সংগীতজগতের বিস্ময় কিশোর কুমার
প্রথাগত তালিম ছাড়াই হয়ে উঠেছিলেন সংগীতজগতের অন্যতম প্রতিষ্ঠান। তিনি কিশোর কুমার। কণ্ঠে ধারণ করেছেন এমন সব গান, তার সুর সতত বহমান। তাঁকে বিস্ময় বললে অত্যুক্তি হবে না। ৯২তম জন্মবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় ভাসছেন পরলোকগত এ কণ্ঠের জাদুকর।
জন্মদিনে তাই গণমাধ্যমকে শিল্পী কুমার শানু ঠিকই বলেছেন, ‘আগাগোড়াই কিশোর কুমারের ক্লোন বলা হতো আমায়। এই তুলনা আমার কখনও খারাপ লাগেনি। লাগবেই বা কেন? আমরা তো জীবনে কাউকে না কাউকে অনুসরণ করেই চলি। ছাত্ররা শিক্ষককে করে, যারা গান ভালোবাসে, তারা গানের শিক্ষককে অনুসরণ করে। আমি ঠিক সে ভাবেই কিশোরদার পদাঙ্ক অনুসরণ করেছি।’
আইনজীবী কুঞ্জলাল গঙ্গোপাধ্যায় এবং তাঁর স্ত্রী গৌরীদেবীর ছোট ছেলে কিশোর কুমার। ১৯২৯ সালের ৪ অগস্ট জন্মের পর তাঁর নাম ছিল আভাস কুমার। ব্রিটিশ ভারতের সেন্ট্রাল প্রভিন্সের (আজকের মধ্যপ্রদেশ) খণ্ডোয়া অঞ্চলে জন্ম তাঁর। সেখানে এক অবস্থাপন্ন পরিবারের ব্যক্তিগত আইনজীবী হয়ে কর্মরত ছিলেন কুঞ্জলাল।
কিশোর কুমার ছিলেন একাধারে গায়ক, গীতিকার, সুরকার, অভিনেতা, চলচ্চিত্র পরিচালক, চিত্রনাট্যকার এবং রেকর্ড প্রযোজক। তাঁকে ভারতীয় চলচ্চিত্র শিল্পের সর্বাধিক সফল এবং চলচ্চিত্রের সর্বশ্রেষ্ঠ নেপথ্য গায়ক হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
কিশোর কুমার বিভিন্ন ভারতীয় ভাষায় গান গেয়েছিলেন, যার মধ্যে রয়েছে বাংলা, হিন্দি, মারাঠি, অসমীয়া, গুজরাটি, কন্নড়, ভোজপুরি, মালয়ালাম, ওড়িয়া ও উর্দু। জিতেছেন অসংখ্য পুরস্কার।
কিশোর কুমার ব্যক্তিজীবনে চার বার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। শোনা যায়, চার বারের দাম্পত্যজীবনের পরেও ঠিক সুখী হতে পারেননি। কিশোর কুমার ও তাঁর প্রথম স্ত্রী রুমা গুহঠাকুরতার একমাত্র সন্তান অমিত কুমার। ১৯৫২ সালে জন্ম হয় অমিতের। অমিত কুমারও একজন প্রতিষ্ঠিত কণ্ঠশিল্পী।
১৯৮৭ সালের ১৩ অক্টোবর মাত্র ৫৮ বছর বয়সে পরলোকগমন করেন সংগীতজগতের বিস্ময় কিশোর কুমার।