অবশেষে মেরামত করা হচ্ছে মরন ফাঁদ নামক নান্দাইবাড়ি বেড়িবাঁধ

0 ৩০৬

নওগাঁ প্রতিনিধি: দীর্ঘ প্রায় ৩৫বছর পর ছোট যমুনা নদীর নান্দাইবাড়ি তীর প্রতিরক্ষামূলক কাজ শুরু করা হয়েছে। বর্তমানে বাঁধের মাটির অংশের কাজ শেষ হয়ে ডাম্পিং ও প্লেসিং এর কাজ চলছে। আগামী একশত বছরের দীর্ঘস্থায়ীত্বের বিষয়টি বিবেচনা করে জিওব্যাগ ব্যবহার করা হচ্ছে। ছোট যমুনা নদীর নান্দাইবাড়ি-কৃষ্ণপুর ও মালঞ্চি বেড়িবাঁধটি রাণীনগর ও আত্রাই উপজেলাবাসীর দীর্ঘদিনের গলার কাটা হয়ে দাড়িয়েছে। প্রতিবছর নদীতে পানি এলে এই দুই উপজেলার বিশেষ করে রাণীনগর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের অর্ধ শতাধিক গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ ও কয়েক হাজার হেক্টর জমির ফসল অনিশ্চতার মধ্যে থাকতো।

অবশেষে স্থানীয় প্রশাসন ও নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফল হিসেবে নান্দাইবাড়ি বেড়িবাঁধের ১৫০ফুট অংশের প্রতিরক্ষামূলক কাজ শুরু হয়েছে। এতে করে নদীর ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে এই অঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ। অবশেষে মরণ ফাঁদ নামক বাঁধটি মেরামত করায় স্থানীয়রা বর্তমান সরকারের কাছে কৃতজ্ঞ। বাঁধের অবশিষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ অংশের মেরামত করার জন্য সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছে তীরবর্তি স্থানীয়রা।

নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার নান্দাইবাড়ি বেড়িবাঁধের ১৫০ফুট অংশের জন্য প্রায় ৩৯লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। গত বছরের ডিসেম্বর থেকে এই কাজ শুরু করা হয়। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে পুরো কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার আশা করা হচ্ছে। বাঁধের ডাম্পিং ও প্লেসিং এর জন্য ৩৫০কেজি জিওব্যাগ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

শনিবার বাঁধের ডাম্পিং এর কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার প্রবীর কুমার পাল, উপ-সহকারি প্রকৌশলী মাসুদ রানা, কার্য সহকারি আনেয়ার হোসেন, গোনা ইউনিয় পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হাসনাত খাঁন হাসান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোবারক আলী প্রমুখ। মো: হাসিবুল হাসান ঠিকাদার হিসেবে কাজটি সম্পন্ন করছেন। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মাহবুব আলম সাজু ও আনোয়ার হোসেন এসময় উপস্থিত ছিলেন।

স্থানীয় বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মোবারক আলী বলেন আমাদের জন্য এটি খুবই আনন্দের বিষয় যে গলার কাটা বাধটি অবশেষে স্থায়ী ভাবে মেরামত করা হচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে নদীতে পানি এলে বাড়িঘর ছেড়ে আসবাবপত্র নিয়ে আর উচু রাস্তায় গিয়ে আশ্রয় নিতে হবে না। জমির ফসল বন্যার পানিতে আর হারাতে হবে না। আমরা খুবই খুশি।

গোনা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল হাসনাত খাঁন হাসান বলেন বাঁধের শুধু নান্দাইবাড়ি অংশই নয় ধারাবাহিক ভাবে ঝুঁকিপূর্ন পুরো অংশেরই মেরামত করতে হবে দ্রুত। তা নাহলে নদীতে পানি এলে আবার কোন না কোন অংশ ভেঙ্গে যাবে। তবে আশার আলো এই যে বাঁধের কিছু অংশের মেরামত কাজ করা হচ্ছে। এটি অনেক চেষ্টার ফল। নদীতে পানি এলেই আমাদের চোখের ঘুম হারিয়ে যায়। তাই আমি বাঁধের অবশিষ্ট ঝুঁকপূর্ণ অংশের দিকে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার প্রবীর কুমার পাল বলেন সবার সার্বিক প্রচেষ্টায় আজ আমরা প্রথম দফায় বাঁধের অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ন অংশটুকু স্থায়ী ভাবে মেরামত করছি। আগামীতে সরকার বাহাদুর বরাদ্দ দিলে অবশিষ্ট অংশটুকুও আমরা স্থায়ী ভাবে মেরামত করার চেষ্টা করবো। দেশ ও জনগনের স্বার্থে সব সময় আমাদের এই চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.