খুলছে পর্যটনকেন্দ্র

১৮৫
রাঙ্গামাটির ঝুলন্ত সেতু। ফাইল ছবি

করোনার বিপর্যয়ের কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর বৃহস্পতিবার থেকে খুলছে পাহাড়সহ দেশের সব পর্যটনকেন্দ্র। এতে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন পর্যটনসংশ্লিষ্টরা।

পর্যটনকেন্দ্র খোলার সার্বিক প্রস্তুতি নিচ্ছেন হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ীরা। তবে মাস্ক পরিধান ছাড়া পর্যটনকেন্দ্রে প্রবেশ করা যাবে না এবং পর্যটকদের অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। বার্তা সংস্থা ইউএনবির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

হোটেল-মোটেল, রেস্তোরাঁ, সরকারি-বেসরকারি পর্যটনকেন্দ্রগুলোর সঙ্গে জড়িত মানুষদের মধ্যে ফিরতে শুরু করেছে চাঞ্চল্য। পর্যটকদের বরণে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে রাঙামাটির হোটেল-মোটেলগুলো। পর্যটকদের আগমন ঘিরে নিরাপদ ভ্রমণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন পর্যটন ব্যবসা সংশ্লিষ্টরাও।

যান্ত্রিক জীবনের একটু ক্লান্তি দূর করতে বিনোদনের খোঁজে মানুষ ছুটে আসছেন পাহাড় ও হ্রদঘেরা মনোরম প্রাকৃতিক লীলাভূমি রাঙামাটিতে। কিন্তু টানা দীর্ঘদিন পর্যটকশূন্য থাকায় মারাত্মক মন্দা দেখা দেয় পর্যটন ব্যবসায়।

রাঙামাটি চেম্বারের হিসাবে, জেলায় পর্যটনের পাঁচটি খাতে দিনে গড়ে অন্তত সোয়া দুই কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। তবে ব্যবসায়ীদের ধারণা, দেশের পর্যটনকেন্দ্র খুলে দেওয়ায় দীর্ঘদিনের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবে।

রাঙামাটিতে ঝুলন্ত ব্রিজ, পলওয়েল পার্ক, শিশু পার্ক, হ্যাপি আইল্যান্ড, সুবলং ঝর্ণা, পেদা টিং টিং, ইকো ভিলেজ, বনবিহার, রাজবাড়ী, আরণ্যক, বড়গাঙসহ নানা বিনোদনকেন্দ্রে সারা বছরই পর্যটকদের পদচারণায় মুখর থাকে।

কাপ্তাই লেকের বোট মালিক আলাউদ্দিন টুটুল জানান, দীর্ঘদিন পর্যটন ব্যবসা বন্ধ ছিল। আমাদের বোটের চালকরা এতদিন বেকার ছিল। তবে তাদের নিয়মিত বেতন দিতে হয়েছে। সরকার দেশের পর্যটনকেন্দ্র খুলে দেওয়ার কারণে আমরা এই বেকার সময়ে বোটের সৌন্দয্য বৃদ্ধিতে রং ও বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে যান্ত্রিক কাজ সেরে রেখেছি।

রাঙামাটি পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্সের ম্যানেজার সৃজন বিকাশ বড়ুয়া জানান, সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী, স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্স খোলার প্রস্তুতি নিয়েছি। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পর্যটকদের সেবা দিতে সব ধরনের প্রস্তুতি এরই মধ্যে সম্পন্ন করেছি। দীর্ঘদিন পর কর্মচারীরা মনের খুশিতে কাজ করছে। আমরা আশাবাদী, আমাদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারব।

রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, সরকারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক স্বাস্থ্যবিধি মেনেই ১৯ আগস্ট জেলার পর্যটনকেন্দ্র খুলে দেওয়া হচ্ছে। পর্যটকরা অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঘুরতে যাবেন। এটা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট পর্যটনকেন্দ্রের কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে। এ ছাড়া স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে প্রতিদিনই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে। আর পর্যটকদের নির্বিঘ্নে রাঙামাটি ভ্রমণে নিরাপত্তা দিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করা হয়েছে।

রাঙামাটিতে পর্যটকদের মূল আকর্ষণ ৩৩৫ ফুট দৈর্ঘের ঝুলন্ত সেতুকে ঘিরেই। তাই পর্যটকেরা প্রথমেই ছুটে যান পর্যটন কমপ্লেক্স এলাকায়। বছরে প্রায় দুই লাখ দেশি ও বিদেশি পর্যটক সেতুটি দেখতে আসেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড় থাকে এখানে।

এ ছাড়া শহরের পুলিশের ‘পলওয়েল পার্ক’, ডিসির ‘রাঙামাটি পার্ক’ সেনাবাহিনীর ‘আরণ্যক’, সুভলং ঝর্ণা, সুখীনীলগঞ্জ ও রাজবন বিহার এলাকায় প্রতিনিয়ত ভিড় জমান বেড়াতে আসা পর্যটকরা।

এ ছাড়া বাঘাইছড়ি উপজেলার আকর্ষণীয় ‘সাজেক ভ্যালি’তে পর্যটকদের বেশি সমাগম হয়।

Comments are closed.