উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন ও চলমান মামলার তথ্য গোপন শিক্ষা মন্ত্রনালয় ও অধিদপ্তর যোগসাজশে ভূয়া স্মারকে বগুড়ার দুই শিক্ষকের স্থগিত এমপিও চালুর চেষ্টা

0 ২৫৭

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া: নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে স্থায়ী চাকুরীচ্যুত দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন ও দায়রা জজ বগুড়া আদালতে মামলা চলমান। বগুড়ার শেরপুরের পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের নিবন্ধন হারানো শিক্ষকদ্বয় প্রকৃত স্মারক তথ্য গোপন করে ভ্রান্ত স্মারক উল্লেখ করে আবেদনের প্রেক্ষিতে পুনরায় এমপিও চালু করার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে খোদ শিক্ষা মন্ত্রনালয় ও অধিদপ্তরের কতিপয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এমপিও চালুর অবৈধ সুপারিশ বাতিলের দাবীতে শিক্ষা মন্ত্রনায়নের সচিব, শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে ভুক্তভোগী ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোজাফফর আলী।
অভিযোগ সুত্রে প্রকাশ, শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের কয়েকদফা তদন্তে ঘুষ, নানা দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও অসদাচারনের প্রমানের ভিত্তিতে ৩৭.০০.০০০০.০৭২.৩৯.০১৫.১৩.৩৪১ নং স্মারকে স্থায়ীভাবে চাকুরিচ্যুত ও ৪জি-৮০৪৬-ম/২০১০/২১৬ স্মারকে নিবন্ধন হারায় বগুড়ার শেরপুরের পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে তৎকালীন প্রধান শিক্ষক আবু সাঈদ শেখ ও সহকারি শিক্ষক আব্দুল মোমিন। চাকুরিচ্যুত হওয়ার ওই শিক্ষকদ্বয় চাকুরী ও সরকারি বেতন-ভাতা ফেরত পেতে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের সচিবসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের বিভিন্ন কর্মকর্তাকে বিবাদী করে মামলা দায়ের করেন। তাদের দায়েরকৃত মামলা পরিচালনার জন্য ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোজাফফর আলীকে দায়িত্ব দেন শিক্ষা মন্ত্রনালয়। সেই থেকে আদালতে মামলাগুলো চলমান থাকা অবস্থায় বিগত ১৫/৫/২০১৮ তারিখে ওই শিক্ষকদ্বয় বহিরাগতদের সহযোগীতায় জোরপূর্বক বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে বিতাড়িত করে অবৈধভাবে অলিখিত রেজুলেশনে স্মাক্ষর নিয়ে স্ব-পদে বহাল হয়। স্ব-পদে বহাল হয়ে এদিকে ওই শিক্ষকদ্বয় অন্যায়ভাবে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোজাফ্ফর আলীকে বরখাস্ত করে। এতে ওই ভুক্তভোগী শিক্ষক মোজাফ্ফর আলী বাদি হয়ে বিগত ৩/১২/২০১৮ ইং তারিখে উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন করলে আদালত পূর্বের চাকুরীচ্যুত শিক্ষকদ্বয়কে প্রশাসনিক কাজে সহযোগীতা না করতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন। এ নির্দেশ উপেক্ষা করে উচ্চ আদালতে চলমান মামলার তথ্য গোপন ও ভ্রান্ত স্মারক ২৯১/২৮.০৭.২০১৫ নং উল্লেখ করে নিজেদের এমপিও ফিরে পেতে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ে আবেদন করে ওই চাকুরীচ্যুত শিক্ষকদ্বয়। তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের উপ-সচিব কামরুল হাসান গত ২ এপ্রিল একটি স্মারকে ওই শিক্ষকদ্বয়ের এমপিও প্রদানের জন্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহা-পরিচালককে সুপারিশপত্র পাঠায়। এর প্রেক্ষিতেও উচ্চ আদালত ওই চাকুরীচ্যুত তথ্য গোপনকারী শিক্ষকদ্বয়ের পুনঃ এমপিওভুক্তির স্বপক্ষে আদেশের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা অধিদপ্তরসহ মন্ত্রনালয় ও শিক্ষাবোর্ডকে লিগ্যাল নোটিশ দেন। অন্যদিকে ওই চাকুরীচ্যুত শিক্ষকদ্বয় যাবতীয় মামলা ও অভিযোগ গোপন করে বেতনভাতা ও চাকুরী ফেরত পেতে প্রতিনিয়ত শিক্ষা মন্ত্রনালয় ও অধিদপ্তরের কতিপয় কর্মকর্তার সাথে জোগসাজশ ও গোপন আতাতে মেতে উঠেছে বলে বিশ^স্তসুত্রে জানা গেছে।
উচ্চ আদালতে মামলায় আইনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রকৃত তথ্য গোপনকারী চাকুরীচ্যুত শিক্ষকদ্বয়ের ভূয়া স্মারকে পুনঃ এমপিও চালুকরণ প্রক্রিয়া বাতিলপূর্বক এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের সচিব, উপ-সচিব, অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, সহ-পরিচালক, উপ-পরিচালক, শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান ও দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন ভুক্তভোগী ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক।
এ প্রসঙ্গে শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক- সেসিপ (মাধ্যমিক উইং) কাওছার আহমেদ বলেন, বগুড়ার শেরপুরের পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের তৎকালীন চাকুরীচ্যুত শিক্ষকদ্বয়ের বেতন-ভাতা ও চাকুরীতে পূর্নবহালের পরামর্শ সিদ্ধান্তে মন্ত্রনালয় চিঠি দিয়েছে। কাগজপত্র যাচাই-বাচাই চলছে, সত্যতা ও আইনীভাবেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ প্রসঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের উপ-সচিব(মাধ্যমিক) কামরুল হাসানের ব্যাক্তিগত মোবাইল ০১৭৯৯০৫০৪০৩ ও ৯৫৪০৫১৫(অফিস) নম্বরে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
তবে এ বিষয়ে আইনের প্রতি বিশ^াস রয়েছে, ন্যায় বিচার পেতে আমি উচ্চ আদালতসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছি, উপযুক্ত বিচার পাবো বলে ভুক্তভোগী ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোজাফফর আলী আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.