এবারের বাজেট কল্পনাপ্রসূত, মনগড়া ও অবাস্তব : জি এম কাদের

0 ৩৫৮

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদের বলেছেন, ‘২০২১-২০২২ সালের যে বাজেট পেশ করা হয়েছে, তা কল্পনাপ্রসূত, মনগড়া ও অবাস্তব। আন্দাজে করা এই বাজেট বাস্তবায়নযোগ্য নয়। বাজেটে বিশাল ঘাটতি রয়েছে, তা পূরণ করতে যে ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে, তা বাস্তবসম্মত নয়। এই বাজেট ব্যাপকভাবে সংশোধন বা রদবদল করতে হবে।’

গতকাল বৃহস্পতিবার বাজেট অধিবেশন থেকে বের হয়ে জাতীয় সংসদের টানেলে গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে এ কথা বলেন জি এম কাদের।

 

এ সময় বিরোধীদলীয় উপনেতা আরও বলেন, ‘স্বাস্থ্য খাতে নামমাত্র বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। সামাজিক বেষ্টনীখাতে যা দেওয়া হয়েছে, তা বাজেটের তুলনায় অত্যন্ত কম। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা খাতে অনেক কম বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।’

 

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘ধারণার বশবর্তী হয়ে অর্থমন্ত্রী বাজেট তৈরি করেছেন। এই বাজেট এতটাই পরিবর্তন করতে হবে যে, তাতে প্রণীত বাজেটের প্রকৃত রূপ থাকবে না। বাজেটে খরচ বাড়িয়েছেন, বাড়ানো দরকারও আছে, কিন্তু অর্থ আহরণের বিষয়ে তারা হোঁচট খেয়েছেন। গেল বাজেটের লক্ষ্য অনুযায়ী ১০ মাসে ৬০ ভাগও রাজস্ব আদায় করতে পারেনি। সামনের দুই মাসে কতটা আদায় করতে পারবেন, তাও জানেন না। যেটা প্রাক্কলন করেছেন, তাতে যথেষ্ট পরিমাণে ঘাটতি রয়েছে। জিডিপির ৬ দশমিক ২ ভাগ ঘাটতির বাজেট এর আগে আর হয়নি। ঘাটতির এই বাজেটে যত সুন্দরভাবে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে এবং বলা হয়েছে, তা ডিটেইলে দেখা গেছে অনেক কিছুই ফাঁক আছে।’

 

জি এম কাদের বলেন, ‘যারা করোনাকালে কর্মহীন হয়েছে এবং দারিদ্রসীমার নিচে চলে গেছে, তাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি বা তাদের জন্য আর্থিক সহায়তার সুস্পষ্ট দিক-নির্দেশনা এই বাজেটে নেই। স্বাস্থ্য খাতের জন্য সাধারণ মানুষের বিপুল আকাঙ্ক্ষা ছিল। এবার স্বাস্থ্য খাতে বড় ধরনের একটা বরাদ্দ হবে, এমন আশা ছিল সাধারণ মানুষের। কিন্তু বাজেটে অত্যন্ত সামান্য বৃদ্ধি দেখানো হয়েছে। এটা সাধারণভাবে বলা যায় রুটিনবৃদ্ধি। কোনো ক্রাইসিসের জন্য এই বৃদ্ধি সামান্য এবং অপ্রতুল।’

 

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘বাজেটের ঘাটতি পূরণে বিদেশি ঋণ, স্বল্পসূদে ঋণ এবং বিভিন্ন খাত থেকে অর্থ প্রাপ্তির যে কথা বলা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ অনিশ্চিত। আগামীদিনের অর্থনৈতিক যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে, তাতে এটা আদৌ অর্জন করা সম্ভব হবে কি না, তা বলা যাচ্ছে না। তাই রাজস্ব প্রাপ্তিতে যেমন বিশাল সমস্যা হতে পারে, তেমনিভাবে বাজেট অনুযায়ী অর্থায়নেও সমস্যা হতে পারে। তা ছাড়া যে সব বিষয়ে অগ্রাধিকার দিতে হবে তা মুখে বলেছেন, কিন্তু কাগজে মোটেই নেই।’

 

এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ, মুজিবুল হক চুন্নু, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও অতিরিক্ত মহাসচিব (ঢাকা বিভাগ) লিয়াকত হোসেন খোকা, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ, পনির উদ্দিন আহমেদ, ভাইস চেয়ারম্যান পীর ফজলুর রহমান মিজবাহ প্রমুখ।

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.