চুলাটিই শেষ সম্বল বিক্রি না হলে ভাত যাবে না পেটে, ২ দিন থেকে খাবার নেই

0 ২৭২

নিজস্ব প্রতিবেদক: মোহাম্মদ আলী বক্স সিরাজগঞ্জ থেকে কাজের সন্ধানে এসেছিলেন রাজশাহীতে। রাজশাহীতে এসে একটি হোটেলে কাজ করতেন। হোটেল বন্ধ হয়ে যাবার পর রিকশা নিয়ে রিকশা চালাতেন। লকডাউনে সবকিছু বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর দুই সন্তান আর স্ত্রীকে নিয়ে পড়েছেন মহা বিপদে। থাকেন রাজশাহীর সাধুর মোড় রানী নগর এলাকায়।

 

আজ সকালের দিকে পেটের খাবার সংগ্রহের জন্য অস্থির হয়ে পড়েন। মোহাম্মদ আলী বক্স এর বাসায় চুলা জ্বালানোর মত কোন চাউল তরকারি নেই। পরে বাধ্য হয়ে বাসায় একটি পুরাতন গ্যাসের সিলিন্ডার আর গ্যাসের চুলা বিক্রি করার জন্য মানুষের কাছে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

 

তার সাথে কথা বলে জানা যায়, গ্যাসের চুলা আর সিলিন্ডারের দাম খুবই অল্প বলছেন। একপ্রকার সুযোগে সৎ ব্যবহার। কেউ একজন ২০০ টাকা দাম বলেছিলেন পরে তাকে খুঁজে বার পাননি মোহাম্মদ আলী বক্স। কারণ সেটা বিক্রি করে যে কোনো মূল্যে আজ চাউল নিয়ে বাসায় ফিরতে হবে নইলে দুদিন থেকে না খেয়ে থাকা স্ত্রী-সন্তান তারা হয়তো আর বাঁচবে না এমন কষ্ট তার চোখে-মুখে ছল ছল করেছিল।

 

নিরুপায় হয়ে এখন তিনি রাজশাহী শহর ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার চিন্তা করছেন। তাতেও বাদ সাধে টাকা। বাড়ি যাওয়ার টাকা ঢুকলো জে মোহাম্মদ আলী বক্সের কাছে নেই। সব মিলে দুই সন্তান স্ত্রীকে নিয়ে মনটাকে দুমড়ে-মুচড়ে কষ্টটাকে হৃদয়ের গভীরে আঁকড়ে ধরে বুকফাটা আর্তনাদ ছাড়া আর কিছুই করার নেই মোহাম্মদ বক্সের।

 

মোহাম্মদ আলী বক্সার মত অনেক দিনমজুর খেটে খাওয়া মানুষেরা রয়েছে যাদের খোঁজ হয়তো অনেকেই পাচ্ছেন না কিন্তু তারা ক্ষুধার কষ্ট আর বুকফাটা আর্তনাদ নিয়ে বাসার মধ্যেই দিন কাটাচ্ছেন আবার কেউবা জড়িয়ে পড়ছেন কাজের সন্ধানে। তাতে কি লকডাউন চলছে, বাইরে যাওয়া নিষেধ, কাজ আর চাইলেই তো এই সময় পাওয়া যায় না।

 

এদিকে মোহাম্মদ আলী বক্স তিনি বলেন, আজ যদি এই গ্যাসের সিলিন্ডার আর চুলা বিক্রি করতে না পারেন তাহলে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে গলায় দড়ি দিয়ে মরা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবেনা। এই মুহূর্তে পৃথিবীর সবচেয়ে অসহায় আর কষ্ট বুকে নিয়ে রয়েছি আমি। আমি কতটা অসহায় তা আপনাদের বলে বোঝাতে পারবো না। আমি পেটের ভাত টুকু আমার সন্তানদের মুখে তুলে দিতে পারছিনা। একজন মানুষ এসবের দাম ২০০ টাকা বলেছিল তাকে ওয়ার খুঁজে পাচ্ছিনা। লকডাউনের আর করোনাভাইরাস ধরার আগেই মনে হয় ক্ষুধার ভাইরাসে মারা যাবো। এমনটাই বলছিলেন মোহাম্মদ আলী বক্স।

 

মোহাম্মদ আলী বক্স মিয়াকে যদি আপনারা কেউ সহায়তা করতে চান, তাহলে নিচে দেওয়া নাম্বারে তার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। মোহাম্মদ আলী বক্স মিয়ার সাথে যোগাযোগ করার নাম্বার, ০১৭৬৪২১৭৩৭১.

 

উল্লেখ্য যে, গত কয়েক দিনের চেয়ে আজ রাজশাহী জেলার প্রতিটি অঞ্চলে সর্বাত্বক লকডাউন পালন হচ্ছে। সাধারণ মানুষেরা অপ্রয়োজনীয়’ ঘোরাঘুরি করলে জবাবদিহির আওতায় আনছেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। অন্য সব দিনের তুলনায় আজ ব্যাপকভাবে লকডাউন বাস্তবায়নে কাজ করছে রাজশাহী জেলার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.