চাঁপাইনবাবগঞ্জে এবছর রামচন্দ্রপুরহাট ও তর্তিপুরহাটে দেশী গরুর চাহিদা বেশি

১৫৫
ফয়সাল আজম অপু : কোরবানির জন্য গরু কিনতে তর্তিপুরহাটে এসেছেন আলমগীর হোসেন। পেশায় তিনি চাকরিজীবী। এ বছর তিনার শখ দেশি গুরু কোরবানি করার। এখন বিক্রেতার সঙ্গে দাম আর মতে মিলে গেলেই, হাট থেকে গরু কিনে বাড়ি ফিরবেন তিনি।
গরুর হাটের ভেতরে প্রবেশের পর থেকেই আলমগীরকে গরুর ব্যাপারি ও মালিকদের সঙ্গে দর কষাকষি করতে দেখা যায়। অনেক খোঁজাখুঁজির পর তার চোখে ধরেছে একটি লালচে কালো বর্ণের গরু। দেশি জাতের গরুটি হাটে এনেছেন চকআলমপুর গ্রামের সাইদুর রহমান। গরুর মালিক সাইদুর তার পোষা এ প্রাণীটির দাম চেয়েছিলেন প্রায় লাখ টাকা। দামদর শেষে আলমগীর ৮০ হাজার টাকায় গরুটি কিনলেন।
এ দৃশ্য চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জের তর্তিপুর গরুর হাটের। এই হাটে খামারে পালিত বিদেশি জাতের অনেক গরু থাকলেও, কোরবানিতে দেশি গরুর চাহিদা বেড়েছে। হাসিবুল ইসলাম রামচন্দ্রপুরহাট থেকে কুরবানির গরু কিনেছেন। তিনি বলেন, ‘লাল রঙের দেশি জাতের এ গরুটির দাম ৭৭ হাজার টাকা। মাংস আনুমানিক সোয়া ৩ মণ (প্রায় ১৩০ কেজি) হবে। এবার হাটে দেশি গরুর চাহিদা বেশি, দামও নাগালের মধ্যে। খামারের দেশি গরুগুলো বেশি বিক্রি হচ্ছে।
কিন্তু বিদেশি জাতের গরুগুলো তুলনা মূলক কম বিক্রি হচ্ছে।’এই হাটে কোরবানির জন্য গরু কিনতে আশা ক্রেতারা বলছেন, ভারতীয় গরু না থাকায় দেশি গরুর চাহিদা বেড়েছে। আর দেশি গরুর চেয়ে ভারতীয় গরুর দাম বেশি হয়। তাই সবার দেশি গরুর প্রতি ঝোক বেশি।’ রামচন্দ্রপুর গরু হাটের ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর বলেন, ‘ গত বছরের তুলনায় এবার গরুর দাম কম আছে। বাজারে দেশি গরুর চাহিদা অনেক। যে সব গরু বাড়িতে পোষা হয়েছে, ওই সব গরুর দাম ২৩ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকা মণ চাওয়া হচ্ছে।
খামারে লালন পালন করা দেশি গরু ২৫ থেকে ২৮ হাজার টাকা মণ হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও বলদ গরুগুলো ৩০-৩১ হাজার টাকা মণ হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। ‘গরুর ব্যাপারী রামচন্দ্রপুরহাট-ঘাইসাপাড়ার জেন্টু হাজি ও রুহুল আমিন বলেন, ‘করোনার কারণে গত দুবছর ব্যবসা হয়নি। আর গত বার গরুর দামও কম ছিল। এবারও মোকামে গরুর দাম কম, এবার ব্যবসা করতে পারবো। তবে চাহিদা মতো কাঙ্খিত গরু পাওয়া যাচ্ছে না।
‘তর্তিপুর গরুর হাটের ইজারদার বেনজির হোসেন বলেন, ‘কোরবানির ঈদকে ঘিরে এখন গরুর হাট জমজমাট। গেলো দুই বছরে গরুর হাটে লস করেছিলাম, এবার লাভ না হলেও লস হবে না। হাটবারে ৬০ ভাগ গরু বিক্রি হয়, বাকি ৪০ ভাগ ফেরত যায়। কোরবানি দেওয়ার জন্য দেশি গরুর চাহিদা বাড়ায় এসব গরু হাটে বেশি বিক্রি হচ্ছে। ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকতা ডা.মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জে জেলায় এ বছর কোরবানির লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ১৩ হাজার ৩৯৩টি পশু।
এর বিপরীতে খামারির কোরবানি যোগ্য পশু প্রস্তত করেছেন ১ লাখ ৬৫ হাজার ৬১৫টি।  এর মধ্যে গরু-মহিষ আছে ৮৮ হাজার ৪৭৬টি এবং ছাগল-ভেড়া ৭৭ হাজার ১৩৯। চাহিদার চেয়ে ৫২ হাজার ২২২টি কোরবানি যোগ্য পশু বেশি আছে।’তিনি আরো বলেন, ‘৬ জুলাই থেকে ৮ জুলাই পর্যন্ত স্পেশাল ক্যাটেল ট্রেন চলবে। অনেক খামারি চাইলে এ ট্রেনে করে গরু বাইরের জেলাগুলোতে নিয়ে যেতে পারবেন।’

Comments are closed.