সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। দ্রুতগতিতে পানি বৃদ্ধির ফলে জেলার শাহজাদপুর ও চৌহালীতে শুরু হয়েছে নদীভাঙন। ধসে গেছে রাউতারা বাঁধসহ অন্তত ১৫টি বসতভিটা ও বিস্তীর্ণ ফসলি জমি।
রোববার (১৯ জুন) সকাল ১০টায় সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের গেজ রিডার (পানি পরিমাপক) হাসানুর রহমান জানান, ১২ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি ৬ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে, কাজিপুর মেঘাই ঘাট পয়েন্টে গত ১২ ঘণ্টায় ১২ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে যমুনার পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি বৃদ্ধির ফলে কাজিপুর, সদর, চৌহালী, উল্লাপাড়া, বেলকুচি ও শাহজাদপুরের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। ইতিমধ্যেই জেলার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। বন্যাকবলিত এলাকার মানুষেরা ছুটছেন নিরাপদ আশ্রয়ে। এরই মধ্যে বিস্তীর্ণ ফসলি জমি প্লাবিত হওয়ায় কাঁচাপাট, তিল, কাউন, বাদাম, শাকসবজিসহ বিভিন্ন ধরনের উঠতি ফসল নষ্ট হচ্ছে। এতে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন কৃষকেরা।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড সিরাজগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম জানান, যমুনায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে আরও ৩ দিন। ভাঙন কবলিত চৌহালী ও শাহজাদপুরের ভাঙনরোধে কাজ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
পানি বৃদ্ধির ফলে শনিবার রাতে শাহজাদপুরের রাউতারায় প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বালির বাঁধ ভেঙে গেছে। এতে প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চলসহ বিস্তীর্ণ এলাকা। একই সঙ্গে উপজেলার কৈজুরি ইউনিয়নের পাচিল ও চৌহালী উপজেলার বাগুটিয়া ইউনিয়নের চলছে তীব্র নদী ভাঙন। গত ২৪ ঘণ্টায় এ দুটি এলাকার অন্তত ১৫টি বসতভিটাসহ বিস্তীর্ণ ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। ইতিমধ্যেই ভাঙন এলাকায় ৪০ হাজার জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। এছাড়া ভাঙন রোধে ৩০ হাজার জিও ব্যাগ প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা আকতারুজ্জামান জানান, বন্যার্তদের জন্য ইতিমধ্যেই ৯১১ মেট্রিক টন চাল, নগদ ২০ লাখ টাকা এবং ৪ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এগুলো বিতরণের জন্য স্ব-স্ব এলাকার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছ ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা চাওয়া হয়েছে। তালিকা অনুযায়ী বিতরণ করা হবে বলে তিনি জানান।
Comments are closed.