কে ১৬০০ মিটার চেইনেজ ৬০.০৬ মিটার দীর্ঘ আরসিসি গার্ডার ব্রীজ নির্মান এমসিই-এমবিই (জেভি) মেলান্দহ জামালপুর ৫ কোটি ৮৯ লাখ ৮৮ হাজার ৫৮১ টাকা,
থানা মোড়-দাঁতভাঙ্গা জিসি ভায়া বাঞ্ছারচর সড়কে ১০০০ মিটার চেইনেজ ৩০.০৬ মিটার দীর্ঘ ব্রীজটি নির্মান খাইরুল এন্টারপ্রাইজ ত্রিমোহনী বাজার খলিলগঞ্জ কুড়িগ্রাম ৩ কোটি ২০ লাখ ৬৩ হাজার ৮০৩ টাকা,
কর্তিমারী বড়াইবাড়ি খালের উপর কাশিয়াবাড়ী সড়কে ১৩৫০ মিটার চেইনেজ ৯৬ মিটার দীর্ঘ ব্রীজটি নির্মান এনএ-ই-এমডি-ই (জেভি) ১১ কোটি ৮৫ লাখ ৮৩ হাজার ৪০৩ টাকা,
রৌমারী হাপাতীকান্দা গ্রাম থেকে বেহুলারচর সড়কে ৭০০ মিটার চেইনেজ ৫৭ মিটার দীর্ঘ গার্ডার ব্রীজটি নির্মান লোকমান হোসেন এন্ড মোস্তফা কামাল (জেবি) নেওয়াজ পার্ক বি-বাড়িয়া ৫ কোটি ৮৩ লাখ ৫৮ হাজার ৫৮ টাকা,
শৌলমারী আরএমএইচ জয়নাল চেয়ারম্যানের বাড়ির নিকট সড়কে ৫ মিটার চেইনেজ ৪২ মিটার দীর্ঘ গার্ডার ব্রীজটি নির্মান মেসার্স কেএম আবু বক্কর এন্ড আকাশ ট্রেডার্স কুড়িগ্রাম ৩ কোটি ৪৮ লাখ ১০ হাজার ৭১৩ টাকা ব্যায়ে নির্মানে দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে সর্বনি¤œ দরদাতা হিসেবে কাজ গুলি পায় উপরক্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
উক্ত প্রতিষ্ঠানের মালিকগন কাজ গুলি বিক্রি করে দেন স্থানীয় ঠিকাদারের নিকট। ১৮ মাসে কাজ গুলি শেষ করার কথা থাকলেও ঠিকাদার প্রকৌশলীদের সহযোগীতায় ঠিকাদার গাফিলতি করে ১৮ থেকে ৩০ মাসেও শেষ করে নি। কাজ ফেলে ঠিকাদাররা লাপাত্তা। ফলে জনসাধারণ চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে।
কাজ বন্ধ রাখার বিষয়ে একাধিক ঠিকাদারের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে কাউকে পাওয়া যায়নি।
এবিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মঞ্ছুরুল হক বলেন, বন্যা জনিত কারনে কাজ গুলি বন্ধ রয়েছে। খুব শিঘ্রই কাজ চালু করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য ঠিকাদারদের তাগাদা দেয়া হবে।