সহকর্মীর সাথে উদ্ধত আচরণের অভিযোগ সহকারী প্রক্টরের বিরুদ্ধে

১২৩
রাবি প্রতিনিধি : প্রজেক্ট আবেদনপত্রে সুপারিশ না করায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্সেস বিভাগের চেয়ারম্যানের সাথে উদ্ধত আচরণ ও টেবিল ভাংচুরের অভিযোগ উঠেছে  সহকারী প্রক্টর ড. হাকিমুল হকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোছা. ইসমত আরা বেগম।
মঙ্গলবার সকালে বিভাগীয় চেয়ারম্যানের কক্ষে এই ঘটনা ঘটে। এ সময় ওই শিক্ষক উত্তেজিত হয়ে টেবিলের কাঁচ ভাংচুর করেন। ওই শিক্ষকের উদ্ধত আচরণের একটি সিসিটিভি ফুটেজ প্রতিবেদকের কাছে রয়েছে।
জানা গেছে, ড. হাকিমুল হক একটি প্রজেক্টে আবেদন করেন। সেই আবেদন পত্রে সুপারিশ নেয়ার জন্য বিভাগের চেয়ারম্যান নিকট আসেন। কিন্তু এর পূর্বেও সহকর্মীদের সাথে তার অশোভন আচরণ এবং এই প্রজেক্ট আবেদনে যোগ্য না হওয়ায় বিভাগের চেয়ারম্যান সুপারিশ করেননি। এঘটনায় সুপারিশ করতে অনেক জোরাজোরি করার পর এক পর্যায়ে তিনি উত্তেজিত হয়ে টেবিলের কাঁচ ভাংচুর করেন।
বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, অধ্যাপক হাকিমুল হকের বিরুদ্ধে সহকর্মীদের সাথে অশোভন আচরণের আরও কয়েকটি অভিযোগ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টরের দায়িত্বে থাকায় তিনি এমন পাওয়ার প্রাকটিস করেন বলে জানা গেছে। এর আগে তিনি একটা বিষয় কে কেন্দ্র করে সহকর্মী অধ্যাপক মোইজুর রহমানকে মারতে উদ্ধত হন। আরেক সহকর্মী অধ্যাপক আফিয়া খাতুনকে তিনি ‘শুয়োরের  বাচ্চা” বলে গালি দেন। এঘটনায় ওই শিক্ষিকা জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। এছাড়াও দুই শিক্ষার্থীকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোছা. ইসমত আরা বেগম বলেন, মঙ্গলবার সকালে ড. আকিবুল হক আমার নিকট আসেন এবং তার আবেদন করা একটি প্রজেক্টে সুপারিশ করতে বলেন। কিন্ত তার আবেদনটি যোগ্য না হওয়ার কারনে আমি সুপারিশ করতে অস্বীকৃতি জানাই। সে আমাকে অনেক জোরাজোরি করার পরেও আমি তাতে সুপারিশ না করাই তিনি উত্তেজিত হয়ে আমার টেবিলের কাঁচ ভাংচুর করে।”
আবেদন যোগ্য না হওয়ার কারন জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রজেক্ট পাওয়ার জন্য একটা নীতিমালা আছে যে ওই প্রজেক্টগুলো পেতে হলে এই অর্থবছরে যদি কেউ পায় তাহলে সামনে অর্থবছরে সে আবেদনই করতে পারবে না। ড. আকিবুল হক গত অর্থবছরে পেয়েছ এজন্য সে এই অর্থবছরে এটির জন্য যোগ্য না। এছাড়াও এর আগে সে আমার সাথে দুর্ব্যবহার করেছে এবং আমাকে পাগল ও অশ্রাব্য ভাষায়  গালি দিয়েছে। যার ফলে আমি সুপারিশ করিনি।
এবিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত অধ্যাপক হাকিমুল হক বলেন,আমার একটি গবেষণা প্রজেক্ট সাবমিশনের শেষ সময় ছিল আগামীকাল (বুধবার)। আমি গতকাল (সোমবার) সারারাত জেগে প্রজেক্টটি প্রস্তুত করি। কিন্তু সকালে বিভাগের সভাপতির কাছে সুপারিশ নিতে গেলে তিনি পূর্বের কোনো ঘটনার জের ধরে আমার প্রজেক্টটি সাইন করেননি। এতে স্বাভাবিকভাবেই আমি রেগে যাই এবং টেবিলে আঘাত করলে কাঁচ ভেঙে যায়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান উল ইসলাম বলেন, আমার কাছে এখনো এধরনের কোন অভিযোগ আসেনি। যদি অভিযোগ আসে, তাহলে খতিয়ে দেখে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কারন উদ্ধত আচরণ আমাদের কারোর জন্যই কাম্য নয়।

Comments are closed.