‘খারাপ পারফরম্যান্সের জন্য ডমিঙ্গোকে বলির পাঁঠা বানানো হয়’

১৯৪
ছবি- ক্রিকইনফো

বাংলাদেশের দক্ষিণ আফ্রিকায় সফরে যাওয়ার আগে কোচ হিসেবে রাসেল ডমিঙ্গোর অবস্থান ছিল নড়বড়ে। প্রোটিয়া এই কোচ তো সাংবাদিকদের থেকে সরাসরি প্রশ্ন পেয়েছেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকা কী আপনার শেষ সফর?’ যদিও সেই প্রশ্ন এড়িয়ে গেছেন ডমিঙ্গো। তার ওপর দলের সঙ্গে জেমি সিডন্স টাইগারদের কোচিং প্যানেলে যোগ দেওয়াতে অনেকে ডমিঙ্গোর এপিটাফও দেখে ফেলেছিলেন।

তবে দক্ষিণ আফ্রিকায় ঐতিহাসিক ওয়ানডে সিরিজ জেতায় ডমিঙ্গোর অবস্থান আবার জোরালো হয়, সর্বশেষ ডারবান টেস্টে

বাংলাদেশ হেরে যায় ২২০ রানের ব্যবধানে। এবার অবশ্য কোচ নয়, দলের সিনিয়র ক্রিকেটারদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন তো সরাসরি বললেন, ‘খারাপ পারফরম্যান্সের পর আমরা শুধু শুধু ডমিঙ্গোকে বলির পাঁঠা বানানোর চেষ্টা করি।’

ডারবান টেস্টে শেষ ইনিংসে ব্যাট করা কঠিন হওয়া সত্ত্বেও টাইগার দলের অধিনায়ক মুমিনুল হক টসে জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন। ফলস্বরুপ টেস্টের শেষ ইনিংসে খুব বাজেভাবে অলআউট হয় বাংলাদেশ। মাত্র ৫৩ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস। যদিও কোচ ডমিঙ্গো বাংলাদেশকে আগে ব্যাট নেওয়ার পরামর্শই দিয়েছিলেন। একই পরামর্শ ছিল অ্যালান ডোনাল্ডেরও। তবুও কেন ক্রিকেটাররা কোচের পরামর্শ শুনলেন না, এমন প্রশ্ন সামনে চলে আসে।

এসব বিষয়ে ক্রিকবাজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ক্রিকেটার, কোচ এবং ড্রেসিং রুম নিয়ে কথা বলেন বিসিবি বস পাপন। তিনি বলেন, ‘সবার সঙ্গে মুখোমুখি বসার আগে এই বিষয়ে কিছু বলা কঠিন। আমি যতদূর জানি, ডমিঙ্গো এবং ডোনাল্ড দুইজনেই উইকেট সম্পর্কে তাদের জানিয়েছে এবং শেষ ইনিংসে ব্যাটিং কঠিন জানিয়েছিল।

নিশ্চিতভাবে তারা (দক্ষিণ আফ্রিকান কোচিং স্টাফ) সে কন্ডিশন সম্পর্কে বেশি ভালো জানে। আমি যতটুকু শুনেছি, এটা (ফিল্ডিং নেওয়া) মুমিনুলের নিজের সিদ্ধান্ত। কিছু সিনিয়র ব্যাটার আগে ব্যাট করতে রাজি হয়নি বলে এমন সিদ্ধান্ত। সে কেবল সিনিয়রদের কথাই শুনেছে।’

পাপন আরও যোগ করেন, ‘তাদের (টাইগারদের দক্ষিণ আফ্রিকান কোচিং স্টাফ) ডেরায় গিয়ে তাদের মূল্য না দেওয়াটা খারাপ। আমরা যদি কোচের কথার মূল্য না দেই, সেটা আমাদের ভবিষ্যতের জন্য খারাপ হবে। আমি যখন কোচের সঙ্গে কথা বলেছি, সেখানে কিছু খেলোয়াড়ের সঙ্গে তার কথার অনেক পার্থক্য ছিল।

ইতোপূর্বে কোচের সঙ্গে যে সমস্যার কথা শুনা গেছিল, সেগুলো সমাধান হয়েছিল। কিন্তু দেশের বাইরে খেলতে গিয়ে আবারও কিছু সমস্যা তৈরি হয়েছে। আমাদের এটা পরিবর্তন করতে হবে।’

এরপরই কোচ এবং ক্রিকেটারদের নিয়ে পাপন আরও যোগ করেন, ‘আমার মনে হয় যেকোনো খারাপ পারফরম্যান্সের পর আমরা শুধু শুধু ডোমিঙ্গোকে বলির পাঁঠা বানানোর চেষ্টা করি। সব ক্রিকেটাররা কী তার কথা শোনে? আমি জানতে চাই, ক্রিকেটাররা কী সত্যিই শোনে তারা (কোচরা) কী বলতে চায়?

যেসব ক্রিকেটাররা ডোমিঙ্গোর কথা শোনে, তারা ঠিকই উন্নতি করছে। আমি লিখে দিতে পারি, যদি ১৫ জন ক্রিকেটারকে ডাকি, অন্তত ১১ জন বলবে ডোমিঙ্গো দুর্দান্ত কোচ। দুই-তিনজন হয়তো আছে, যারা ভিন্ন কথা বলবে এবং কোচের কথা শোনে না। দেশে আসলে তাদের সঙ্গে বসে সব সমস্যার সমাধান করব।’

Comments are closed.