খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার দাবি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত : তথ্যমন্ত্রী

0 ৩৬৬
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। ফাইল ছবি

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘খালেদা জিয়া অসুস্থ, হাসপাতালে আছেন, তিনি দ্রুত আরোগ্য লাভ করুন। মহান স্রষ্টার কাছে আমি প্রার্থনা করি, তিনি দ্রুত আরোগ্য লাভ করে সহসা ঘরে ফিরে যান। আদালতে তাঁর জামিন না হওয়া সত্ত্বেও আমাদের নেত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে সংবিধানে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে করোনা মহামারির শুরুতেই তাঁকে প্রশাসনিক ক্ষমতা বলে মুক্তি দিয়েছেন এবং সেটি দুই দফা বর্ধিত করা হয়েছে।’

‘কিন্তু খালেদা জিয়ার এই অসুস্থতার অজুহাতকে সামনে এনে বিদেশ নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হচ্ছে। করোনার চিকিৎসা তো আমাদের দেশে যা, ইংল্যান্ডেও তা, সিঙ্গাপুরেও তা, ইউরোপেও তা। সুতরাং এই ধরনের দাবি আসলে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’, যোগ করেন ড. হাছান।

 

আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে বাংলাদেশ কৃষক লীগ আয়োজিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে ঈদ উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ কথা বলেন। দেশবিরোধী রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ ভ্যানগার্ড হিসেবে কাজ করবে বলেও এ সময় উল্লেখ করেন তিনি।

 

করোনায় আক্রান্ত খালেদা জিয়া বর্তমানে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় তাঁকে সিসিইউতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ অবস্থায় তাঁকে দেশের বাইরে নিয়ে চিকিৎসা করানোর কথা ভাবছে দল ও পরিবার। এরই মধ্যে বিষয়টি নিয়ে বিএনপির মহাসচিব স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথাও বলেছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ ব্যাপারে গণমাধ্যমে বলেছেন, এটি সরকারের নয়, আদালতের বিষয়।

 

‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করলেই দুষ্কৃতকারীরা রেহাই পাবে না’

 

করোনা মহামারির মধ্যেও দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র থেমে নেই উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যখন স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী, মুজিব শতবর্ষ পালন করছি, তখন ২৬ থেকে ২৮ মার্চ সারা দেশে হেফাজতের ব্যানারে তাণ্ডব চালানো হলেও এতে অংশগ্রহণ ছিল বিএনপি-জামায়াতের। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে মাঝে মধ্যে তাঁরা দেখা করেন। কিন্তু দেখা-সাক্ষাতের কারণে দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ব্যাহত হবে না। কারণ দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমরা বদ্ধপরিকর।’

 

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সব ষড়যন্ত্র, প্রতিকূলতা, প্রতিবন্ধকতা আমাদেরকেই উপড়ে ফেলতে হবে। আমরা কারো ওপর ভরসা করব না। আমরা যখন বিরোধী দলে ছিলাম, বুকে পাথর বেঁধে লড়াই-সংগ্রাম করেছি এবং সব প্রতিবন্ধকতা উপড়ে ফেলে আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করেছিল। তাই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বলব, আজকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকার কারণে যেন আমাদের আলস্যতায় পেয়ে না বসে।’

 

কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন। তিনি বলেন, ‘দেশ ও দেশের মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিবারাত্রি নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। অন্যদিকে বিএনপির রাজনীতি শুধু খালেদা জিয়াকে নিয়ে। তাদের কথায় মনে হয়, দেশের জনগণের চিকিৎসার কোনো দরকার নাই, খাদ্যের কোনো দরকার নাই। এটা কী ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি, তা আজও আমাদের বোধগম্য হয় নয়।’

 

বিশেষ অতিথি হিসেবে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সংসদ সদস্য মির্জা আজম, কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক সংসদ সদস্য উম্মে কুলসুম স্মৃতি, সংসদ সদস্য হোসনে আরা, সংসদ সদস্য শামীমা শাহরিয়ার, কৃষকলীগের সহসভাপতি শেখ জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ বক্তব্য দেন। কৃষকলীগের নেতা বিশ্বনাথ সরকার অনুষ্ঠানর সঞ্চালনা করেন।

 

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে প্রায় পাঁচশ পরিবারের হাতে ঈদ উপহার সামগ্রী তুলে দেন অতিথিরা।

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.