দুই বছর ধরে বন্ধ আছে রাবির ক্যাফেটেরিয়ার রাতের খাবার

১০৬
রাবি প্রতিনিধি : কর্মচারী সংকটে গত দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ আছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার রাতের খাবার। এদিকে গত আগস্ট মাসে ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য অভ্যন্তরীণ খাবারের দোকানগুলোও উচ্ছেদ করে প্রশাসন। এতে রাতের খাবার নিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদেররকাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, ক্যাম্পাস থেকে হলে ফেরার আগেই ডাইনিংয়ের খাবার শেষ হওয়ার ফলে দুর্ভোগের পাশাপাশি অতিরিক্ত খরচ গুনতে হচ্ছে তাদের। তবে ক্যাফেটেরিয়া প্রশাসক বলছেন, নতুন কর্মচারী নিয়োগ হলেই পুনরায় রাতের খাবার চালু করা হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় প্রতিদিন প্রায় ২০০ থেকে ৩০০ শিক্ষার্থী খেতে আসেন। এখানে একজন ম্যানেজার ও পাঁচজন রাঁধুনিসহ মোট ১৮ জন কর্মচারী রয়েছেন। যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক অপ্রতুল বলে দাবি ক্যাফিটেরিয়া সংশ্লিষ্টদের। ২০২০ সালের মার্চে করোনার কারণে বন্ধ হয়ে যাওয়ার আগে সকাল, দুপুর ও রাতের খাবারের পাশাপাশি বিকেলেও চা-নাশতার ব্যবস্থা ছিল। রাত ১০টা পর্যন্ত ক্যাফেটেরিয়া চালু থাকত। গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর ক্যাফেটেরিয়া পুনরায় চালু হয়। তবে এর পর থেকে রাতের খাবার বন্ধ রাখা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, কোনো না কোনো কাজে অনেক শিক্ষার্থীকেই প্রতিদিনই রাতে ক্যাম্পাসে  থাকতে হয়। যার ফলে এসব শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরীণ দোকান ও কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় রাতের খাবার খেতে হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন ক্যাফেটেরিয়ায় রাতের খাবার বন্ধ থাকায় এখন আর সেই সুযোগ পাচ্ছেন না তারা। এদিকে গত আগস্ট মাসে ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে অভ্যন্তরীণ খাবারের দোকানগুলোও উচ্ছেদ করে প্রশাসন। এতে চরম দুর্ভোগে পরেছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, ক্যাম্পাস থেকে হলে ফিরতে একটু দেরি হলেই ডাইনিংয়ে খাবার পাওয়া যায় না। ফলে তাদেরকে ক্যাম্পাসের বাইরের হোটেলগুলোতে চড়া দামে খাবার খেতে হয়। এ ছাড়াও খাবার শুরু হওয়ার স্বল্প সময়ের মধ্যে শেষ হয়ে যায় দুপুরের ২৮ টাকা মূল্যের সাধারণ মিল। ফলে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে স্পেশাল খাবার খেতে হয়। এতে তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী দেলওয়ার হোসেন বলেন, ‘ যখন ক্যাফেটেরিয়ায় রাতের খাবার চালু ছিল তখন খাবারে সমস্যা হতো না। এখন একটু রাত হলেই ডাইনিংয়ের খাবার শেষ হয়ে যায়। মাঝেমধ্যেই রাতের খাবার না খেয়ে থাকতে হচ্ছে আমাদের। আমরা চাই যে পুনারায় রাতের খাবার চালু করা হোক।তাহলে আমাদেরকে এই ভোগান্তিতে পড়তে হবে না।’
কর্মচারী সংকটের কথা উল্লেখ করে কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার প্রশাসক এ কে এম আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ইদানীং দেখতে পাচ্ছি ক্যাফেটেরিয়ায় পূর্বের তুলনায় অনেক বেশি শিক্ষার্থী খেতে আসছেন। কিন্তু সেই অনুপাতে আমাদের কর্মচারী নেই। মূলত এই সংকটের কারণে আমরা রাতের খাবার বন্ধ রেখেছি। আর বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ থাকার কারণে চাইলেও লোকবল বাড়াতে পারছি না। আমরা লোকবল নিয়োগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন। নতুন কর্মচারী নিয়োগ দিলে আমরা ফের রাতের খাবার চালু কবে বলে জানান এই প্রশাসক।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সুলতান-উল-ইসলাম  বলেন, ‘নিয়োগের উপর ইউজিসির নিষেধাজ্ঞা থাকায় আমরা নতুন করে কোন কর্মচারীকে নিয়োগ দিতে পারছিনা। কিন্তু কর্মচারীর অভাবে রাতের খাবার বন্ধ থাকবে এটাও মানা যায় না। তাই কীভাবে আবার রাতের খাবার চালু করা যায় সেই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে আমি আজই কথা বলবো। বিকল্প ব্যবস্থা নিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে রাতের খাবার চালু করার আশ্বাস দেন তিনি।

Comments are closed.