‘আল্লাহকে ধন্যবাদ’ জানিয়ে ফিলিস্তিনিদের ‘বিজয় মিছিল’

ইসরায়েল-হামাস অস্ত্রবিরতি

0 ৩৩৬
ইসরায়েল-হামাস অস্ত্রবিরতির খবরে ফিলিস্তিনিদের উল্লাস। ছবি : রয়টার্স

এগারো দিনের রক্তক্ষয়ী সংঘাতের পর শেষ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতায় অস্ত্রবিরতির পথে হাঁটল ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র সংগঠন হামাস। মিসরের মধ্যস্থতায় এ

অস্ত্রবিরতিকে হামাস নিজেদের ‘জয়’ বলে ঘোষণা করেছে। আর, অস্ত্রবিরতির খবর প্রকাশ্যে আসতেই গাজায় বসবাসরত ফিলিস্তিনিরা রাস্তায় নেমে ‘বিজয় মিছিল’ করেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

 

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টা থেকে (বাংলাদেশ সময় শুক্রবার ভোর ৫টা) অস্ত্রবিরতি কার্যকর হয়।

 

স্থানীয় সময় ভোর রাত দুটোর সময় সংঘর্ষবিরতি কার্যকর হওয়ার কথা জানিয়েছিল হামাস।

 

ইসরায়েলের দাবি, গত ১১ দিনে ফিলিস্তিনের দিক থেকে চার হাজার তিনশোর বেশি রকেট উড়ে এসেছে ইসরায়েলের দিকে। এই হামলায় ১২ জন ইসরায়েলি প্রাণ হারিয়েছে। এদিকে ইসরায়েলের পালটা জবাবে প্রাণ হারিয়েছে ২৩২ জন ফিলিস্তিনি। নিহতদের মধ্যে ৬৫টি শিশু। এ ছাড়া ইসরায়েলি হামলায় আহত হয়েছে অন্তত এক হাজার ৯০০ জন।

 

মিসর বলেছে, অস্ত্রবিরতি যাতে লঙ্ঘন না হয়, তা নজরে রাখতে দুদিকেই প্রতিনিধি দল পাঠাবে তারা। এদিকে ইসরায়েল-হামাস অস্ত্রবিরতির প্রশংসা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

 

অস্ত্রবিরতি হওয়ায় বাইডেন বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের সমান অধিকার রয়েছে বেঁচে থাকার। তা ছাড়া স্বাধীনতা, উন্নতি এবং গণতন্ত্রের অধিকারও দুই দেশের নাগরিকদের সমান। দুই পক্ষের মধ্যে শান্তি বজায় রাখার উদ্দেশ্যে আমার প্রশাসন শেষ পর্যন্ত কূটনৈতিক মধ্যস্থতা চালিয়ে যাবে।’

গাজায় গত ১১ দিন ধরে ফিলিস্তিনিরা ইসরায়েলি হামলায় আশঙ্কায় উৎকণ্ঠায় পার করেছেন প্রতিটি মুহূর্ত। অস্ত্রবিরতির খবরে তাঁরা গাজার রাস্তায় নেমে আসেন। মসজিদগুলোর মাইকে মাইকে ঘোষণা করা হয়, ‘ইসরায়েলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের বিজয় অর্জিত হয়েছে।’

 

আরবিতে তারা উল্লসিত কণ্ঠে বলছিল, ‘আল্লাহ মহান, আল্লাহতায়ালাকে ধন্যবাদ।’

 

অস্ত্রবিরতির উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে ফিলিস্তিন সরকার। গত ১১ দিনের হামলা চলাকালে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের ভূমিকা অনেকটাই গুরুত্বহীন ছিল। হামাস ফাতাহ দ্বন্দ্বে পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুসালেমে ক্ষমতাসীন ফাতাহ দলের নিযুক্ত ফিলিস্তিনি প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শাতায়েহ বলেন, ‘মিসরের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক শক্তির যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সাফল্যকে আমরা স্বাগত জানাই।’

 

সম্প্রতি ইসরায়েল ফিলিস্তিনের জেরুসালেমে আল জাররাহ এলাকা দখলে নেওয়ার প্রচেষ্টা চালায়। এ নিয়ে সেখানকার ফিলিস্তিনি বাসিন্দাদের মধ্যে থেমে থেমে উত্তেজনা চলে আসছিল। গত ৭ মে পবিত্র মাহে রমজানের শেষ জুমা অর্থাৎ জুমাতুল বিদা আদায় করতে বিপুল মুসল্লি আল-আকসা মসজিদে সমবেত হলে ইসরায়েলি বাহিনী তাদের ওপর চড়াও হয়। মসজিদে ঢুকে মুসল্লিদের লক্ষ্য করে রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে ইসরায়েলি বাহিনী।

 

এর দুদিন পর শবে কদরেও আল-আকাসা মসজিদে ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে মুসল্লিদের সংঘর্ষ হয়। এর প্রতিবাদে গাজা সীমান্তে বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে গত ১০ মে থেকে গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল।

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.