আহসানুল হক জুয়েল, কিশোরগঞ্জ থেকে
আওয়ামী লীগের ‘ঘাঁটি’ হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম জেলা কিশোরগঞ্জ জেলা। ১৩টি উপজেলা নিয়ে এ জেলা গঠিত। ৫ আগস্ট ২০২৪-এর পর থেকে আওয়ামী লীগের সকল নেতা এবং চিহ্নিত কিছু কর্মী আত্মগোপনে রয়েছে। বর্তমানে পুরো জেলায় রাজনীতিতে সক্রিয় রয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
কিশোরগঞ্জকে বলা হতো আওয়ামী লীগের ঘাঁটি। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর সারা জেলায় এখন দলের কোনো কার্যালয়ই নেই। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে শহরের প্রধান সড়কে স্থাপিত কিশোরগঞ্জ জেলা কার্যালয়। নেতারা সবাই আত্মগোপনে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এখন বিএনপি সহ অন্যান্য দলে যোগদান করে মামলা-হামলা থেকে বাঁচার সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। কোনো কোনো আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী অর্থের বিনিময়ে অন্য দলের পদপদবিতে স্থান করে নিচ্ছে। অনেক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর তাদের মুখোশ পাল্টে ফেলেছে। ঐ সকল নেতাকর্মীর ভাবখানা দেখলে মনে হয়, তারা জীবনে কোনোদিন আওয়ামী লীগ করেনি কিংবা আওয়ামী লীগ সমর্থন করেনি। একটি সূত্র দাবি করেছে, প্রচুর অর্থের বিনিময়ে অন্য দলেস্থান করে নেওয়ারও খবর পাওয়া যাচ্ছে। এ সকল নেতাকর্মী আওয়ামী লীগের বদনাম বলতেও এখন দ্বিধাবোধ করছেন না। এ সকল নেতাকর্মী সুবিধাবাদ জিন্দাবাদ এ স্লোগানের ভিত্তিতে অন্য দলে জায়গা করে নেওয়ার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। কিছু কিছু নেতাকর্মী এখনো নিষিদ্ধ দল আওয়ামী লীগের পক্ষে ফেসবুকের মাধ্যমে কিংবা দেয়াললিখনের মাধ্যমে অথবা জয় বাংলা স্লোগান দেয়ালে লিখে তাদের অস্তিত্ব জানান দেয়ার চেষ্টা করছে। কিশোরগঞ্জ জেলার যে সকল গণমাধ্যম কর্মী আওয়ামী লীগের দোসর হিসেবে কাজ করতো, তারা এখন আর আওয়ামী লীগকে পছন্দ করে না। ঐ সকল গণমাধ্যম কর্মীরাও মুখোশ পাল্টে ফেলেছে। কোনো কোনো গণমাধ্যম কর্মী এখনো পলাতক রয়েছেন। আবার কেউ কেউ ৪-৫ মাস পলাতক থেকে এলাকায় চলে এসেছেন। উপজেলার আওয়ামী লীগের কতিপয় নেতাকর্মীরা কেউ কেউ জেলা শহরে আশ্রয় নিয়েছেন কিংবা রাজধানী ঢাকা শহরে অবস্থান করছেন। যে সকল নেতাকর্মী অন্যান্য দলের পদপদবি নিতে পেরেছেন সেই সকল নেতাকর্মী এলাকায় চলে এসেছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যে সকল নেতাকর্মী অপরাধ প্রবণতার সাথে জড়িত ছিল, সেই সকল নেতাকর্মী গত ১১ মাস যাবত আত্মগোপনে রয়েছে। পুলিশ তাদের অনুসন্ধান করলেও তাদেরকে এলাকায় খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আওয়ামী লীগের মিত্রদল হিসেবে পরিচিত জাতীয় পার্টির অবস্থাও অত্যন্ত নাজুক। জাতীয় পার্টির অনেক নেতাকর্মী অন্যান্য দলে স্থান করে নেওয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে। এই জাতীয় পার্টি দলটিকে এ জেলার ভোটাররা স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের সহযোগী দল হিসেবেই মনে করেন। সারা জেলায় এদের কোনো প্রকার রাজনৈতিক তৎপরতা নেই। এদিকে একেবারে বিপরীত চিত্র বিএনপি ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর। এই দুই দলের কার্যালয় সরগরম, বেড়েছে নেতা-কর্মীদের নিয়মিত আনাগোনা। ৫ আগস্টের পর ১৫ বছর বন্ধ থাকা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জেলা কার্যালয়সহ জেলার ১৩ উপজেলার সকল কার্যালয় খোলা হয়েছে। রাজনীতির ময়দানে নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কোনো পূর্ণাঙ্গ কমিটি জেলা ও উপজেলায় এখনো হয়নি।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রাষ্ট্রপতি, দলের সাধারণ সম্পাদকসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পদে ছিলেন কিশোরগঞ্জের নেতারা। জেলা আওয়ামী লীগের সব নেতারা এখন আত্মগোপনে। জেলা শহরের দলীয় কার্যালয় বুলডোজার দিয়ে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে থাকা কার্যালয়গুলোর বেহাল অবস্থা। কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের সাবেক দুই সংসদ সদস্য নিকলী বাজিতপুর আসনের জুতা ব্যবসায়ী আফজল হোসেন ও কটিয়াদী ও পাকুন্দিয়া আসনের সোহরাব হোসেন বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। বাকি তিনজন সংসদ সদস্য আত্মগোপনে। এছাড়া কিশোরগঞ্জ-৩ (তাড়াইল-করিমগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক (চুন্নু) কোণঠাসা অবস্থায় আছেন। জেলার বাসিন্দা সাবেক রাষ্ট্রপতি এডভোকেট মো. আবদুল হামিদের দেশত্যাগ করা নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা চললেও অবশেষে তিনি গত কয়েকদিন আগে দেশে ফিরেছেন।
গত বছরের এ সময়েগুলোয় কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির কার্যালয়ে ছিল নীরবতা। নেতা-কর্মীরা ভয়ে সেখানে বসতে পারতেন না। একই অবস্থা ছিল জেলা জামায়াতে ইসলামীর কার্যালয়ের। এখন এ দল দুটির কার্যালয় সবসময়ই জমজমাট। নেতা-কর্মীদের পদচারণে মুখর থাকে দলীয় কার্যালয়গুলো। নেতা-কর্মীরাও ফুরফরে মেজাজে আছেন। বিএনপির যেসব নেতা-কর্মী নানা ঝামেলা এড়াতে দলের কর্মসূচি থেকে দূরে থাকতেন, তাঁরা এখন কোনো কর্মসূচি হলে ঝাঁপিয়ে পড়ছেন। বিএনপি আগের কার্যালয় ছেড়ে নতুন করে বড়োসড়ো কার্যালয় নিয়েছে। এদিকে একুশ বছর পর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী জেলা শাখার আয়োজনে গত ৩১ মে কিশোরগঞ্জ পুরাতন স্টেডিয়ামে এক বিশাল কর্মী সম্মেলন করে।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরা সরব। দলের নিবন্ধন এবং গত ২৪ জুন ২০২৫ দলের প্রতীক দাঁড়িপাল্লাও নিবন্ধন ফিরে পাওয়ায় অপরদিকে জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলাম মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ থেকে খালাস পাওয়ায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে প্রাণ চাঞ্চল্য ফিরে এসেছে।
এদিকে কিশোরগঞ্জে এনসিপির কোনো পূর্ণাঙ্গ কমিটি এখনো হয়নি। যাঁরা জাতীয় নাগরিক কমিটিতে ছিলেন, তাঁদের মধ্যে অনেকে এনসিপির ব্যানারে নতুন সদস্য সংগ্রহ ও গণসংযোগ এবং নানা সামাজিক কাজ করে যাচ্ছেন। এছাড়া গণঅধিকার পরিষদ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় কমিটি করার পাশাপাশি গণসংযোগ, সাংগঠনিক কার্যক্রমসহ চালিয়ে যাচ্ছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ অন্যান্য ইলামিক দলগুলোর তৎপরতা বেড়েছে। বাম দলের কর্মসূচি অনেকটাই কার্যালয়কেন্দ্রিক হয়ে গেছে।
কিশোরগঞ্জ জেলার রাজনীতির দৃশ্যপট পুরোটাই পাল্টে গেছে। এখন জেলার রাজনীতির মাঠে বিএনপি আর জামায়াতে ইসলামী বেশ সক্রিয়। দল দুটি সংগঠনকে গোছানোর পাশাপাশি আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ভোটের মাঠ গোছাচ্ছে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজ নিজ নির্বাচনী আসনে এখন বেশ সক্রিয়। সুযোগ পেলেই জনসংযোগের পাশাপাশি যোগ দিচ্ছেন সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কিশোরগঞ্জ জেলার ছয়টি সংসদীয় আসনে তাদের সম্ভাব্য প্রার্থীর নামের তালিকা ঘোষণা করেছে। বিএনপিসহ অন্য দলগুলো এখন পর্যন্ত তাদের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নামের তালিকা প্রকাশ করতে পারিনি। জেলার পাঁচটি আসনে জামায়াতে ইসলামীর একক প্রার্থী থাকলেও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির একাধিক প্রার্থী রয়েছে। বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা মনোনয়ন পাওয়ার জন্য দলের কেন্দ্রীয় দপ্তরের নেতাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন; এমনকি লন্ডনে অবস্থিত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে অনেক প্রার্থীরা যোগাযোগ করছেন।
কিশোরগঞ্জের ছয়টি সংসদীয় আসনে বিএনপি এখনো সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা না করলে দলের নেতাকর্মীরা গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ছয়টি আসনে ছয়জন সম্ভাব্য প্রার্থী, তাঁরা সবাই নিজ নিজ এলাকায় ইতোমধ্যেই গণসংযোগসহ নানা কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন।
কিশোরগঞ্জ জেলায় ছয়টি সংসদীয় হলো কিশোরগঞ্জ-১ (সদর-হোসেনপুর), কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া), কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল), কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম), কিশোরগঞ্জ-৫ (বাজিতপুর-নিকলী) ও কিশোরগঞ্জ-৬ (ভৈরব-কুলিয়ারচর)।
উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের আগে কিশোরগঞ্জ জেলায় সংসদীয় আসন ছিল ৭টি। ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন জেলার ১টি আসন কমিয়ে ঢাকায় একটি আসন বৃদ্ধি করেন ।
কিশোরগঞ্জ-১ (কিশোরগঞ্জ-হোসেনপুর ১৬২) আসনটি ১৯৯১ সালে বিএনপির দখলে ছিল। এরপর ১৯৯৬ সাল থেকে এখানে টানা পাঁচবার সংসদ সদস্য ছিলেন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে তিনি মারা গেলে এখানে সংসদ সদস্য হন তাঁর ছোট বোন চিকিৎসক জাকিয়া নূর (লিপি)।
এ আসনে বিএনপি থেকে প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে আছেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি রেজাউল করিম খান (চুন্নু), জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাসুদ হিলালী, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওয়ালী উল্লাহ রাব্বানী, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম, সহ-সভাপতি রুহুল হোসাইন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল, ঢাকা মহানগর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা খোকন ও জেলা বিএনপির সদস্য মো. আতিকুর রহমান। এ আসনে জামায়াতের একক প্রার্থী হিসেবে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মোসাদ্দেক ভূঁইয়ার নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদি-পাকুন্দিয়া ১৬৩) আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে নাম শোনা যাচ্ছে জেলা বিএনপির তিন সহসভাপতি জালাল উদ্দীন, আশফাক আহমেদ ও রুহুল আমিন আকিল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহীদুজ্জামান কাকনের। এছাড়া এখানে জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে জনসংযোগ করছেন শিবিরের সাবেক ছাত্রনেতা মাওলানা শফিকুল ইসলাম মোড়ল।
কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল ১৬৪) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বেকায়দায় আছেন। এখানে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে নাম শোনা যাচ্ছে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী এম ওসমান ফারুক, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম মোল্লা ও জালাল মোহাম্মদ গাউস, যুববিষয়ক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ও জেলা বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক এরশাদ আহসানের। এখানে জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে চিকিৎসক কর্নেল (অব.) অধ্যাপক জেহাদ খানের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জেলা কমিটির সভাপতি মাওলানা আলমগীর হোসাইন তালুকদার ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রবাসী এ কে এম আলমগীর এলাকায় পোস্টার লাগিয়েছেন।
কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম ১৬৫) আসন থেকে টানা বেশ কয়েকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। ২০১৩ সালে তিনি রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হলে পরপর চারবার সংসদ সদস্য হন তাঁর বড় ছেলে রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক। ৫ আগস্টের পর থেকে রেজওয়ান আত্মগোপনে আছেন। এ আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন চাইবেন দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান। এছাড়া জাতীয়তাবাদী হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট সুরঞ্জন ঘোষ, ড্যাব নেতা অধ্যাপক ফেরদৌস আহমেদ লাকী, অবসরপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক আবদুর রহিম মোল্লা, জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলামের নাম শোনা যাচ্ছে। জামায়াতের প্রার্থী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা আইনজীবী শেখ মো. রোকন রেজার নাম ঘোষণা করা হয়েছে এবং তিনি নিয়মিত গণসংযোগ করে যাচ্ছেন।
কিশোরগঞ্জ-৫ (নিকলী-বাজিতপুর ১৬৬) আসনে কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান ইকবাল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদরুল মোমেন মিঠু বাজিতপুরের সাবেক পৌর মেয়র এহসান কুফিয়া, জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাধারণ সম্পাদক হাজি মাশুক মিয়া ও বিএনপি নেতা মীর জলিলের তৎপরতা দেখা যাচ্ছে। আসনটি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান ও ১২দলীয় জোটের সমন্বয়ক সৈয়দ এহসানুল হুদা। বিএনপির নেতা-কর্মীরা যেন তাঁকে সহযোগিতা করেন, সে জন্য কেন্দ্রীয় বিএনপি থেকে রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত একটি চিঠিও ইস্যু করা হয়েছে।
এছাড়া রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুমের বাড়ি এখানে। তিনি সংসদ সদস্য পদে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে জানা গেছে। কেন্দ্রীয় মজলিসে সূরা সদস্য ও জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর অধ্যাপক মো. রমজান আলীর নাম প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে দলটি। তিনি নিয়মিত নির্বাচনী এলাকায় গণ সংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।
কিশোরগঞ্জ-৬ (কুলিয়ারচর-ভৈরব ১৬৭) এ আসনে বিএনপি থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সম্ভাবনা কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি বিশিষ্ট শিল্পপতি মো. শরীফুল আলমের। জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী ভৈরব উপজেলা আমীর মাওলানা কবির হোসাইন।
এদিকে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী দল দুটি সারা জেলায় তাদের সাংগঠনিক তৎপরতা ব্যাপকভাবে অব্যাহত রেখেছে। অপরদিকে জাতীয় পার্টির সারা জেলায় কোনো রাজনৈতিক তৎপরতা নেই।
কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শরীফুল আলম গণমাধ্যমকে বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে নির্বিঘ্ন ও বাধাহীন পরিবেশে দলীয় কর্মসূচি, সভা-সমাবেশসহ নানা সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড করা যাচ্ছে। প্রতিটা আসনে বিএনপির নেতা-কর্মীরা এখন সক্রিয়। তিনি আশা করছেন, আগামী নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ জেলার ছয়টি আসনেই বিএনপির প্রার্থীরা বিপুল ভোটে জয় লাভ করবে।
কিশোরগঞ্জ জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর অধ্যাপক মো. রমজান আলী বলেন, ইতোমধ্যে ছয়টি আসনে জামায়াতে ইসলামীর সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। তাঁরা এলাকায় গণসংযোগ করছেন, প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। তিনি আশা করেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে জেলার ছয়টি আসনেই জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীরা ভালো করবেন।
তথ্যসূত্র: সাপ্তাহিক সোনার বাংলা, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১২:৪০