চাঁপাইনবাবগঞ্জে সরকারি নির্দেশ অমান্য করে শিক্ষকদের জমজমাট কোচিং বাণিজ্য

১৩৬

ফয়সাল আজম অপু: সরকারি নির্দেশ অমান্য করে চলছে বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষকদের কোচিং ও প্রাইভেট বাণিজ্য। স্কুলের শিক্ষার্থীদের বাধ্য করে নিয়ে আসা হয় কোচিংয়ে এবং আদায় করা হয় মাসিক ফি, এমন অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে।

কোচিং বাণিজ্য বন্ধ করার জন্য সরকার নির্দেশ দেওয়ার পরও এ সকল শিক্ষকরা এখনও বহাল তবিয়তে কোচিং ও প্রাইভেট বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, জেলার সুনামধন্য দুটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও অন্যান্য বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কতিপয় শিক্ষক কোচিং ও প্রাইভেট বাণিজ্য রমরমাভাবে চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও সকালে সরকারি দুই হাইস্কুল ও বেসরকারি শিক্ষকরা সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করে কোচিং ও প্রাইভেট বাণিজ্য নিজ বাসায়ও চালাচ্ছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা প্রাইভেট পাঠদানের নামে কোচিং চালিয়ে যাচ্ছেন।

এ সকল কোচিংয়ে গিয়ে দেখা গেছে, ছোট্ট রুমে ১ ঘণ্টার কোচিংয়ে ২০ থেকে ২৫ জন শিক্ষার্থীকে একত্রে পড়ানো হচ্ছে। এতে দায়সারা পাঠদান হলেও মূলত, শিক্ষার পরিবেশ নেই বললেই চলে। এদেরকে শ্রেণিকক্ষে বিভিন্ন চাপ দিয়ে প্রাইভেট ও কোচিং সেন্টারে আনতে বাধ্য করা হচ্ছে বলে অভিভাবকদের অসংখ্য অভিযোগ।

সরকারের নির্দেশ অমান্য করে কোচিং পরিচালনার বিষয়ে সরকারি ও বেসরকারি স্কুল কলেজের শিক্ষকদের কাছে জানতে চাইলে তারা কোনো উত্তর দিতে পারেননি। তবে এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ করেন এ প্রতিবেদককে।

এ সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১ ঘণ্টা করে সপ্তাহে তিন দিন ও মাসে ১২ দিন তাদের পড়ানো হয়। তাদের কোচিং ফি বাবদ মাসে ৮০০ টাকা করে দিতে হয় শিক্ষার্থীদের।

কোচিংয়ের বিষয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘কী করবো, কোচিং এ না পড়লে পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করবো কীভাবে? শিক্ষকরা কঠিন প্রশ্নে পরীক্ষা নিয়ে থাকে। ক্লাসে শিক্ষকরা ফাঁকি দেন।থ কিন্তু প্রাইভেট ও কোচিং সেন্টারে ওই শিক্ষকরা পাঠদান করান ভালোভাবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন অভিভাবক বলেন, ক্লাসে তো আর শিক্ষকরা আন্তরিকতার সাথে পাঠদান করেন না। বাধ্য হয়ে ছেলে-মেয়েদের শিক্ষকদের কাছে প্রাইভেট ও কোচিং এ পড়তে দিতে হচ্ছে। এমনও শিক্ষকও রয়েছেন, তার কাছে প্রাইভেট না পড়লে পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়া যায় না।

এ বিষয়ে একজন অভিভাবক জানান, প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কারো প্রাইভেট পাঠদানের অনুমতি নেয়। কেউ যদি সরকারি আদেশ অমান্য করে প্রাইভেট বা কোচিং চালান, তাহলে এর দায় তার নিজের।থ বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তদন্ত করা উচিত।

এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শিক্ষা অফিসার, আব্দুর রশিদ মুঠোফোনে বলেন, আমি শিক্ষা সচিব মহদয়ের সাথে সোনামসজিদ এলাকায় অবস্থান করছি তাই দেখা করা সম্ভব নয়। তবে কোচিং বাণিজ্য বন্ধ করার জন্য সরকার নির্দেশ দেওয়ার পরও যদি এ সকল শিক্ষকরা এখনও বহাল তবিয়তে কোচিং ও প্রাইভেট বাণিজ্য চালান, তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে জোরালো ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে শিক্ষা সচিব মহদয়কেও অবগত করবো বলেও জানান, জেলার এই উর্ধতন শিক্ষা কর্মকর্তা।

 

Comments are closed.