কোন ধরনের খারাপ কাজ করে খবরের শিরোনাম হতে চাই না -আইজিপি

১৯৫

স্টাফ রিপোর্টার : কোন ধরনের খারাপ কাজ করে খবরের শিরোনাম হতে চাই না। আমরা আমাদের সাফল্য গাঁথা আমাদের অর্জনের মাধ্যমে আমরা সংবাদ শিরোনাম হতে চাই। সব সময় তোমরা যে পোষাকটি পড়ে আছো, এই পোষাকের সবোচ্চ মর্জাদা, নিষ্ঠতা অর্জনে কাজ করতে হবে। পুলিশ বাহিনী জনগনের সেবক। আমরা এমন কোন আচরণ করতে চাইনা, যাতে করে জনগণ ক্ষুব্ধ হয়। আমরা জনগণের কাছের মানুষ হিসেবে পাশ্বের মানুষ হিসেবে তাদের মত করে কাজ করতে চাই।

বৃহস্পতিবার সকালে রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে ‘চাকরি নয়, সেবা’ শ্লোগানে ১৬৪ তম ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল ব্যাচের ছয় মাস মেয়াদী মৌলিক প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ এ মন্তব্য করেন।

আইজিপি বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ সবসময় জনগণের প্রয়োজনে পাশে থেকে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছে। করোনাকালে যখন স্বামী স্ত্রীকে ছেড়ে চলে গেছে, স্ত্রী স্বামীকে ছেড়ে গেছে, ছেলে বাবাকে ছেড়ে গেছে, মেয়ে মাকে ছেড়ে গেছে; তখনও বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যরা ওই সব মানুষের পাশে থেকেছে। তাদের দেখাশুনা করেছে, নানাভাবে সহায়তা করেছে, মানুষের প্রয়োজনের স্বার্থে নিজেদের জীবন বাজি রেখে দায়িত্ব পালন করেছে। এজন্য ১০৬ জন পুলিশ সদস্যকে জীবনও দিতে হয়েছে।

ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, সমাজের চাহিদার স্বার্থে আমরা ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার চালু করেছি। যেখানে প্রতিমাসে হাজার হাজার ভিকটিমকে সহায়তা দেয়া হচ্ছে। জরুরি মুহুর্তে পুলিশের সহায়তা পেতে ৯৯৯ সেবা চালু করেছি। এর মাধ্যমে জনগণ দ্রুত পুলিশের সেবা গ্রহণ করতে পাচ্ছে।

তিনি বলেন, সমাজ পরিবর্তনশীল, সমাজে সংঘটিত অপরাধও পরিবর্তনশীল। তাই নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পুলিশ বাহিনিতে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রযুক্তির সাহায্যে সাইবার অপরাধ দমনে পুলিশ অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে।
টিআরসিদের উদ্দেশে আইজিপি বলেন, তরুণ সমাজকে যেকোনো মূল্যে রক্ষা করতে হবে।

সেইসঙ্গে সকল ধরনের জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস নির্মূলে তোমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। এজন্য শুধু মৌলিক প্রশিক্ষণের ওপর নির্ভর করলে চলবে না। নিত্য নতুন টেকনিক ও কলাকৌশল সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে হবে, যাতে দেশের স্বার্থে কাজ করা যায়। প্রধানমন্ত্রীর উন্নত বাংলাদেশ গঠনে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণের প্রতি আরও গুরুত্ব দিতে হবে।

এসময় দেশের অর্থনীতিকে তরান্বিত করতে টিআরসিদেরকে আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন ও নিজেদেরকে প্রতিনিয়ত যোগ্য করে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সরকার যে বেতন দেয় তার বিনিময়ে জনগণের স্বার্থে দায়িত্ব পালন করতে হবে, যাতে দেশের মানুষ নিশ্চিন্ত ও নিরাপদে থাকে। মনে রাখতে হবে, তোমরা জনগণের সেবক। জনগণের সেবার জন্য জনগণের কাছের মানুষ হিসেবে প্রয়োজনে কাজ করতে হবে।

আইজিপি টিআরসিদের সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের পরামর্শ দিয়ে বলেন, পুলিশ বাহিনীর কেউ অন্যায় করলে তার দায় অন্যায়কারীর নিজের, বাহিনির নয়।

প্রশিক্ষণরত টিআরসিদের মধ্য থেকে আইন বিষয়ে শ্রেষ্ঠ টিআরসি নির্বাচিত হন বিশাল এবং মাঠ বিষয়ে শ্রেষ্ঠ নির্বাচিত হন সিয়াম সিদ্দিকী সাগর। প্যারেডে মোট ৪৫৩ জন প্রশিক্ষণার্থী অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের শুভ উদ্বোধনসহ টিআরসিদের মাঝে সার্টিফিকেট বিতরণ এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগদান করেন।

অনুষ্ঠানে সারদা পুলিশ একাডেমীর প্রিন্সিপ্যাল আবু হাসান মুহম্মদ তারিক, পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি সভানেত্রী বেগম জীশান মীর্জা, রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি আব্দুল বাতেন, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক সহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

Comments are closed.